আবারও বাংলাদেশিসহ প্রায় ৫৩ বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য আবারও ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, এ তথ্যগুলো এর আগেও ফাঁস হয়েছিল। আর এবার আরও ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ল। ছড়িয়ে পড়া ডেটাসেটের মধ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর, জন্মতারিখসহ ব্যক্তিগত নানা তথ্য। সংবাদ পোর্টাল ইনসাইডার এ তথ্যগুলোর একাংশ পরীক্ষা করে জানিয়েছে, অনেক ব্যবহারকারীর সঙ্গে তথ্য মিলে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফাঁস হওয়া তথ্য থেকে ওই ব্যবহারকারীরা এখন আরও বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। এদিকে তথ্যগুলো পুরোনো ডেটাসেটের অংশ বলে জানিয়েছে ফেসবুক, যা ২০১৯ সালেই সমাধান করা হয়েছে। তবু এ খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটিতে তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে সমালোচনা তৈরি হয়েছে।
গতকাল শনিবার ছড়িয়ে পড়া ডেটাসেটটি নিয়ে সচেতন করেন ইসরায়েলি সাইবারক্রাইম ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান হাডসন রকের সহপ্রতিষ্ঠাতা অ্যালন গাল। তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা এ তথ্যগুলো নিশ্চয়ই হ্যাকিং, স্ক্যামিং, বিপণনসহ নানা খারাপ কাজে ব্যবহার করবে।’সাইবারক্রাইম ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হাডসন রকের সহপ্রতিষ্ঠাতা অ্যালন গাল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এর আগে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ফাঁস হওয়া তথ্য হাজার হাজার ডলারে বিক্রি করা হয়েছে। এ পরিস্থিতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিরাপত্তা ও অঙ্গীকারের বিষয়টিকেই প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
গাল টুইটারে লিখেছেন, ‘আপনাদের তথ্য নিয়ে এমন অবহেলার কথা এখনো স্বীকার করেনি ফেসবুক। এই তথ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ফেসবুক আইডি, পূর্ণ নাম, অবস্থান, কিছু ই-মেইল ঠিকানা, রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসসহ আরও অনেক তথ্য।’ এই তথ্যগুলো ব্যবহার করে দুর্বৃত্তরা আরও বড় অঘটন ঘটাতে পারে বলেও জানান গাল।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টকে গাল বলেন, ফাঁস হওয়া ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ডেটাসেট এর আগে হাজার হাজার ডলারে বিক্রি হয়েছে। এরপর ক্রমে মূল্য কমতে কমতে এখন বিনা মূল্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা দিতে না পারায় ফেসবুক এর আগে বেশ কয়েকবার সমালোচিত হয়েছে। বিশেষ করে যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২০০ কোটির বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে, তাদের আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত ছিল বলে মানেন সবাই। বিজ্ঞাপনদাতারা কীভাবে ফেসবুকের তথ্য ব্যবহার করছে, সে সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের ভুল তথ্য দেওয়ায় ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন ফেসবুককে ৫০০ কোটি ডলার জরিমানা করে।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফেসবুকের এক মুখপাত্র সমকালকে বলেন, সংবাদমাধ্যমগুলোয় যে তথ্য এসেছে, তা পুরোনো। এ তথ্য ২০১৯ সালের এবং সে সময়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়। ফেসবুক এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে ওই বছরের আগস্টেই গ্রাহক তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
তথ্য সূত্রঃ প্রথম আলো , সমকাল