আবু বকর রা. এর নিয়ম ছিল, গোলাম খাবার নিয়ে আসলে তিনি প্রথমে সেই খাবারের উৎস জিজ্ঞেস করতেন। জেনে নিতেন, কোথা থেকে এসেছে এই খাবার? একদিন ঘটল ব্যতিক্রম ঘটনা। গোলাম খাবার নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তিনি খেতে বসে যান। একবার জিজ্ঞেসও করলেন না, কোথায় পেয়েছে সে এই খাবার?
গোলাম নিজেও ব্যাপারটায় অবাক হয়। বিষ্ময় চেপে রাখতে না পেরে জিজ্ঞেসই করে ফেলে—ব্যাপার কী? প্রতিদিন আপনি খাওয়ার আগে জিজ্ঞেস করেন, এই খাবার আমি কোথা থেকে এনেছি। আজ জিজ্ঞেস করেননি কেন?
আবু বকর রা. বলেন, প্রচন্ড ক্ষুধার কারণে জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি। এখন বলো কোথা থেকে এনেছ?
গোলাম বলল, জাহেলি যুগে একবার আমি মন্ত্র পড়ে একজনকে সুস্থ করেছিলাম। সে কথা দিয়েছিল, বিনিময়ে আমাকে কিছু দিবে। আজ তার বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি, সেখানে বিয়ের আয়োজন চলছে। সেই বিয়ের খাবার এগুলো।
আবু বকর রা. শুনে বলেন, সর্বনাশ! তুমি তো আমাকে ধ্বংস করে দিয়েছ!
এরপর তিনি গলার মধ্যে আঙ্গুল ঢুকিয়ে বমি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছিল না। তখন একজন পরামর্শ দিলো, গলায় পানি দিয়ে এরপর চেষ্টা করুন, কাজ হবে। পরামর্শ মতে তিনি সেভাবেই চেষ্টা করেন। এতে কাজ হয়। বমির সঙ্গে খাবারগুলো বের হয়ে আসে।
কেউ একজন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন, সামান্য খাবারের জন্য এত কিছু? তিনি বলেন, যদি এই খাবার বের করার জন্য আমার জানও বের করা লাগত তাহলে আমি তাই করতাম। কারণ আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে দেহ হারাম খাবারের মাধ্যমে বেড়ে উঠে তার জন্য জাহান্নামের আগুনই হলো সবচেয়ে উপযুক্ত!
তথ্যসূত্র:
সিফাতুস সফওয়া, ইবনুল জাউযি (মৃ : ৫৯৭) পৃ : ৯৮
হিলয়াতুল আউলিয়া, আবু নুআইম আল-আসফাহানী (মৃ : ৪৩০) (শামেলা)

Related posts

রোজা ভঙ্গ হলে করনীয়

News Desk

যুবকদের প্রতি ইসলামী নসীহত সমূহ

News Desk

ইসলামী দৃষ্টিকোণে নারী শিক্ষা

News Desk

Leave a Comment