চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ধানবোঝাই চাঁদের গাড়ির চাপায় দুই ছাত্রী নিহতের ঘটনায় ওই গাড়ির চালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি ট্রাফিক পুলিশের ধাওয়া খেয়ে চাঁদের গাড়িটি পালিয়ে যাওয়ার সময় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুই স্কুলছাত্রীকে চাপা দেয়।
গ্রেপ্তার ওই চালকের নাম মুহাম্মদ আলাউদ্দিন (৩০)। তিনি ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার নারায়ণহাট ইউনিয়নের শৈলকুপা গ্রামের মুহাম্মদ রুহুল আমিনের ছেলে।
ফটিকছড়ি থানা-পুলিশ জানায়, আলাউদ্দিন জানিয়েছেন যে তিনি সাত বছর ধরে চাঁদের গাড়ি চালান। তবে তাঁর কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এর আগে আলাউদ্দিন চাঁদের গাড়ির চালকের সহযোগী হিসেবেও কাজ করেছেন।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলাউদ্দিন দাবি করেছেন, ওই ঘটনার সময় পুলিশের তল্লাশিচৌকি থেকে একটি মোটরসাইকেলকে থামার জন্য সংকেত দেওয়া হলে মোটরসাইকেলচালক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় মোটরসাইকেলটি তাঁর গাড়ির সামনে এসে ধাক্কা খায়। এতে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারালে গাড়িটি উল্টে যায়। এ সময় গাড়িতে থাকা ধানগুলো ওই ছাত্রীদের ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, ৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সড়কের পাশে দুই স্কুলছাত্রী মিশু আকতার ও নিশা মণি সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল। মিশু ও নিশা দুজনই হাইদচকিয়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
ওই সময় তিন ট্রাফিক পুলিশ পাইন্দং ইউনিয়নের পেলাগাজীর দিঘির পাশে তল্লাশিচৌকি বসান। এ সময় পুলিশ ওই চাঁদের গাড়িকে থামার সংকেত দিলে চালক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। গাড়িটি ধরতে পিছু নেয় ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) নিখিল চাকমা ও সার্জেন্ট মুহাম্মদ আলামিন। এ সময় চাঁদের গাড়িটি মিশু ও নিশাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
ঘটনার পরপর স্থানীয় বাসিন্দারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা দাবি করেন, ওই তল্লাশিচৌকি বসিয়ে ট্রাফিক পুলিশ চাঁদাবাজি করছিল। ঘটনার পরদিন নিহত মিশু আকতারের চাচা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে চালককে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় চালক আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ রবিউল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আজ সোমবার দুপুরে চালক আলাউদ্দিনকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। ট্রাফিক পুলিশ চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যানবাহন থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে টিআই নিখিল চাকমাকে সাময়িক বরখাস্ত ও সার্জেন্ট মুহাম্মদ আলামিনকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।