তিন দিনের ছুটিতে দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় ঘুরতে গেছেন হাজার হাজার পর্যটক। কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট, লেম্বুর চর, শুঁটকিপল্লি, জাতীয় উদ্যানসহ আকর্ষণীয় স্পটগুলোর কোথাও ফাঁকা নেই। দীর্ঘদিন পর বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমনে প্রাণ ফিরেছে পর্যটন ব্যবসায়। শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট-গেস্টহাউসের সব কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে দুই দিন আগেই।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট, বালিয়াড়িতে আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরা। অনেকে সমুদ্রের জলে গা ভাসাচ্ছেন। কেউ প্রিয়জনদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন। আবার কেউ সৈকতের বেঞ্চে বসে উপভোগ করছেন প্রকৃতির সৌন্দর্য।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেকবার টানা ছুটিতে বহু পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পর্যটকের সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে। এবার দুই দিন আগেই শতাধিক হোটেল-মোটেলের কক্ষ বুকিং শেষ হয়ে গেছে। তবে এখনও অনেকে আসছেন।
খুলনা থেকে কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা হাসান মামুন বলেন, ‘এর আগেও কয়েকবার কুয়াকাটায় এসেছি। এবারও তিন দিনের ছুটি পেয়ে ঘুরতে এলাম। তবে অন্যান্যবারের তুলনায় এবার পর্যটক বেশি দেখছি।’
এবার তিন দিনের পর্যটন মেলার আয়োজন করায় পর্যটক বেশি এসেছেন বলে জানিয়েছেন কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব শরীফ। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর এমন সময়ে বেশি পর্যটক আসেন। তবে এবার তিন দিনের পর্যটন মেলার আয়োজন করায় পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বুধবার থেকে মেলা শুরু হয়েছে, চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। পর্যটক বেশি আসায় আবাসিক হোটেল-মোটেলসহ পর্যটনকেন্দ্রিক সবকিছুর ওপর চাপ পড়েছে। দুই দিন আগেই হোটেল-মোটেল বুকিং শেষ হয়ে গেছে। তবে আজও অনেক পর্যটক এসেছেন। আশা করা যায়, আগামী দুই দিনে আরও আসবে।’
কানসাই ইন হোটেলের স্বত্বাধিকারী নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, ‘আমার হোটেলের ২০টি কক্ষ আজ থেকে আগামী তিন দিন পর্যন্ত বুকিং হয়ে গেছে। এখন আর বুকিং নিচ্ছি না।’
পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের ইনচার্জ হাসনাইন পারভেজ বলেন, ‘বুধবার রাতে থেকেই পর্যটক আসতে শুরু করেছেন, আজও অনেকে আসছেন। সমুদ্রসৈকত এবং অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছি আমরা।’
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘পৌরসভা, উপজেলা প্রশাসন, পর্যটন ব্যবসায়ীরা মিলে এবার পর্যটন মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় পর্যটকের আগমন বেড়েছে। আশা করছি, শুক্রবার এবং শনিবার পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে। এবার পর্যটকদের বিনোদনের জন্য সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। কুয়াকাটা সৈকতের ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিল্পীরা অংশগ্রহণ করবেন।’