বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডে ম্যাচ জিতিয়েছে এবাদত হোসেনের বিধ্বংসী ফাস্ট বোলিং। দক্ষিণ আফ্রিকা সহ বিভিন্ন কন্ডিশনেই তাসকিন আহমেদ নিজেকে প্রমাণ করেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য কাঁধের চোটের কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে নেই তিনি।
চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে এবাদতকে সাইড বেঞ্চে বসিয়ে রেখেছিল টাইগাররা। ১৪ টেস্ট খেলা এবাদতকে বাদ দিয়ে খেলানো হয় শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদকে। যারা দুজন মিলে ৮ টেস্ট খেলেছিলেন চট্টগ্রাম টেস্টের আগে। পেস বোলিংয়ে ভরসার ছায়া ছিল শরিফুলের মাঝেও। কিন্তু বাঁহাতি এ পেসারও ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট থেকে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র হয়েছে। সিরিজ নিশ্চিত করতে মিরপুর স্টেডিয়ামে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ টেস্টের আগে কি না বাংলাদেশের পেস আক্রমণ চোটে জর্জরিত। তাসকিন-শরিফুল নেই, স্কোয়াডে থাকা চার পেসার হলেন এবাদত, খালেদ আহমেদ, শহীদুল ইসলাম ও রেজাউর রহমান রাজা। শেষের দুই জনের এখনো অভিষেকই হয়নি।
এবাদত ও ৬ টেস্ট খেলা খালেদই এখন ভরসা। যদিও চট্টগ্রামে এবাদতকে বাদ দিয়ে খালেদকে খেলানোর পরিকল্পনা বাংলাদেশের জন্য বুমেরাং হয়েছে। দুই ইনিংসে ২৩ ওভার বোলিং করে উইকেট পাননি তিনি। এমনকি তার নিয়ন্ত্রণহীন বোলিং উল্টো সেট করেছে লঙ্কান ব্যাটারদের। লাইন-লেম্হ খুঁজে পাননি পুরো ম্যাচে। অথচ লঙ্কান দুই পেসার সাগরিকায় ৭ উইকেট নিয়েছে বাংলাদেশের। কাসুন রাজিথা চারটি, আসিথা ফার্নান্দো তিনটি উইকেট পান। দুজনই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন, বোলিংয়ে বুদ্ধি-কৌশলের প্রয়োগ দেখিয়েছেন। যেখানে বাংলাদেশের পেস বোলিং ছিল নখদন্তহীন।
চট্টগ্রামে ড্র হলেও মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টে ফল প্রত্যাশা করছে উভয় দল। এখানে পেসারদের ভূমিকা থাকবে অনেক। বলার অপেক্ষা রাখে না উইকেট যেমনই হোক মিরপুরে দিনের শুরুতে এক ঘণ্টা অন্তত পেসাররা সাহায্য পেয়ে থাকেন। খালেদ-এবাদতরা সেই সুবিধা নিতে পারবেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়। আক্ষরিক অর্থেই দ্বিতীয় টেস্টে পেসাররা বড় ভূমিকা রাখবেন ম্যাচের গতিপথ নির্ধারণে। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ নিতে পারবে কি বাংলাদেশের পেসাররা?
জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু আশাবাদী, মিরপুরে পেসাররা ভালো করবেন। গতকাল তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে উইকেট কঠিন ছিল পেসারদের জন্য। আশা করি মিরপুরে ভালো করবে। এখানে সবসময় পেসারদের জন্য কিছু থাকে। ভালো বোলিং করলে উইকেট আসবেই।’ শরিফুল ছিটকে যাওয়ায় মিরপুরে একাদশে ফিরতে পারেন এবাদত।
চট্টগ্রামে পেসারদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট ছিলেন না অধিনায়ক মুমিনুল হক। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে যা প্রকাশ করেছেন তিনি। খালেদ, শরিফুল উইকেটশূন্য ছিলেন সাগরিকায়। মুমিনুল বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয় পেস বোলাররা আরেকটু ভালো বল করতে পারতো। যেহেতু পেস বোলারদের প্রতি সবার প্রত্যাশা একটু বেড়েছে। খালেদ আরেকটু লেম্হে বল করতে পারলে আরেকটু খুশি হতে পারতাম।’ স্পিন আক্রমণে সাকিব-তাইজুল থাকলেও নতুন বলে পেসারদের জ্বলে ওঠা বড্ড প্রয়োজন বাংলাদেশের জন্য। এবাদত-খালেদরা পারবেন কি? উত্তরটা আগামী ২৩ মে শুরু হতে চলা টেস্টের জন্যই তোলা থাক।