‘ছন্দে ফিরলাম! কেউ হাল ছেড়ে দেয় না এবং ছন্দে ফেরার পথ একটাই: কঠোর পরিশ্রম, দলীয় প্রচেষ্টা ও সিরিয়াস পরিশ্রম। বাকি সবকিছুই স্রেফ কোলাহল’—টুইটটি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। কাল রাতে গোলখরা কাটানোর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথাগুলো লিখেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা।

ফর্ম হারানোয় সম্প্রতি সমালোচনার শিকার হচ্ছিলেন রোনালদো। ২০০৯ সাল থেকে এ সময়ের মধ্যে অন্যতম বাজে গোলখরার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন পর্তুগিজ তারকা। টানা ছয় ম্যাচ গোলের দেখা পাননি। বয়স ৩৭ পেরিয়ে গেলেও নামটা যেহেতু রোনালদো, প্রত্যাশা না মিটলে সমালোচনা তো হবেই। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ব্রাইটনের জালে দুর্দান্ত এক গোল করে নিন্দুকদের মুখ আপাতত বন্ধ করলেন রোনালদো। ২০২২ সালে এটাই প্রথম গোল তাঁর।

চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে লিওনেল মেসি পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হওয়ার মিনিটখানেক পরই নিজের গোলখরা কাটান ইউনাইটেড ফরোয়ার্ড। তাঁকে আক্রমণভাগের সামনে রেখে একাদশ সাজিয়েছিলেন ইউনাইটেড কোচ রালফ রাংনিক। ৫১ মিনিটে করা গোলটি মনে করিয়ে দেয় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রথম মেয়াদের রোনালদোকে—বক্সের বাইরে থেকে পাস ধরে খানিকটা দৌড়ে দূরপাল্লার শটে গোল! স্কট ম্যাকটমিনের পাস ধরে কাল ঠিক এভাবেই দলকে এগিয়ে দেন রোনালদো। গোল করে নিজের প্রথাগত ‘সাই’ উদ্‌যাপন করেননি। হাঁটু দিয়ে স্লাইড করে মাঠের এক কোনায় গিয়ে স্বস্তির গোলটি উদ্‌যাপন করেন।

ব্রাইটনের বিপক্ষে খেলোয়াড়দের ‘সুন্দর খেলা’ উপহার দিতে বলেছিলেন ইউনাইটেড কোচ রাংনিক। কিন্তু প্রথমার্ধে ব্রাইটনের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেননি স্বাগতিকেরা। ৫৪ মিনিটে লুইস ডাঙ্ক লাল কার্ড দেখলে ১০ জনে পরিণত হয় ব্রাইটন। যোগ করা সময়ের ৭ মিনিটে লক্ষ্যভেদ করে ইউনাইটেডকে ২-০ গোলের জয় এনে দেন পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেজ। এই জয়ে ২৫ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে উঠে এল ইউনাইটেড।

২০০৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন রোনালদো। এর পর থেকে ব্রাইটনের মুখোমুখি হওয়ার আগপর্যন্ত ক্লাব ক্যারিয়ারে অন্যতম বাজে গোলখরার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। কাল মাঠে নামার আগে (যোগ করা সময় বাদে) ৫৩৭ মিনিট গোলের দেখা পাননি। রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর পর্তুগিজ তারকা এর আগে সবচেয়ে বাজে গোলখরার মধ্যে ছিলেন ২০১০ সালে মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে—৫৪৬ মিনিট গোলের দেখা পাননি। ব্রাইটনের বিপক্ষে ৫১ মিনিটের মাথায় গোল পান রোনালদো। অর্থাৎ ব্রাইটনের মুখোমুখি হওয়ার আগে ৫৩৭ মিনিট এবং কাল রাতে প্রথমার্ধে ৫০ মিনিট—সব মিলিয়ে ৫৮৭ মিনিটের গোলখরা কাটালেন রোনালদো। ইএসপিএন এই পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়েছে, গত সাড়ে ১১ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে এটাই তাঁর সবচেয়ে বাজে গোলখরা।

শুধু কি তা–ই, ২০২২ সালে গোলের খাতা খুলতে সাতটি ম্যাচ খেলতে হলো রোনালদোকে। ২০০৩ সাল থেকে হিসাব কষলে দেখা যাচ্ছে, কোনো বর্ষপঞ্জিতে গোলের খাতা খুলতে এবারই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেললেন রোনালদো। অর্থাৎ বছরের শুরুতে এবারই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ম্যাচে গোলের দেখা পাননি।

Related posts

PGA চ্যাম্পিয়নশিপে স্কটি শেফলারের একটি অবিশ্বাস্য প্রথম হোল-ইন-ওয়ান রয়েছে

News Desk

সৌরভদের বিরুদ্ধে ১০০০ কোটির মামলা

News Desk

76ers’ Joel Embiid প্রতিকূল গার্ডেন পরিবেশ দ্বারা বিচলিত বলে মনে হয় না

News Desk

Leave a Comment