Image default
বাংলাদেশ

ভালোবাসার শেষ পরিণতি খুন

গাজীপুরের এক বাসস্ট্যান্ডে পরিচয় হওয়ার পর নিয়মিত যোগাযোগে শুরু হয় ময়মনসিংহের গৃহবধূ আমেনা বেগম ও রাজধানী ঢাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ইব্রাহীম হোসেনের। সম্পর্ক গড়ায় পরকীয়ায়। থাকতে শুরু করেন একসঙ্গে। এর কিছুদিন পর আমেনার আগের ঘরের এক সন্তানের লাশ পাওয়া যায় ডোবায়।

সূত্রহীন এ ঘটনার তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বলছে, পরকীয়া টিকিয়ে রাখতেই নিজের সন্তানকে হত্যা করেন আমেনা। কারণ, সন্তানসহ তাঁকে বিয়ে করতে রাজি হননি ইব্রাহীম হোসেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে একসময় শিশুসন্তানকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। গাজীপুরের কুনিয়া এলাকার এ ঘটনা ২০১৮ সালের। পিবিআই তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৯ জুলাই ইব্রাহীমকে গ্রেপ্তার করে। পরে তিনি স্বীকারোক্তি দেন।

২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় দেড় বছরে সূত্রহীন ৩৩টি হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছেন পিবিআইয়ের গাজীপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে ১৩টিই পরকীয়ার জেরে ঘটে। বিভিন্ন সময় তদন্ত করে এ ১৩ হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পিবিআই। বাকি ২০টি হত্যার ঘটনা ঘটে মাদক, টাকা ও জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে।

গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মাকছুদের রহমান বলেন, তাঁরা সাধারণত সূত্রহীন বা চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান। সে ক্ষেত্রে খুনের রহস্য উদ্‌ঘাটন বা তদন্ত করতে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরকীয়া, মাদক, টাকা বা জমিসংক্রান্ত বিরোধের ঘটনা পান। তবে এর মধ্যে পরকীয়ার কারণই বেশি।

মাকছুদের রহমান বলেন, গাজীপুর একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানে অনেক ভাসমান মানুষের বসবাস। সে ক্ষেত্রে বাসিন্দাদের সন্তান বা আপনজনেরা কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে মিশছেন, সে বিষয়গুলোয় খেয়াল রাখা জরুরি।

পিবিআইয়ের তদন্তে রহস্য উন্মোচনের দাবি করা হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরের পাবুরিয়াচালার একটি ঘটনার। স্থানীয় একটি জঙ্গলে ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর উদ্ধার করা হয় রাসেল নামের এক তরুণের লাশ। পরে পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে, এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছিলেন দুই বন্ধু রাসেল ও রানা। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হলে রাসেলের সম্পর্কের কথা ওই নারীর আত্মীয়দের জানিয়ে দেন রানা। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে রাসেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ওই নারীর এক আত্মীয়। পরে রানার সহযোগিতায় স্থানীয় এক জঙ্গলে নিয়ে রাসেলকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

টঙ্গী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাছিমা সুলতানা বলেন, প্রতিটি পরকীয়ার সম্পর্কের পেছনেই স্বামী–স্ত্রীর ‘সম্পর্কের দূরত্ব’ একটা বড় কারণ। তখনই তৃতীয় কোনো ব্যক্তি দুজনের সম্পর্কের মধ্যে ঢুকে পড়ার সুযোগ পান। তাই পরকীয়া রোধ করতে সম্পর্কের প্রতি যত্নশীল হওয়া জরুরি।

Related posts

নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, মামলা হলেও নেই গ্রেফতার 

News Desk

ইসির বিরুদ্ধে সুজনের গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু

News Desk

ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ায় স্কুলছাত্রী আহত

News Desk

Leave a Comment