জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৭৩ সালে গড়ে ওঠা সরকারি দুগ্ধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটা প্রতিদিন এক লাখ ৬০ হাজার লিটার তরল দুধ বিক্রি করছে। এছাড়া ২২টি দুগ্ধজাত পণ্য তৈরি করে বাজারজাত করছে প্রতিষ্ঠানটি। মিল্কভিটার কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী এখনো দুধ যোগান দিতে পারছে না মিল্কভিটা। এই চাহিদাপূরণকে মূল লক্ষ্য ধরে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
পুষ্টিহীনতা দূরীকরণ, দুগ্ধজাত পণ্য সরবরাহ এবং কর্মসংস্থান ও কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা হিসেবে মিল্কভিটা গড়ে তোলেন বন্ধবন্ধু। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ীতে প্রথম স্থাপিত হয় মিল্কভিটার দুধ পাস্তুরীকরণ কারখানা। সেখানে সমিতির মাধ্যমে দুধ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা আন্দোলন ঘোষণা কার্যকর করতে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নদীবন্দরে পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখেন অনেক মানুষ গরু নিয়ে যাচ্ছে। সেটি দেখে বঙ্গবন্ধু তিনটি লক্ষ্য বাস্তবায়নে মিল্কভিটা প্রতিষ্ঠার ভাবনা মাথায় আনেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের সরকার ১৯৭৩ সালে মাদারীপুরের টেকেরহাট, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও ঢাকায় পাঁচটি দুধ সংগ্রহ ও সরবরাহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে।
বর্তমানে মিল্কভিটা দেশের সাতটি বিভাগের ৪২টি জেলার ১৮৫টি উপজেলা থেকে তরল দুধ সংগ্রহ করে তা প্রক্রিয়াজাত করে সারাদেশে বিপণন করছে। দুধ সংগ্রহের পাশাপাশি খামারিদের স্বল্প সুদে ঋণ, কৃত্রিম প্রজনন সেবার অংশ হিসেবে খামারিদের বিনামূল্যে সিমেন ও ভ্যাকসিন বিতরণসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ এবং গোখাদ্য কারখানা স্থাপনসহ দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে মিল্কভিটা।
এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, সারাদেশে মিল্কভিটার ৫২টি শিতলীকরণ কেন্দ্রে (ফ্রোজেন) ৬৯টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে প্রতিদিন এক লাখ ৭০ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করা হচ্ছে। দিনে এক লাখ ৬০ হাজার লিটার তরল দুধ বিক্রি করা হচ্ছে। বাকি দুধ দিয়ে ২২ ধরনের দুগ্ধজাত পণ্য তৈরি করে বাজারজাত করা হয়ে থাকে। এজন্য দেশজুড়ে ৬০টির মতো বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে।
বছরে সাত হাজার কোটি টাকার গুঁড়ো দুধ আমদানি করা হয় উল্লেখ করে মিল্কভিটার চেয়ারম্যান বলেন, ‘এতে প্রচুর পরিমাণে দেশি মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে। দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য মানুষের কাছে সহজলভ্য করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মেধাবী ও স্বাস্থ্যবান প্রজন্ম করে গড়ে তুলতে মিল্কভিটা কাজ করে যাচ্ছে।