মানুষের মৃত্যু অবধারিত। এটা চির অম্লান-সত্য। ফলে জীবনের সময়টুকু পার্থিব এ জীবনের মূলধন। তাই আখিরাতের কল্যাণের কাজে যদি এ জীবন ব্যয় করা হয়, তাহলে অনিঃশেষ সফলতা।

আর যদি তা বিনষ্ট করা হয় গুনাহ ও পাপাচারে— আর এ অবস্থায় মৃত্যু হয়, তাহলে সে হবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘ঈমানদার ব্যক্তি গুনাহকে এমন মনে করে, যেন সে কোনো পাহাড়ের নিচে বসে আছে। আর যেকোনো মুহূর্তে পাহাড়টি তার ওপর ধসে পড়তে পারে।’ (বুখারি : ১১/৮৯)

অনেক মানুষ বেপরোয়াভাবে পাপাচারে লিপ্ত থাকে। একপর্যায়ে তার শেষ সময় এসে যায় এবং তার অপমৃত্যু ঘটে। যখন মৃত্যু নিকটবর্তী হয়, তখন বেশি পরিমাণে আল্লাহর রহমতের আশা করা উচিত। আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রবল হওয়া উচিত। কারণ যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহী হয়, আল্লাহও তার সাক্ষাতে আগ্রহী হন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকে যেন শুধু এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে যে সে আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ২৮৭৭)

মৃত্যুর স্মরণ উত্তম মৃত্যুর জন্য সহায়ক :

বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করলে দুনিয়ার মোহ কেটে যায় এবং আখিরাতের চিন্তা সৃষ্টি হয়। ফলে তা বান্দার মধ্যে বেশি বেশি নেক আমলের প্রেরণা সৃষ্টি করে এবং ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় অবৈধ ভোগবিলাস থেকে বিরত রাখে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘সব ভোগ-উপভোগ বিনাশকারী মৃত্যুকে তোমরা বেশি বেশি স্মরণ করো। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪০৯)

কবর মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয় তার পরিণামের কথা। মৃত্যুর পর আপনজনই তো কবর খনন করে। মৃতকে অন্ধকার ঘরে শায়িত করে। মাটির নিচে রেখে ফিরে আসে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা কবর জিয়ারত করো। কারণ তা মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’ (মুসলিম, হাদিস : ৯৭৬)

সুন্দর মৃত্যুর জন্য করণীয় বিশেষ আমল :

এক. ইবাদতের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। দুই. কোনো পাপকাজ সংঘটিত হলে দ্রুত তাওবা করা। তিন. আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম পন্থায় মৃত্যুর জন্য দোয়া করা। চার. জাহের ও বাতেন তথা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে আমলের সঙ্গে লেগে থাকা। পাঁচ. দ্বীনের ওপর অবিচল থাকা।

ছয়. আল্লাহ সম্পর্কে ভালো ধারণা পোষণ করা। সাত. তাকওয়া ও খোদাভীতি অর্জন করা। আট. বেশি বেশি তাওবা, ইস্তেগফার করা। নয়. বেশি বেশি মৃত্যুর চিন্তা করা এবং দীর্ঘ জীবনের আশা পরিত্যাগ করা। দশ. অপমৃত্যু থেকে আল্লাহর কাছে পরিত্রাণ চাওয়া।

এছাড়াও নেককার লোকদের সংস্পর্শ হৃদয়ে ঈমানি চেতনা জাগ্রত করে এবং হিম্মত ও প্রেরণা বৃদ্ধি করে। কারণ, নেককার ব্যক্তিদের ইবাদত-মগ্নতা, পুণ্যের কাজে উদ্যম ও প্রতিযোগিতা যখন অন্য মানুষ প্রত্যক্ষ করে, তখন তাদের মধ্যেও পুণ্যের পথে চলার সাহস ও প্রেরণা জাগে। একইভাবে মানুষ যখন তাদের আল্লাহমুখিতা ও দুনিয়াবিমুখতা প্রত্যক্ষ করে, তখন তাদের মনেও এই বৈশিষ্ট্য অর্জনের আগ্রহ জাগে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন

তথ্য সূত্র : https://bd-bulletin.com/

Related posts

একটি আদর্শ ও সুখী পরিবার গঠনে করণীয়

News Desk

ইসলাম কি? ইসলাম ধর্মের উৎপত্তি কিভাবে ?

News Desk

পৃথিবী না আসমান? কোনটি আগে সৃষ্টি হয়েছে ?

News Desk

Leave a Comment