প্রত্যেকের কাছেই খুব পরিচিত একটি ফল হচ্ছে আমলকি। খেতে সুস্বাদু এই ফলটি সবচাইতে উপকারী ভেষজের মধ্যে অন্যতম। এটি এমন একটি ফল যা আপনি প্রতিদিনই খেতে পারবেন, কিন্তু এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না। বরং এটি আপনাকে অনেক কঠিন রোগ থেকে মুক্তি দেবে। এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারো বেড়ে চলছে। রেকর্ড পরিমাণ রোগী সনাক্তের পাশাপাশি মৃত্যুবরণ করছেন অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা বজায় রাখার বিকল্প নেই।
এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ ছৈয়দ আহমদ তানশীর উদ্দীন বলেন, রোগ প্রতিরোধে প্রতিদিন এক গাদা ভিটামিন ট্যাবলেট না খেয়ে খান একটি করে আমলকি। কিংবা আমলকির আচার। খেতে পারেন আমলকির মোরব্বা কিংবা আমলকির পাউডার ব্যবহার করতে পারেন রান্নায়। এই সামান্য আমলকি আপনার দেহের করবে বিস্ময়কর সব উপকার। কীভাবে? চলুন তবে জেনে নেয়া যাক প্রতিদিন একটি আমলকি খাওয়ার আশ্চর্য সব উপকারিতা সম্পর্কে-
>> এই ফলটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমায়।
>> কফ, বমি, অনিদ্রা, ব্যথা-বেদনায় আমলকি অনেক উপকারী।
>> ব্রঙ্কাইটিস ও এ্যাজমার জন্য আমলকির জুস উপকারী।
>> এটি চুলের খুসকির সমস্যা দূর করে ও পাকা চুল প্রতিরোধ করে।
>> শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে।
>> লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলে দাঁত ও নখ ভালো রাখে।
>> সর্দি-কাশি, পেটের পীড়া ও রক্তশূন্যতা দূরীকরণে বেশ ভালো কাজ করে।
>> শরীর ঠাণ্ডা রাখে, শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, পেশী মজবুত করে।
>> প্রতিদিন আমলকির রস খেলে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং দাঁত শক্ত থাকে।
>> আমলকির রস কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যা দূর করতে পারে। এছাড়াও এটি পেটের গোলযোগ ও বদহজম রুখতে সাহায্য করে।
>> এক গ্লাস দুধ বা পানির মধ্যে আমলকি গুঁড়া ও সামান্য চিনি মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারেন। এটি এ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে।
>> আধা চূর্ণ শুষ্ক ফল এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে খেলে হজম সমস্যা কেটে যাবে। এমনকি খাবারের সঙ্গে আমলকির আচার হজমে সাহায্য করে।
>> প্রতিদিন সকালে আমলকির রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এতে ত্বকের কালো দাগ দূর হবে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
>> আমলকির রস দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছড়াও চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন চোখের প্রদাহ। চোখ চুলকানি বা পানি পড়ার সমস্যা থেকে রেহাই দেয়।
>> আমলকি চোখ ভালো রাখার জন্য উপকারী। এতে রয়েছে ফাইটো-কেমিক্যাল যা চোখের সঙ্গে জড়িত ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
>> আমলকির টক ও তেতো মুখে রুচি এবং স্বাদ বাড়ায়। তাই রুচি বৃদ্ধি ও খিদে বাড়ানোর জন্য আমলকি গুঁড়ার সঙ্গে সামান্য মধু ও মাখন মিশিয়ে খাওয়ার আগে খেতে পারেন।
>> এটি হৃদযন্ত্র, ফুসফুসকে শক্তিশালী করে ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধন করে। আমলকির আচার বা মোরব্বা মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা দূর করে।
>> এর এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ফ্রি র্যাডিকালস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বুড়িয়ে যাওয়া ও সেল ডিজেনারেশনের অন্যতম কারণ এই ফ্রি র্যাডিকালস।
>> ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে আমলকি। কোলেস্টেরল লেভেলেও কম রাখাতে যথেষ্ট সাহায্য করে।
>> আমলকি চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে এবং চুলের পরিচর্যার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি কেবল চুলের গোড়া মজবুত করে তা নয়, এটি চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।