Image default
খেলা

ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে হিসাব করা হয় যেভাবে

আন্তর্জাতিক কোন ক্রিকেট ম্যাচ বৃষ্টি হলে যে নিয়মে খেলা পরিচালিত হয় তার নাম হয়ত সবাই জানেন কিন্তু এই মেথডের কথা মাথায় এলেই কিছু দুর্বোধ্য সমীকরণ মাথায় চলে আসে। অধিকাংশ মানুষই এই মেথড সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন না।

ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি

বৃটিশ নাগরিক – পরিসংখ্যানবিদ ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ এবং গণিতজ্ঞ টনি লুইস ডি/এল মেথড বা ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির প্রধান প্রবক্তা। ডাকওয়ার্থ এর জন্ম ১৯৩৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর। টনি লুইসের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। দু’জনেরই জন্মইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ারে। এই মেথড চালু হবার আগে আরও দুটি মেথড চালু ছিল। এর মধ্যে বেশি প্রচলিত ছিল MPO মেথড বা Most Productive Over Method. এই পদ্ধতি অনুসারে ২য় ইনিংসে ব্যাটিং করা দলের যত ওভার কমানো হবে, সেই ওভার গুলো হবে প্রথমে ব্যাট করা দলের সবচেয়ে কম রান পাওয়া ওভার। অর্থাৎ পরে ব্যাট করা দলের যদি ১০ ওভার কমে যায়, তাহলে প্রথমে ব্যাট করা দল যেই ১০ টি ওভারে সবচেয়ে কম রান করেছে, সেই ১০ ওভারের রানই কমে যাবে টার্গেট থেকে। এই পদ্ধতির বড় গলদ ধরা পড়ে ১৯৯২ বিশ্বকাপের ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা সেমিফাইনাল ম্যাচে। সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১ বলে ২২ রানের অবাস্তব টার্গেট দেয়া হয়। ডি এল মেথডের প্রথম ব্যবহার ঘটে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে জিম্বাবুয়ে বনাম ইংল্যান্ডের ওয়ানডে ম্যাচে। ঐ খেলায় জিম্বাবুয়ে ডি/এল মেথডে ৭ রানে জয়ী হয়। ২০০১ সালে আইসিসি এই মেথড আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে।

ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি
ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতির গ্রাফ

কখন ডিএল মেথড ব্যবহার করা হয়

বৃষ্টি বা অন্যান্য কারণে যদি ম্যাচের পুরো ওভার শেষ করা না যায়, তাহলে ডিএল মেথড ব্যবহার করা হয়। এই মেথড ওয়ানডে এবং টি টুয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যবহার করা হয়। আমাদের আলোচনা হবে ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে। ডিএল মেথড অনুযায়ী কোনো ওয়ানডে ম্যাচের ফল তখনই ঘোষিত হবে যখন উভয় ইনিংসে কমপক্ষে ২০ ওভার করে খেলা হবে।

প্রথমতঃ যদি ম্যাচের আগেই বৃষ্টির কারণে কার্টেল ওভারের ম্যাচ ঘোষণা করা হয় এবং উভয় পক্ষকেই রিডিউসড ওভার খেলতে দেয়া হয় এবং ম্যাচের মধ্যে আর কোনো ওভার কাটা না লাগে, সেক্ষেত্রে ডিএল মেথড প্রযোজ্য হবেনা। যেমন, হয়তো বৃষ্টি হয়েছে ম্যাচের আগে, একটা সময় বৃষ্টি থেমে মাঠ খেলার উপযোগী হল, কিন্তু এতে কিছু সময় নষ্ট হওয়ায় ৫০ ওভারের বদলে উভয় পক্ষকে ৪০ ওভার দেয়া হল খেলার জন্য এবং দুই দলই পুরো ৪০ ওভার করে খেলার সুযোগ পেল। এক্ষেত্রে ডিএল মেথড প্রযোজ্য হবেনা। কেননা এক্ষেত্রে ইনিংস শুরুর আগে সবারই রান শুন্য এবং উইকেটের ঘরেও শুন্য এবং প্রত্যেকেই জানে রিডিউসড ওভারের কথা।

দ্বিতীয়তঃ যদি প্রথম ইনিংসে কোনো বিঘ্ন ঘটে, যাতে প্রথম ইনিংস শুরুর পরে সেটাকে রিডিউস করা হয়, কিন্তু সেই রিডিউসড ওভারের সমান ওভারই দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে দেয়া হয় তখন প্রথম ইনিংস শেষে দ্বিতীয় ইনিংসের টার্গেট পুনরায় সেট করা হয়। এটা হাতে কত ওভার ছিল, কত রান হয়েছে আর কত উইকেট ছিল এটার উপর ভিত্তি করে করা হয়। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে টার্গেট বাড়ানো হয় দ্বিতীয় ইনিংসে, কেননা প্রথম ইনিংসের কিছুটা অংশ জুড়ে ব্যাটিং দল ভেবেছিল তাদের হাতে আরও ওভার আছে। সেক্ষেত্রে আগে জানলে তারা আরও দ্রুত রান নেয়ার উদ্দেশ্যে ব্যাটিং করতে পারতো। সেই রানটা ব্যালান্স করে দেয়া হয় টার্গেট পুনর্নির্ধারণ করে বাড়িয়ে।

