খুলনায় আজ শনিবার বিকেল ৩টায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। কর্মসূচি সফল করতে নগরের ফেরিঘাট মোড়ের সোনালী ব্যাংক চত্বরে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। এর মধ্যেই গতকাল শুক্রবার থেকে দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। বন্ধ রয়েছে লঞ্চও।

এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। বিএনপি বলছে, তাদের কর্মসূচিতে বাধা দিতে পুলিশ দিয়ে নেতাকর্মীদের আটক ও হয়রানির পাশাপাশি গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।খুলনার সঙ্গে আন্ত জেলা সংযোগকারী ১৮টি রুটের বাস এবং খুলনা থেকে চলাচলকারী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল থেকে দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের আসন্ন কালীপূজা সামনে রেখে অনেকে কর্মস্থল থেকে খুলনার বাড়িতে আসছে। দূর থেকে এসে সেসব যাত্রী বিপাকে পড়েছে। বাসের পাশাপাশি প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও ভাড়ায় চালিত অন্যান্য যানবাহনের সংকটের কারণে মানুষকে রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করতে হচ্ছে।

পারিবারিক কাজে মো. আসাদুজ্জামান গতকাল সকালে নগরীর বয়রার বাসা থেকে বেরিয়ে সোনাডাঙ্গা আন্ত জেলা বাস টার্মিনালে যান। বাস বন্ধ থাকবে, এটা তিনি জানেন। অন্য যানবাহনে করে তিনি মোংলা যেতে পারবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু বাস টার্মিনালে এসে দেখেন, সব যানবাহনই বন্ধ। তিনি বলেন, ‘অন্য সময়ে মাইক্রোবাস ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করে; কিন্তু এখন তা-ও নেই। ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলও নেই। ’ আন্দোলন-সংগ্রাম মানেই জনগণের ভোগান্তি বলে তিনি মন্তব্য করেন। তাঁর কথায় সুর মেলান ঢাকা থেকে আসা গার্মেন্ট শ্রমিক সুদীপ্ত। তিনি কালীপূজা উপলক্ষে বাড়ি যাচ্ছেন। তাঁর বাড়ি সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রা উপজেলার আমাদি গ্রামে। ভোরে তাঁকে বাস থেকে যশোরে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর বাড়তি টাকা খরচ করে খুলনা সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে পৌঁছেছেন; কিন্তু সেখান থেকে যাওয়ার কোনো বাহনই পাচ্ছেন না। পড়েছেন মহাফাঁপরে।

গতকাল দুপুরে খুলনা থেকে চলাচলকারী আটটি লঞ্চও বন্ধ রাখা হয়েছে। লঞ্চ শ্রমিকদের বেতন-মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে এই ধর্মঘট বলে দাবি করা হয়েছে।

গত বুধবার বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বানে দুই দিন বাস চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে মালিক ও শ্রমিক পক্ষ দাবি করা হয়েছে, মহাসড়কে নছিমন-করিমন-ভটভটিসহ সব অবৈধ যান চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে খুলনায় দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির নেতা কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, ‘বুধবার খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির জরুরি সভায় পরিবহন দুই দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়ক-মহাসড়কে নসিমন-করিমন, মহেন্দ্র, ইজি বাইক ও বিটিআরটিসির গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবিতেই এই ধর্মঘট। ’ সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, বিরোধী দলের কর্মসূচি ঠেকাতে আচমকা পরিবহন ধর্মঘট ডেকে জনগণকে জিম্মি করা হয়েছে।

Related posts

কার্বন নিরপেক্ষ রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার সামিট ও জেরার

News Desk

সৌদি আরবের বিপক্ষে কি গোল পাবেন মেসি

News Desk

মোদী-মমতা সাক্ষাৎ বিচারপতিদের সম্মেলনে, একান্তে আলোচনা কিছুক্ষণ

News Desk

Leave a Comment