সীমানা সংক্ষিপ্ততর হওয়ার সাথে সাথে ব্যাটগুলি ভারী হয়ে যাওয়ার কারণে ক্রিকেটের খেলাটি সম্প্রতি ব্যাটসম্যানের দ্বারা প্রাধান্য পেয়েছে। খেলাটি ব্যাটসম্যানের পক্ষে থাকলেও এখনও এমন কিছু বোলার রয়েছেন যাঁর টুকরো খুঁজে পান। ২০১০ সালের পর থেকে ওয়ানডে দুইটি নতুন বলের ব্যবহার শুরু হয়েছে, এটা গত দশ বছরে বোলারদের জন্য একটি সুবিধাজনক বিষয় ছিলো । এছাড়া অন্য সব বিষয় প্রায় সবগুলোই বোলারদের বিপক্ষে। ১১-৪০ ওভারের মধ্যে মাত্র ৪ জন ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে থাকতে পারে, ওভার প্রতি বাউন্সের নিয়ম পরিবর্তন। এতো সব বোলার বিরোধী আইনের পরও ক্রিকেট মাঠে কিছু কিছু বোলার ঠিকই আধিপত্য বিস্তার করে চলেছেন।
মাঠে বোলারদের সুবিধা কমিয়ে দেওয়ার ফলস্বরুপ তাঁরা আর মাঠে আগের মত দাপুটে নন। তারপরও কিছু বোলার ঠিকই মাঠে এর মধ্যেও সাফল্য পাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে সফলদের নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন।
গত দশকে একমাত্র বোলার হিসেবে ২০০-এর বেশি উইকেট শিকার করেছেন লাসিথ মালিঙ্গা। লাসিথ মালিঙ্গা বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসার ছিলেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাঁর থেকে বেশি কার্যকর বোলার খুঁজে পাওয়া বেশ কষ্টকর।
লাসিথ মালিঙ্গা তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী বোলিং অ্যাকশন এবং তাঁর মারাত্মক ইয়র্কারের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তিনি মাত্র ২-৩ ওভারেই খেলা পরিবর্তন করে দিতে পারতেন। গত দশকে লঙ্কানদের হয়ে খেলেছেন ১৬২ ওয়ানডে। আর এই ১৬২ ওয়ানডেতে শিকার করেছেন ২৪৮ উইকেট। এই সময়ে তাঁর বোলিং গড় ছিলো ২৮.৭৪ এবং ইকোনমি রেট ছিলো ৫.৪৬।
বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের ব্যাটিং এবং বোলিং দুই লাইন আপের অন্যতম ভরসার নাম সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশের স্পিন বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসার জায়গা সাকিব। তাঁকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ গড়ে উঠে। সর্বশেষ দশ বছরে বাংলাদেশের সেরা বোলার ছিলেন তিনি।এই সময়ের মধ্যে তিনি খেলেছেন ১৩১ ওয়ানডে। এই সময়ে তিনি শিকার করেছেন ১৭৭ উইকেট। গত দশ বছরে সাকিবের বোলিং গড় ৩০.১৫ এবং ইকোনমি রেট ৪.৭২।
সময়ের অন্যতম সেরা লেগ স্পিনার ইমরান তাহির। ইমরান তাহিরের উত্থানের সময়ে অনেক স্পিনার উঠে এসেছে কিন্তু তাঁদের মধ্যে শুধু ইমরান তাহিরই টিকে গেছেন।দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিন আক্রমণের অন্যতম ভরসার জায়গা ছিলো ইমরান তাহির। তাকে কেন্দ্র করেই প্রোটিয়াদের স্পিন আক্রমণ গড়ে উঠে।গত দশ বছরের ইমরান তাহির দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলেছেন ১০৭ ওয়ানডে। এই সময়ের তিনি শিকার করেছেন ১৭৩ উইকেট। গত দশকে তাহিরের বোলিং গড় ২৪.৮৩ এবং ইকোনমি রেট ৪.৬৫। এই লেগ স্পিন দিয়েই সারা বিশ্বকে জয় করেছেন ইমরান তাহির।
অস্ট্রেলিয়ান বোলিং আক্রমণের অন্যতম সেরা পেসার হলেন মিশেল স্টার্ক। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ান বোলিং আক্রমণকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
মিচেল স্টার্ক কিছুটা ইনজুরিপ্রবণ ক্রিকেটার তবুও গত দশকের সেরা বোলার ছিলেন তিনি। ২০১৫ এবং ২০১৯ টানা দুই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার ছিলেন মিশেল স্টার্ক। গত দশকে ৮৫ ওয়ানডেতে শিকার করেছিলেন ১৭২ উইকেট। এই সময়ে ওয়ানডেতে তাঁর বোলিং গড় ছিলো ২০.৯৯ এবং ইকোনমি ছিলো ৫.০২।মিচেল স্টার্কের বোলিংয়ে কার্যকর এবং শক্তিশালী জায়গা হল ইয়র্কার। তিনি বেশ নিয়মিতই ইয়র্কার বোলিং করেন। তাঁর বেশিরভাগ ইয়র্কারই যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্য খেলা বেশ কষ্টকর হয়।
শ্রীলঙ্কার অন্যতম বোলিং অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা। তিনি দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে বেশ ঝড়ো ইনিংস খেলতে পারেন। কিন্তু তিনি মূলত একজন বোলিং অল রাউন্ডার।শ্রীলঙ্কার বোলিং লাইন আপে তিনি ছিলেন একজন অলরাউন্ডারের ভূমিকায়। যার মূল কাজ হলো পেস বোলিং। থিসারা পেরেরা গত দশ বছরে শ্রীলঙ্কার হয়ে খেলেছেন ১৫৯ ম্যাচ। এই সময়ে তিনি শিকার করেছেন ১৭১ উইকেট। গত দশ বছরে তাঁর বোলিং গড় ৩২.১০ এবং ইকোনমি রেট ৫.৮২।