মুখমণ্ডলে ব্রণের অভিজ্ঞতা হয়নি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীরা মুখের ব্রণ নিয়ে খুবই অস্বস্তিতে থাকে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা হাঁতুড়ে কিংবা চিকিৎসক নন এমন কারও পরামর্শে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খান। এতে হিতে বিপরীত হয়। ব্রণ বেড়ে অনেক সময় মুখে স্থায়ী দাগ পড়ে যায়।
সঠিক চিকিৎসায় ব্রণ ভালো হয়। বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসায় ব্রণ দূরে লেজার ট্রিটমেন্ট জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। কিন্তু এখনো অনেকে লেজার ট্রিটমেন্ট সম্পর্কে খুব একটা জানেন না।
ব্রণ চিকিৎসায় লেজার ট্রিটমেন্টের আদ্যোপান্ত জানিয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন গালিব।
তিনি বলেন, ব্রণের চিকিৎসায় লেজার ট্রিটমেন্ট কার্যকর। কিন্তু আমাদের কাছে এটি দূরে বিকল্প অনেক চিকিৎসা রয়েছে। সেগুলো কাজ না দিলে চূড়ান্ত পর্যায়ে লেজার ট্রিটমেন্ট দেই। লেজারে আমরা যে সব জিনিস কিল করতে পারি, এন্টিবায়োটিক দিয়েও তা করা সম্ভব। এন্টিবায়োটিকের পর আমরা ত্বকের উপরিভাগ কোমল করার জন্য লেজার ব্যবহার করি।
কেরাটিনাস প্রাগগুলো সাকশন দিয়ে পরিষ্কার করার জন্যও লেজার ব্যবহার করা হয়। ট্রিটমেন্ট নির্ভর করে আসলে কার কী দরকার, তার ওপর। ত্বকের ধরন, চামড়ার মান, রোগীর বয়স, তার পেশা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়।
চিকিৎসা নিয়ে ব্রণ সেরে যাচ্ছে, কিছুদিন পর আবার হচ্ছে। এক্ষেত্রে ডা. জাকির হোসেনের পরামর্শ— সাধারণত টিনএজে এমন হয়। এ সময় ব্রণ পার্চিস্ট করে। পার্চিস্টেন একনি অথবা আমরা বলি লেইট একনি, ৪১ বছর বয়সেও ভালো হচ্ছে না। এমন হলে আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখি। মেয়েদের ক্ষেত্রে ব্রণের সাথে হার্সটিজম থাকে, ফেসিয়াল রেয়াল গ্রোথ হয়। ওজন বেশি হলেও এমন সমস্যা দেখা দেয়।
অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। আমরা আল্ট্রাস্নো স্ক্যান করে তার পলিসিস্টিক ওভারিয়ান রোগ আছে কিনা নিশ্চিত হই। কারণ পলিসিস্টিক ওভারিয়ান রোগ থাকলে অনেক বয়সে গিয়েও ব্রণ হয়। এ সময় ব্রণ আনুষঙ্গিক আরও কিছু সমস্যা তৈরি করে। যেমন, হার্সটিজম থাকতে পারে, ব্লাড সুগার আইজিটি থাকতে পারে, ডায়াবেটিসের আগে ধাপটা নরমাল এবং ডায়াবেটিসের মাঝামাঝি ধাপটা ইম্পেয়ার গ্লুকোজ টলারেন্স হতে পারে। আমাদের এ ধরনের রোগীকে একটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হয়। কারণ সাধারণ ওষুধে ব্রণ ভালো হয় এমনকি ওষুধ ছাড়াও ব্রণ সেরে যায় বলে মনে করেন ডা. জাকির হোসেন।