Image default
খেলা

মুমিনুলের ব্যাট পুড়িয়ে ফেলেছিলেন বাবা

ক্যারিয়ারের শুরুতে মুমিনুল হককে অনেকেই বাংলাদেশের ‘ব্র্যাডম্যান’ হিসাবে আখ্যায়িত করেছিলেন। দেশের মাটিতে ধারাবাহিক অসাধারণ পারফরম্যান্স তাকে পৌঁছে দিয়েছিল অনন্য উচ্চতায়। টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড আগে থেকেই মুমিনুলের। তবুও কথা একটা থেকেই যাচ্ছিল। ১০ সেঞ্চুরির সবকটি ঘরের মাঠেই।

অর্থাৎ বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের ব্যাটিংপ্রতিভা সীমানা পেরিয়ে নিষ্প্রভ ছিল এতদিন। কিন্তু এবার সমালোচকদের জবাব দিলেন। নিজের ক্যারিয়ারের এগারোতম সেঞ্চুরিটি হাঁকালেন দেশের বাইরে। তাও আবার শক্তিশালী দল শ্রীলংকার বিপক্ষে। বৃহস্পতিবার ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১২৭ রানের অধিনায়কচিত ইনিংস খেললেন মুমিনুল। নাজমুল হোসেন শান্তর ১৬৩ রানের ইনিংস না থাকলে মুমিনুলের সেঞ্চুরিটা নিয়েই আলোচনা চলত।

যাই হোক ভাটা পড়া ফর্মকে আবার চাঙা করলেন অধিনায়ক মুমিনুল। আর তা হয়েছে কেবল তার খেলার প্রতি মনযোগ, অদম্য অধ্যাবসায়ের কারণেই। জানা গেছে, ক্রিকেটীয় জীবনের শুরু থেকেই নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এই অধ্যাবসায় আজ মুমিনুলকে এতোদূর এনেছে। বাংলাদেশের সাদা জার্সির দলের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান এখন মুমিনুলই। ব্যাট হাতে যিনি এত সাফল্য পাচ্ছেন, তার ব্যাট নাকি একসময় পুড়িয়ে ফেলেছিলেন তার বাবা। ক্রিকেট খেলার প্রতি মুমিনুলের আগ্রহটা মোটেই পছন্দ করতেন না তার বাবা। খেলায় সময় বেশি দিলে ছেলের পড়ালেখায় ভাটা পড়বে এই ভয়ে।

অন্য বাবাদের মত মুমিনুলের বাবাও চাইতেন, ছেলে বড় হয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সরকারী চাকরিজীবী হোক। তাই পড়ার টেবিলে থেকে উঠে ব্যাট হাতে মাঠে যাওয়ায় একদিন বেশ চটেছিলেন মুমিনুলের বাবা। জেদের বশে মুমিনুলের ব্যাট-ই পুড়িয়ে ফেলেন। ভেবেছিলেন ব্যাট শেষ তো খেলাও শেষ। বিদেশের মাটিতে মুমিনুলের প্রথম সেঞ্চুরির দিনে স্মৃতিচারণ করে এসব তথ্য দিয়েছেন তার ছেলেবেলার কোচ মন্টু কুমার দত্ত।

বিকেএসপির প্রখ্যাত এই কোচ বলেন, ‘কক্সবাজারে অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা ছিল না। সেখানে ক্রিকেটকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেবে এমন খেলোয়াড় খুঁজে পাওয়া মুশকিল ছিল। আর সব বাবার মতো মুমিনুলের বাবাও চাইতেন না ছেলে ক্রিকেটার হোক। তাই বাবা ঘরে এলে মা ও ভাই মুমিনুলের ব্যাট লুকিয়ে রাখতেন। কিন্তু একবার ধরা পড়ে গেলে মুমিনুলের ব্যাট পুড়িয়ে ফেলেছিলেন তার বাবা। বলতে গেলে মুমিনুলের একাগ্রতাই তাকে পরিপূর্ণ ক্রিকেটারে পরিণত করেছে।’

মূলত মা ও বড়ভাইয়ের আগ্রহ ও সহযোগিতায় ক্রিকেটার হয়েছেন মুমিনুল। নাখোশ বাবাকে কোনো মতে ম্যানেজ করে মা-ভাইয়ের সমর্থনে বিকেএসপিতে ভর্তি হন মুমিনুল।

কোচ মন্টু বলেন,‘মুমিনুল একটু খাটো বলে প্রথমে বিকেএসপিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। পরের বছর নিজেকে প্রস্তুত করে বিকেএসপিতে ভর্তি হয়। সেদিনের সেই কিশোর এখন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। দেশের হয়ে সর্বাধিক সেঞ্চুরি তার। দেশের বাইরে তার পারফরম্যান্স এতদিন খারাপ ছিল। এবার ভালো করার তাড়না ছিল, রানের জন্য অনেক শ্রম দিয়েছে।

Related posts

UCLA Unlocked: It’s a great day to be part of the Jerry Neuheisel family

News Desk

বোল্টের চোখে ডেথ ওভারে বুমরাহই সেরা

News Desk

এমএলবি নিয়মের পরিবর্তনগুলি গেমটিকে দ্রুততর করেছে, কিন্তু তারা কি এটিকে আরও বিনোদনমূলক করেছে?

News Desk

Leave a Comment