Image default
ইসলামধর্ম

ঈমান ভঙ্গের কারণ কি ?

আমরা নামাজ ,ওযু ভঙ্গের কারণ জানলেও ঈমান ভঙ্গের কারণ অনেকেই জানি না ।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে যা কিছু নিয়ে এসেছেন সে সব বিষয়কে অন্তরে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করাকে ঈমান বলে। আর সেই ঈমান আমাদের মনের অজান্তেই ভেঙে যায় ।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নেওয়ার এবং একে আকড়ে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে কেউ এমন কাজ না করে, যা তাকেইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়। এ ব্যাপারে দাওয়াত দেওয়ার জন্যই আল্লাহ তা‘আলা অসংখ্য নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِيْ كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولاً أَنِ اعْبُدُوْا اللهَ وَاجْتَنِبُوْا الطَّاغُوْتَ فَمِنْهُمْ مَنْ هَدَى اللهُ وَمِنْهُمْ مَنْ حَقَّتْ عَلَيْهِ الضَّلاَلَةُ- ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং ত্বাগূত[1] কে পরিহার কর। অতঃপর তাদের মধ্যে কিছুসংখ্যককে আল্লাহ হেদায়াত করেছেন এবং কিছু সংখ্যকের জন্য বিপথগামিতা অবধারিত হয়ে গেল’(নাহল ৩৬)। সুতরাং যারা নবীদের অনুসরণ করবে তারা সৎপথ পাবে। আর যারা তাঁদের অনুসরণ করবে না কিংবা অবাধ্যতা বা বিরোধিতা করবে তারা পথভ্রষ্টতায় নিপতিত হবে। এছাড়াও এমন কিছু কাজ-কর্ম রয়েছে, যা মুসলমানের ঈমান ধ্বংস করে দেয়, তাকে ‘মুরতাদে’ পরিণত করে তথা ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়। মুরতাদ হওয়ার ভয়াবহতা সম্পর্কে কুরআনুল কারীমে ও ছহীহ হাদীছ সমূহে অসংখ্য সাবধান বাণী পরিলক্ষিত হয়। মুরতাদ তথা ধর্মত্যাগীদের ব্যাপারে ওলামায়ে কেরাম একমত যে, এটা হত্যাযোগ্য অপরাধ এবং তার মাল-সম্পদ ছিনিয়ে নেওয়া ইসলামী রাষ্ট্রের শাসকের জন্য বৈধ।

ইসলাম থেকে খারিজ হওয়ার বা ঈমান বিনষ্ট হওয়ার কারণ অনেক। তন্মধ্যে দশটি কারণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো :-

১.আল্লাহর ইবাদতে শরীক বা অংশীদার স্থাপন করা ।
২. যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং বান্দার মাঝে কাউকে মাধ্যম তৈরী করে তাদেরকে ডাকে এবং তাদের নিকট শাফা‘আত কামনা করে ।
৩. যদি কোন মুসলিম ব্যক্তি মুশরিকদেরকে কাফির মনে না করে অথবা তাদের কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে অথবা তাদের মতবাদসমূহ সঠিক মনে করে ।
৪. যদি কোন মুসলিম নবী করীম (ছাঃ)-এর দেখানো পথ ব্যতীত অন্য কোন পথ পরিপূর্ণ অথবা ইসলামী হুকুমাত বা বিধান ব্যতীত অন্য কারো তৈরী হুকুমাত উত্তম মনে করে, তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে ।
৫. যদি কোন মুসলমান আল্লাহর নবী (ছাঃ)-এর আনিত বিধানের কোন অংশকে অপসন্দ করে তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে, যদিও সে ঐ বিষয়ে আমল করে ।
৬. যদি কোন মুসলিম মুহাম্মাদ (ছাঃ) আনিত ধর্মের কোন বিষয়ে অথবা ধর্মীয় ছওয়াব বা শাস্তির ব্যাপারে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে তবে সেও কাফির হয়ে যাবে ।
৭. যদি কেউ যাদুর মাধ্যমে ভাল কিছু অর্জন বা মন্দ কিছু বর্জন করতে চায় অথবা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সম্পর্ক স্থাপন বা ভাঙ্গন ধরাতে গোপন, প্রকাশ্য, মন্ত্র-তন্ত্র করতে চায় অথবা কারো সাথে (ছেলে-মেয়ে) সম্পর্ক স্থাপন বা বন্ধুত্বে ফাঁটল ধরাতে চায় ।
৮. মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুশরিকদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা ।
৯. যে ব্যক্তি মনে করে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর শরী‘আত ব্যতীত অন্য কোন ধর্মে জীবন পরিচালনা করলেও জান্নাত পাওয়া যাবে বা আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া সম্ভব, সে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে ।
১০. আল্লাহ মনোনীত দ্বীন ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া ।

Related posts

পৃথিবী না আসমান? কোনটি আগে সৃষ্টি হয়েছে ?

News Desk

ইমাম মাহদী (আ.) কে ? তিনি কোথায় অবস্থান করছেন?

News Desk

সূরা আল-ফাতিহা অর্থসহ বাংলা অনুবাদ

News Desk

Leave a Comment