গায়ের রং নিয়ে অপমানিত হয়েও আশিষ বিদ্যার্থী বলিউডকে এনে দিলেন জাতীয় পুরস্কার। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনা থেকে অভিনয়ের দিকেই বেশী মন আকর্ষন ছিল মা বাবার একমাত্র সন্তান আশীষ বিদ্যার্থীর (Ashish Vidyarthi)। তবে শুধুই অভিনয় নয়,শিল্পের অন্যান্য ধারার প্রতিও আকর্ষন ছিল তার। মায়ের সাথে কত্থকের তালেও পা মেলাতেন তিনি। বলিউডে তিনি অন্যতম খলনায়ক। তার নাম আশীষ বিদ্যার্থী।

তবে বলিউড তার এই অভিনয় দক্ষতাকে ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। তার জন্ম দিল্লির করোলবাগে ভাড়াবাড়ির একটি ছোট ঘরে। যবে থেকে জ্ঞান হয়েছে,শিল্পের প্রতি আকর্ষন তৈরি হয়েছে তার। ইতিহাসের ছাত্র আশীষের কলেজ জীবনের বন্ধু ছিলেন মনোজ বাজপেয়ী এবং বিশাল ভরদ্বাজ।স্নাতক স্টোর পাশের পর ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা বা এনএসডিতে ভর্তি হন তিনি। সেই সময়ের মধ্যেই সংসারের সব দায়িত্ব এসে পড়েছিল তার কাধে।
কাজের খোঁজে ১৯৯২ সালে দিল্লি থেকে মুম্বাই আসেন তিনি। মুম্বাইয়ে এসে খারাপ অভিজ্ঞতার সন্মুখীন হন তিনি। গায়ের রঙের জন্য খারাপ মন্তব্যের শিকার হতে হয় তাকে। প্রযোজকদের দরজায় দরজায় কাজের জন্য ঘুরতেন তিনি। নানান অপমান সয়েও মাটি আকড়ে পড়ে ছিলেন তিনি। প্রথম তাকে সুযোগ দেয় কন্নড় ছবি ‘আনন্দ’,১৯৮৬ সালে। বলিউডে কাল সন্ধ্যা’ ছবিতে প্রথম দেখা মেলে তার। তবে তার পরিচিতি তৈরি করেছিল গোবিন্দ নিহালনীর ছবি ‘দ্রোহকাল’।এই ছবির জন্য জাতীয় পুরষ্কার পান তিনি।এরপর একের পর এক ছবিতে আসে সুযোগ।
বিপুল প্রতিভা থাকা সত্বেও তাকে যোগ্য সন্মান কিংবা অর্থ কোনোটাই দিতে পারেনি বলিউড। বহুদিন বলিউডে কাজ করেও ভাড়া বাড়িতেই থাকতেন তিনি। তবে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি অনেকটা সহযোগিতা করে তাকে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত দক্ষিণী ছবিতেই অভিনয় করেছেন তিনি এবং তারপর এর বলিউডে সেভাবে ফিরে আসতে পারেননি আশীষ বিদ্যার্থী। তবে এবার আবার ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সুবাদে দর্শকদের কাছে ফিরে আসার সুযোগ পেয়েছেন আশীষ।তবে পর্দায় তাকে নিষ্ঠুর খলনায়ক হিসেবে দেখা গেলেও বাস্তব জীবনে একজন মোটিভেশনাল স্পিকার তিনি।

তার মা ছিলেন একজন বাঙালি, সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই বাংলার প্রতি টান ছিল তার। এই টানের কারণেই হয়তো অভিনেত্রী শকুন্তলা বড়ুয়ার মেয়ে রাজশ্রীকে বিয়ে করেছেন তিনি। স্বামী হিসেবেও সার্থক আশীষ বিদ্যার্থী।
তথ্য সূত্র: ইঁচড়েপাকা , প্রথমআলো , উইকিপিডিয়া |