Image default
জীবনীরাজনীতি

কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী (পূর্বাশ্রমের নাম চন্দন কুমার ধর) একজন বাংলাদেশী হিন্দু প্রথম সারির নেতা ও ধর্মগুরু। তিনি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র। চট্টগ্রামে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ফিরোজ খানের দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রারম্ভিক জীবন

পূর্বে তিনি ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।

গ্রেফতার ও কারাবরণ

২০২৪ সালের ২৪শে নভেম্বরে চিন্ময়কে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে। জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের অভিযোগে একটি সমাবেশ সম্পর্কিত অভিযোগের পরে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছিল। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে ২০২৪ সালের ২৬শে নভেম্বর চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়, যেখানে ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলাম তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে আটকের আদেশ দেন। তার আইনজীবীরা হেফাজতে থাকাকালীন তাকে ধর্মীয় অনুশীলন অনুসরণ করার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন, যাতে আদালত কারাগারের নিয়ম মেনে চলার নির্দেশ দেয়।

তার জামিন মঞ্জুর না হওয়ার পর, তার অনুসারীরা আদালত ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে, যেটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর সহিংস হয়ে উঠে। সহিংসতার সময়, সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে রাষ্ট্রপক্ষের এক আইনজীবীকে কিছু ব্যক্তি কুপিয়ে হত্যা করে। তার মৃত্যুতে আইনজীবী ও বিভিন্ন সংগঠন দেশজুড়ে পাল্টা বিক্ষোভ করে এবং ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানায়। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানান এবং ঘটনাটির যথাযথ তদন্তের আহ্বান জানান।

প্রতিক্রিয়া

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার গ্রেফতারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের ওপর জোর দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে ভারত সরকারের এই বক্তব্যকে “ভিত্তিহীন” অভিহিত করে বলেছে, এ’ধরনের বক্তব্য দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপন্থী। পাশাপাশি বলা হয় ভারত চিন্ময় দাসের গ্রেফতারের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে।

বিতর্ক

চিন্ময় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সমাবেশে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে চট্টগ্রামের হাজারি গলিতে সেনাসদস্য ও পুলিশ বাহিনী সদস্যদের ওপর এসিড হামলার নেপথ্যে তার ভূমিকা থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয় চিন্ময় ইসকন প্রবর্তক মন্দিরের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন, সেখানে তার বিরুদ্ধে অনাথ কয়েকজন শিশুকে জোরপূর্বক বলৎকারের অভিযোগ উঠে, একপর্যায়ে তাকে ওই মন্দির থেকে বের করে দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর শ্রীশ্রী পুণ্ডরীক ধামে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের মালিকানাধীন পুকুর দখলের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট চত্বরে মুক্তমঞ্চে জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিব্রত করতে একের পর এক কর্মসূচির নামে সহিংসতার মদদ দেওয়া ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করার অভিযোগ রয়েছে।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে চিন্ময়কে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ইসকন থেকে বহিষ্কার করা হয়, তিনি ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

 

Related posts

ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের অজানা কিছু তথ্য

News Desk

আধুনিক শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যার জনক কার্ল লিনিয়াস

News Desk

মডেল এলেন ঘোড়ায় চড়ে

News Desk

Leave a Comment