যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সাবমেরিন–সংক্রান্ত গোপন তথ্য বিদেশে পাচারের চেষ্টা করে ধরা পড়েছেন দেশটির নৌবাহিনীর এক প্রকৌশলী ও তাঁর স্ত্রী। এ দুজনই তাঁদের দোষ স্বীকার করেছেন। দেশটির ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের আদালতের কাছে দোষ স্বীকার করেছেন তাঁরা।
যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দোষ স্বীকার করা ওই দুজন হলেন প্রকৌশলী জোনাথন টোয়েবে (৪২) ও তাঁর স্ত্রী ডায়ানা টোয়েবে (৪৬)। গত সপ্তাহে প্রথমে দোষ স্বীকার করেন জোনাথন। পরে দোষ স্বীকার করেন ডায়ানা। ডায়ানার তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। আর জোনাথনের কারাদণ্ড হতে পারে ১২ থেকে ১৭ বছর।
ডায়ানা পেশায় শিক্ষক। কৌঁসুলিরা আদালতে জানিয়েছেন, স্বামী জোনাথন গোপন তথ্য বিক্রির জন্য নির্ধারিত স্থানে রাখার সময় নজর রাখছিলেন ডায়ানা। এ ছাড়া একবার তথ্যবাহী একটি ‘ডেটা কার্ড’ স্যান্ডউইচের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
অন্যদিকে, জোনাথন যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিনের পারমাণবিক ব্যবস্থাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ। সর্বশেষ তিনি দেশটির সংরক্ষিত বাহিনীর সদস্য ছিলেন। এর আগে কাজ করেছেন নৌবাহিনীতে। সে সময় ভার্জিনিয়ায় নৌবাহিনীর অভিযানসংক্রান্ত প্রধানের কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তদন্তকারীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বছরের পর বছর ধরে জোনাথন পারমাণবিক সাবমেরিনের গোপন তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। প্রতিবার তিনি এ–সংক্রান্ত নথির অল্প কিছু পাতা অফিসের বাইরে নিয়ে আসতেন। সেখানে থাকা তল্লাশিচৌকিগুলোয় ধরা পড়া এড়াতেই এমন করতেন জোনাথন।
তবে এক জায়গায় ভুল করে বসেন জোনাথন। বিদেশি সরকারের হয়ে কাজ করছেন ভেবে এক ব্যক্তির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ওই ব্যক্তি আদতে ছিলেন ছদ্মবেশে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের সদস্য। তাঁর হাত ধরেই ধরা পড়েন জোনাথন।
বিদেশি ভেবে ওই এফবিআই কর্মকর্তাকে লেখা এক বার্তায় জোনাথন জানান, তিনি খুবই ধীরে ধীরে আর সতর্কতার সঙ্গে গোপন নথিগুলো নিজের দখলে এনেছেন। কেউ যেন সন্দেহ না করে, এ জন্য কাজটি সেরেছেন অফিসের সময়েই।
অপর আরেকটি বার্তায় ওই এফবিআই কর্মকর্তার সঙ্গে নিজের বন্ধুত্বের বিষয়ে লিখেছেন জোনাথন। তিনি লেখেন, একদিন, যখন সবকিছু নিরাপদ হবে, তখন পুরোনো দুই বন্ধুর হয়তো কোনো ক্যাফেতে দেখা করার সুযোগ হবে। এ সময় তাঁরা পানীয়র বোতল ভাগাভাগি করবেন এবং অপকর্মের গল্পগুলো নিয়ে হাসাহাসি করবেন।