তৃতীয়তঃ যদি দ্বিতীয় ইনিংসে কোনো বিঘ্ন ঘটে এবং এর জন্য দ্বিতীয় ইনিংসের ওভার সংখ্যা কমাতে হয়, তাহলে ডিএল মেথড অনুযায়ী হাতে থাকা রান, ওভার ও উইকেট অনুযায়ী তাদের টার্গেট পুনর্নির্ধারণ করা হয়।
প্রশ্ন আসতেই পারে এই নির্ধারণ কিসের ভিত্তিতে করা হয়? এটা করা হয় “রিসোর্সের” ভিত্তিতে। এই রিসোর্স হল হাতে থাকা ওভার এবং উইকেট মিলিয়ে একটা পার্সেন্টেজ।

ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ এবং টনি লুইস
ছবিঃ ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ এবং টনি লুইস

ডিএল মেথড যেভাবে অ্যাপ্লাই হবেঃ

১. ইনিংসের শুরুতে রিসোর্স পার্সেন্টেজ যত ছিল
২. বিরতির ফলে যেটুকু রিসোর্স নষ্ট হবে
৩. বাকি যা রিসোর্স থাকবে

এখন, পরে ব্যাট করা দলের রিসোর্স যদি প্রথমে ব্যাট করা দলের থেকে কম হয়, তাহলে দুই দলের বাকি থাকা রিসোর্সের রেশিও করতে হবে। এরপর পরে ব্যাট করা দলের টার্গেট হবে প্রথমে ব্যাট করা দলের স্কোর কে সেই রেশিও দিয়ে ভাগ করে। যদি পরে ব্যাট করা দলের রিসোর্স প্রথমে ব্যাট করা দলের রিসোর্সের থেকে বেশি হয়, তাহলে ১ম দলের রিসোর্স কে ২য় দলের রিসোর্স থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে। এরপর এটাকে ২২৫ এর পার্সেন্টেজ বানাতে হবে (আইসিসি নির্ধারিত ওয়ানডের গড় স্কোর)। এরপর সেটাকে প্রথমে ব্যাট করা দলের রানের সাথে যোগ করে পরে ব্যাট করা দলকে টার্গেট দিতে হবে।

১ম উদাহরণঃ (২য় দলের ইনিংসের মাঝে ওভার কার্টেল হলে)-

প্রথমে ব্যাট করে টিম ‘এ’ ৫০ ওভারে ২৫০ রান করলো। চেজ করতে নেমে টিম ‘বি’ ৪০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৯ রান করলো এমন অবস্থায় বৃষ্টিতে খেলা স্থগিত হয়ে গেল।
এখানে, টিম ‘এ’ পুরো ৫০ ওভারে খেলেছে, তাই তাদের রিসোর্স = ১০০%
টিম ‘বি’ এর শুরুতে রিসোর্স ছিল = ১০০%
৪০ ওভার শেষে টিম ‘বি’ ৫ উইকেট হারিয়েছে, টেবিল অনুযায়ী তাদের রিসোর্স বাকি = ২৬.১%
টিম ‘বি’ এর মোট ব্যবহৃত রিসোর্স = ১০০-২৬.১=৭৩.৯%
এখানে টিম ‘বি’ এর রিসোর্স ‘এ’ থেকে কম, সুতরাং ‘বি’ এর টার্গেট হবে মেইন টার্গেটের ৭৩.৯/১০০ গুণ।
টিম ‘এ’ এর স্কোর ছিল ২৫০, তাই টিম ‘বি’ এর টার্গেট হবে ২৫০x৭৩.৯/১০০=১৮৪.৭৫=১৮৫
যেহেতু ম্যাচ আর হয়নি, সেহেতু বিজয়ী ঘোষণা হবে টিম ‘বি’ এই টার্গেট অতিক্রম করেছে কিনা এটা দেখে। যেহেতু টিম ‘বি’ ১৯৯ রান করেছে, তারা ১৮৫ থেকে ১৪ রান বেশি করেছে, ফলে তারা ১৪ রানে বিজয়ী হয়েছে পরে ব্যাট করা সত্বেও।

