প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস এতোটা ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল না কখনো। তিন চার জন গুরুত্বপুর্ন ফুটবলার নেই। এতোটা ভঙ্গুর অবস্থায় পেয়েও আবাহনী হারানোর সুযোগ নিতে পারেনি। সিলেটে আবাহনীর হোম ভেন্যুতে বসুন্ধরা ২-২ গোলে আবাহনী সঙ্গে ড্র করেছে।
আবাহনীর সামনে সুযোগ ছিল দুই দলের মধ্যে ৬ পয়েন্টের দুরত্ব ঘুচানোর। সুযোগও পেয়েছিল আবাহনী। কিন্তু নিজেদের দোষে সেই মনোরম ছবিটা আঁকতে পারেনি আবাহনী।
ম্যাচে উত্তেজনা থাকবে এটা আগেই সবার জানাছিল। মারামরি হতে পারে সেটিও ফুটবল দর্শকের মুখে শোনা গিয়েছিল। ঢাকা হতে অনেকেই গিয়েছিলেন সিলেটের মাঠে খেলাটার সাক্ষী হতে। গ্যালারিতে বড় ব্যানার দেখা গেছে, আবাহনী এবং বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকদের হাতে। নাটকীয়তার ম্যাচটায় কেউ জিততে পারেনি। ম্যাচ শেষে রেফারি মাঠ থেকে বেরিয়েছেন পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে দিয়ে।
ভঙ্গুর বসুন্ধরার দুর্বলতার সুযোগ নিতে পারেনি আবাহনী। গোল করে এগিয়ে থেকেও সেই ম্যাচটায় জয়ের দেখা পায়নি আবাহনী। ম্যাচটা ড্র হলেও বসুন্ধরা কিংসের কাছে জয়ের চেয়েও বেশি কিছু। অন্তত সিলেট থেকে আফসোস নিয়ে ফিরতে হয়নি।
ধাক্কাধাক্কি, লালকার্ড, উত্তেজনা, গোল সবই ছিল আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের লড়াইয়ে। কিন্তু জয়ের দেখা পায়নি। বসুন্ধরা না জিতলেও টপেই আছে। আর আবাহনী আছে দ্বিতীয় স্থানে।
বসুন্ধরা ছেড়ে আসা কোষ্টারিকার ফুটবলার কলিন্দ্রেস। অনেক দিন অপেক্ষায় করছিলেন, কবে তিনি বসুন্ধরার বিপক্ষে মাঠে নামবেন। মনোমালিন্য নিয়ে বসুন্ধরা ছেড়ে আসা কলিন্দ্রেস বুসন্ধরার জালে গোল করার শপথ নিয়ে রেখেছিলেন। কাল সেই সুযোগ পেয়ে গোলও করলেন কলিন্দ্রেস ১-০। ম্যাচের ২০ মিনিটে কলিন্দ্রেসের গোলে এগিয়ে যাওয়ায় আবাহনীও যেন জয়ের পথেই যাচ্ছিল। তার পরই বাধল ঘটনা। বসুন্ধরা ছেড়ে আসা আবাহনীর ইমন বাবু আর আবাহনী ছেড়ে যাওয়ায় বসুন্ধরার সোহেল রানার মধ্যে বল দখলে ট্যাকল হয়। সোহেল রানা কুনই দিয়ে পেছনে থাকা ইমন বাবুর মুখে মারার ঘটনায় লালকার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়েন সোহেল রানা। উত্তেজিত সোহেল রানা। মাঠের লাইনের বাইরে অন্যদেরও মধ্যেও উত্তেজনা দেখা গেল। কেন ইমন বাবুকেও লালকার্ড দেওয়া হলো না। নিজের ভুলে আবাহনীর রাকিব লালকার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়েন। এবার আবাহনীও ১০ জনে পরিনত হয়।
বুসন্ধরার ব্রাজিলীয়ান অধিনায়ক রবসন একাই লড়াই করছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধে রবসন ক্রস ফেলেন। জনি বল ধরেননি। বদললি নামা এলিটা কিংসলে সুযোগটা পেয়েই বাম পায়ে জটলা ভেদ করে আবাহনীর জালে বল জড়িয়ে দেরন ১-১। কলিন্দ্রেসের প্রশান্তি নষ্ট করে দিলেন এলিটা। কালকের ম্যাচে বসুন্ধরা ভঙ্গুর দল হলেও রবসন যেন হাল না ছাড়ার পাত্র। আবাহনীর বক্সের ওপর থেকে গোল করলেন ২-১। জার্সি খুলে দৌড়ে গেলেন দর্শকের দিকে। হলুদ কার্ড পেতে হলো। তাকে কি ? কোটি টাকা মুল্যের গোল করেছেন রবসন। লিগের ১০ গোল হলো।
বসুন্ধরা ধরে নিয়েছিল জয় ছিনিয়ে নিতে পারবে না কেউ। আবাহনী মাঠে নামায় জুয়েল রানাকে। সঙ্গে স্ট্রাইকার জীবন। এই দুজন একটা সুযোগ পেয়ে ব্রাজিলিয়ান ডরিয়েলটনকে দিয়ে গোল করালেন। সমতা আনালেন ২-২। বসুন্ধরার এলিটা কিংসলে আরো দুইবার গোলের সুযোগ পেয়েও ভাগ্য ভালো ছিল না। না হলে জয়ের বন্দরে পৌছানো কোনো ব্যপারই ছিল না। তার পরও ইনজুরিতে জর্জরিত বসুন্ধরা ম্যাচটা হারেনি সেটাও কম না। আর আবাহনী ড্র করলেও ক্ষতি হয়েছে এটা বলাই যায়। আবাহনী চায় ট্রেবল জিততে। আর বসুন্ধরা চায় হ্যাটট্টিক শিরোপা জিততে।