চলমান করোনা মহামারির মধ্যে বিধিনিষেধ না মেনে বিপাকে পড়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। করোনা বিধিনিষেধ অমান্য করে জনসভা আয়োজন ও তাতে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। শাস্তিস্বরূপ স্বয়ং প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির মারানহাও প্রদেশের প্রশাসন।
বিশ্বজুড়ে চলছে করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ। আক্রান্ত ও মৃত্যুর পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলের নাম রয়েছে ওপরের দিকেই। করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার সারা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে লাতিন আমেরিকার এই দেশটি। অর্থাৎ করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পরই রয়েছে ব্রাজিলের নাম।
তবে এতো কিছুর পরও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেমে নেই। দেশবাসীকে করোনা থেকে মুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার চেয়ে উল্টো সিদ্ধান্তই বেশি নিয়েছেন তিনি।
এছাড়া করোনা বিধিনিষেধ কার্যকর করা নিয়েও বিভিন্ন সময় বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বলসোনারো। এমনকি, করোনা টিকার প্রতিও প্রকাশ্যে অনীহা প্রকাশ করেছেন তিনি। পরে অবশ্য প্রেসিডেন্ট নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবু বিধিনিষেধ মেনে চলার কোনো প্রয়োজনীয়তাই দেখছেন না তিনি।
ব্রাজিলের মারানহাও প্রদেশের প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওই প্রদেশে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। করোনা মহামারির মধ্যেই আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু কারও মুখেই মাস্ক ছিল না। এমনকি, শারীরিক দূরত্বও বজায় রাখা হয়নি। সামাজিক দূরত্ব মানা তো দূরের কথা প্রেসিডেন্ট নিজেও মাস্ক পরেননি।
করোনা মহামারি ভয়াবহ আকার ধারন করার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্রাজিলের মারানহাও প্রদেশে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়। প্রদেশটিতে ১০০ জনের বেশি মানুষের একসঙ্গে জড়ো হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। একইসঙ্গে সেখানে মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক।
কিন্তু সেখানেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে একটি নিয়মও মানেননি বলসোনারো। বরং ওই প্রদেশের গর্ভনর ডিনোকে ‘একনায়ক’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এমনকি গায়ের জোরে গভর্নর ওই প্রদেশে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত জরুরি অবস্থা জারি করেছেন বলেও দাবি করেন প্রেসিডেন্ট বলসোনারো।
উল্লেখ্য, লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ১ হাজার ৭৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মহামারি শুরুর পর থেকে দেশটিতে মোট এক কোটি ৬০ লাখ ৪৭ হাজার ৪৩৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৪৮ হাজার ২৯১ জন।