২য় উদাহরণঃ (২য় ইনিংসের মাঝপথে খেলা স্থগিত হয়ে কিছু ওভার কেটে আবার চালু হলে)-

ধরা যাক, ৪০ ওভারের কার্টেল ম্যাচে ১ম ইনিংসে ব্যাট করে টিম ‘এ’ ২০০ রান করলো এবং টিম ‘বি’ ৩০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪০ করলো। এ অবস্থায় বৃষ্টির জন্য ৫ ওভার খেলা স্থগিত থাকার পর আবার শুরু। এ অবস্থায় টিম ‘বি’ এর নতুন টার্গেট কি হবে?
টিম ‘এ’ ৪০ ওভার খেলেছে প্রথম থেকে, সুতরাং তাদের রিসোর্স = ৮৯.৩%
টিম ‘বি’ এর ইনিংস শুরুর সময় রিসোর্স (৪০ ওভার হবার কথা) = ৮৯.৩%
৩০ ওভার শেষে টিম ‘বি’ এর ১০ ওভার হাতে ছিল এবং ৫ উইকেট হাতে ছিল, এই অবস্থায় রিসোর্স = ২৬.১%
৫ ওভার কাটা যাওয়ায় খেলা নতুন করে শুরু হলে ৫ ওভার হাতে থাকলো, এই অবস্থায় রিসোর্স থাকলো = ১৫.৪%
সুতরাং, রিসোর্স কাটা গেল ২৬.১-১৫.৪=১০.৭%
অর্থাৎ রিসোর্স বাকি থাকলো = ৮৯.৩-১০.৭=৭৮.৬%
টিম ‘বি’ এর রিসোর্স ‘এ’ থেকে কম, সুতরাং ‘বি’ এর টার্গেট হবে মেইন টার্গেটের ৭৮.৬/৮৯.৩ গুণ।
যেহেতু টিম ‘এ’ ২০০ করেছে, সুতরাং টিম ‘বি’ এর টার্গেট হবে ২০০x৭৮.৬/৮৯.৩=১৭৬ রান।
যেহেতু তারা ১৪০ রান করেছে, সুতরাং বাকি ৫ ওভারে তাদের করতে হবে আরও ৩৬ রান।

৩য় উদাহরণঃ (১ম ইনিংসে ইন্টারাপশন হলে)-

ধরি, ৫০ ওভারের ম্যাচে টিম ‘এ’ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৫ ওভারে ২ উইকেটে ১০০ করলো, এই অবস্থায় বৃষ্টির কারণে ওভার কাটা যাওয়ায় ১ম দলের ইনিংস শেষ ঘোষণা করা হল এবং টিম ‘বি’কে ২৫ ওভার ব্যাট করার সুযোগ দেয়া হল। এখন টিম ‘এ’ জানতো না যে তাদের ইনিংস ২৫ ওভারে শেষ হবে, কিন্তু টিম ‘বি’ ২৫ ওভার জেনেই মাঠে নামছে, এটা টিম ‘এ’ এর জন্য আনফেয়ার হয়ে যায়। ফলে টিম ‘বি’ এর টার্গেট বেশি দেয়া হয়।
টেবিলে দেখতে পাবো, টিম ‘এ’ মাত্র ২৫ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পাওয়ায় এবং ২ উইকেট হারানোয় তাদের ৬০.৫% রিসোর্স বাকি ছিল। যেহেতু ১০০% রিসোর্স থাকা অবস্থায় ইনিংস শুরু করেছে সুতরাং তারা মাত্র ১০০-৬০.৫=৩৯.৫% রিসোর্স ব্যবহার করতে পেরেছে।
টিম ‘বি’ ২৫ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পাবে। তাদের হাতে ১০ উইকেট থাকায় রিসোর্স হবে ৬৬.৫%। ফলে টিম ‘বি’ এর হাতে ৬৬.৫-৩৯.৫=২৭% বেশি রিসোর্স থাকবে টিম ‘এ’ এর তুলনায়। সুতরাং তাদেরকে ২২৫ এর ২৭% অর্থাৎ ৬০.৭৫ রান বেশি করতে হবে টিম ‘এ’ থেকে (৫০ ওভারের ওয়ানডের এভারেজ স্কোর ২২৫ ধরা হয়)।
সুতরাং টিম ‘বি’ এর টার্গেট হবে ১০০+৬০.৭৫=১৬০.৭৫ বা ১৬১ রান ২৫ ওভারে। এভাবে ‘বি’ টিমের আগে থেকে জেনে ২৫ ওভার ব্যাটিং করার সুবিধাটা নিউট্রিলাইজ করা হল।

