একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসরদের হাতে নির্যাতিত আরও ১৬ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭৩তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৬ জুন গেজেট প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর ফলে ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৪১৬ জন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন। তারা প্রতি মাসে ভাতাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের মতো অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ১৬ জন বীরাঙ্গনা হলেন-সুনামগঞ্জের অচিন্তপুরের গুলবাহার বেগম, মাদারীপুরের চর কামার কান্দির আজুফা বেগম, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার দুর্গারামপুরের আনোয়ারা বেগম, রুমিয়া খাতুন, পিরোজপুরের নেছারাবাদের জুলহারের বিল্ল বাসিনী, শেফালী সিকদার, চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর সরাইপাড়ার হোসনে আরা বেগম, নরসিংদীর রায়পুরার মামুদপুরের জাহেরা খাতুন, মৌলভীবাজারের পশ্চিম দিগলগজির মইরম নেছা, হাজেরা বেগম, সৈয়ারপুরের প্রীতি রানী দত্ত, রংপুরের মিঠাপুকুরের শাকুরের হাটের ফুলচৌকির মোছা. ফাতেমা বেগম, জগদীশপুরের মোছা. বেগনা বেগম, চিথলী উত্তরপাড়ার মোছা. মালেকা বেগম, নোয়াখালীর মাইজদীর শোভা পারভীন ও বাগেরহাটের রায়েন্দা বাজারের সেতারা বেগম।

২০১৩ সালের ডিসেম্বরে সমকালে মুক্তিযুদ্ধে ১২৬ জন বীরাঙ্গনার অবদান ও দুঃখ দুর্দশা নিয়ে ১২ পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্টে রিট করে একটি বেসরকারি সংগঠন। ওই রিটে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি বীরাঙ্গনাদের স্বীকৃতি দিতে জাতীয় সংসদে আইন পাস করে সরকার।

এরপর এ পর্যন্ত ৪১৬ জনকে বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলো। স্বীকৃতিপ্রাপ্তদের মধ্যে সমকালে প্রকাশিত শতাধিক বীরাঙ্গনা রয়েছেন। বর্তমানে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা মাসিক ১২ হাজার টাকা ভাতা পান। গেজেটভূক্ত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধারাও একই সমান ভাতা পাবেন। এ ছাড়া সরকারি চাকরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবাসহ সকল ক্ষেত্রে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যরা যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা পান, তার সবটাই পাবেন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

Related posts

কিশোর পারেখ: মুক্তিযুদ্ধে প্রচারবিমুখ এক ফটো সাংবাদিক

News Desk

ক্র্যাক প্লাটুন: ঢাকার বুকে কাঁপন ধরানো গেরিলা দল

News Desk

বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের পেছনের গল্প

News Desk

Leave a Comment