এছাড়া ১ম ইনিংসের মাঝপথে খেলা স্থগিত হয়ে আবার ১ম ইনিংস শুরু হলে সেক্ষেত্রেও ডিএল মেথড অনুযায়ী টার্গেট কাটাছেড়া হবে। নিয়মটা আসলেই অনেক জটিল। তবে এটা দিয়ে মোটামুটি একটা ধারণা পাওয়া সম্ভব। বর্তমানে ডিএল মেথডের ক্যালকুলেটর আছে যেখানে শুধুমাত্র রান, উইকেট আর ওভার সংখ্যা বসিয়ে দিলেই তারা টার্গেট নির্ধারণ করে দেয়।

টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেট

২০১০ সালে অনুষ্ঠিত আইসিসি বিশ্বকাপ টি-২০ খেলার গ্রুপ পর্যায়ে শ্রীলঙ্কা এবং জিম্বাবুয়ের খেলায় ডি/এল মেথড পদ্ধতি প্রয়োগ ঘটে। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কা নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৩৭/৭ করে। ১৩৮ রানের জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় জিম্বাবুয়ে ৫ ওভারে ২৯/১ করে। ফলে, ডি/এল মেথডের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কা ১৪ রানে জয়ী হয়। একই দিনে অন্য গ্রুপের খেলায় ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলার ফলাফলও ডি/এল মেথডের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। ইংল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৯১ রানের বিরাট স্কোর গড়ে। বিশাল রানকে তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২.২ ওভারে বিনা উইকেটে ৩০ রান করা অবস্থায় বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এ পদ্ধতির মাধ্যমে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬ ওভারে ৬০ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়, যা ক্যারিবীয় দলটি এক বল বাকী থাকতেই জয়ের নোঙরে প্রবেশ করে।খেলায় পরাজিত হয়ে হতাশ ইংরেজ অধিনায়ক পল কলিংউড ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার এবং টি-২০ প্রতিযোগীতায় এর উপযোগিতা ও প্রয়োগ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাসহ প্রশ্ন তোলেন।

সর্বশেষ সংস্করণ

প্রকাশিত ছক বা টেবিলের মাধ্যমে ডি/এল মেথড বা ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির সর্বশেষ সংস্করণ ২০০৪ সালে বের হয়। এটি পরিষ্কারভাবে পূর্বতন নিয়ম-কানুনের তুলনায় একদিবসীয় ক্রিকেটে বেশি রান গড়তে পদ্ধতির উপযোগীতা, গ্রহণযোগ্যতায় রান ও রিসোর্সের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আলোকপাত করেছে। এ পদ্ধতির সর্বশেষ সংস্করণ বৃষ্টিবিঘ্নিত অন্যান্য ঘরোয়া বা অভ্যন্তরীণ খেলাগুলোতেও প্রয়োগ করা হয়।

ডাকওয়ার্থ লুইস মেথড সঠিকভাবে না জানলে কি হয় তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ সেই দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৩ বিশ্বকাপে স্বাগতিক হিসেবে তারা অন্যতম ফেভারিট ছিল। এক পর্যায়ে সুপার সিক্সে উঠতে হলে শ্রীলংকার বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে জিততেই হতো প্রোটিয়াদের। শ্রীলংকার জন্যও অপরিহার্য ছিল জয় তাই সমীকরণ এমন ছিল যে হারলেই বিদায় নিতে হবে বিশ্বকাপ থেকে। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের জন্য নতুন লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ৪৫ বলে ৫৭ রান। ৪৫তম ওভারে ড্রেসিংরুম থেকে মার্ক বাউচারকে জানানো হয় ৪৬তম ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে ২২৯ তুললেই পরের রাউন্ডে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা। মুরালিধরনের করা পঞ্চম বলটিকে ডিপ মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা মারেন বাউচার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর এক বল বাকি থাকতেই হয় ২২৯। বাউচার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে গেছেন ভেবে পরের বলটি ধীরে সুস্থে মিড উইকেটে খেলে কোন রান নিলেন না। এর পরপরই আকাশ ভেঙে নামলো তুমুল বৃষ্টি। হঠাৎই দক্ষিণ আফ্রিকার ড্রেসিংরুমে রাজ্যের হতাশা ! অধিনায়ক শন পোলক বসে আছেন গালে হাত দিয়ে। পোলকের হিসাবের ভুলে ছিটকে গেল দল। বাউচারকে পাঠানো বার্তায় পোলক জানিয়েছিলেন ২২৯ রান করলে ম্যাচটি জিতবে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু আসল জিততে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ২৩০ রান।

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া, ডিএমপি নিউজ

Related posts

দায়িত্ব এবার খালেদ-এবাদতের

News Desk

পাকিস্তানে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত অজিরা

News Desk

ক্যারিয়ারের শেষ ফাইনালে সানিয়া

News Desk

Leave a Comment