Image default
আন্তর্জাতিক

এ বার রুশ বাহিনীর নিশানায় ইউক্রেনের রেলপথ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুদ্ধের আগুনে গত দু’মাস ধরে পুড়ছে ইউক্রেন। তার আঁচ টের পাচ্ছে রাশিয়াও। ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রুশ শহর ব্রায়ানস্কের একটি তেলের ডিপোয় ভয়াবহ আগুন ধরে। এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষই আগুনের উৎস নিয়ে কিছু মন্তব্য করেনি। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা তদন্ত শুরু করেছে। অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ইউক্রেন মুখ খোলেনি। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী আজ জানিয়েছে, তাদের দেশের রেলস্টেশন ও রেললাইনে নিয়ে মোট পাঁচটি জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ওই হামলায় হতাহতের খবর স্পষ্ট নয়।

এ মাসের গোড়ায় রাশিয়ার আরও একটি তেলের ডিপোয় আগুন ধরেছিল। সে বার মস্কো অভিযোগ করেছিল, ইউক্রেনীয় হেলিকপ্টার আকাশসীমা ভেঙে রাশিয়ায় ঢুকে বোমা ফেলেছিল। তার জেরে ওই অগ্নিকাণ্ড। ইউক্রেন যদিও অস্বীকার করে। তবে কৃষ্ণসাগরে রুশ যুদ্ধজাহাজ মস্কভার ডুবে যাওয়ার কারণ যে তাদেরই ক্ষেপণাস্ত্র-হানা, কিভ নিজেই সে খবর দিয়েছিল। সে বার অবশ্য শুরুতে রাশিয়াই অস্বীকার করেছিল সে কথা। পরে তারা মেনে নেয়। গত সপ্তাহে মস্কো অভিযোগ করে, সীমান্তবর্তী এলাকায় একাধিক আবাসনে হামলা করেছে ইউক্রেনের হেলিকপ্টার। এ দিন ব্রায়ানস্কের অগ্নিকাণ্ড আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, রাশিয়ার জ্বালানি এই পথেই ইউরোপে যায়। ঘটনাটির জেরে ইউরোপে তেল সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট ভাবে বলতে পারছে না কেউই।

জ্বলছে ইউক্রেনও। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে এখনও কিছুটা সক্রিয় রেখেছে তার রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। উদ্ধারকাজ ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া, দু’কাজই চলছে রেলের উপর নির্ভর করে। এ বারে সেই রেলপথকেই নিশানা করা শুরু করেছে রুশ বাহিনী। আজ সকালে মধ্য ও পশ্চিম ইউক্রেনের অন্তত পাঁচটি স্টেশনে আগুন লাগে। এর মধ্যে একটি ঘটনা ঘটে লিভিভের কাছে ক্রেসন শহরে, দু’টি ঘটনা ঘটেছে রিভন অঞ্চলে। রিভনের সেনাবাহিনী প্রধান ভিটালি কোভাল বলেন, ‘‘রেল পরিকাঠামোর উপরে দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র হানা ঘটিয়েছে শত্রুরা। কোনও হতাহতের খবর নেই। সাইরেন বাজলেই বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে সতর্ক করা হয়েছে।’’ ভিনিতসিয়া অঞ্চলে অবশ্য রুশ হামলায় প্রাণহানি ঘটেছে। কিন্তু জখম বা মৃতের সংখ্যা পরিষ্কার নয়। ৮ এপ্রিল প্রথম ক্রামাতোরস্ক রেলস্টেশনে ক্ষেপণাস্ত্র হানা চালিয়েছিল রাশিয়ার সেনাবাহিনী। ৫০-এর বেশি ইউক্রেনীয় নিহত হন। সেই শুরু।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আজ মারিয়ুপোলের আজ়ভস্টল কারখানা এলাকায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘‘মস্কোর সময় অনুযায়ী ২৫ এপ্রিল, দুপুর ২টো থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হচ্ছে। নিরাপদ দূরত্বে থাকবে রুশ বাহিনী। সাধারণ মানুষকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।’’ ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘সাধারণ মানুষ মারিয়ুপোল থেকে বেরিয়ে কোথায় যাবেন, সেই সিদ্ধান্ত তারাই নেবেন।’’ যাঁরা আজ়ভস্টল কারখানার ভিতরে রয়েছেন, রেডিয়ো-বার্তায় তাঁদের এই খবর দেওয়া হয়েছে। সাদা পতাকা হাতে আজ়ভস্টল থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তাঁদের তৈরি থাকতে বলেছে রাশিয়া।

ইউক্রেন সরকার এ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি। উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুকের বক্তব্য, রাশিয়ার উপরে ভরসা নেই। তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়া বহু বার যুদ্ধবিরতির কথা বলেছে। মানব করিডর খুলে দেওয়ার কথা দিয়েছে। কিন্তু তারা কখনও কোনও কথা রাখেনি। মানব করিডরও খোলা হয়নি।’’ সাধারণ মানুষের জীবনের নিশ্চয়তা দাবি করেছেন ইরিনা। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেজ়ের কাছে তিনি জানিয়েছেন, মস্কোর কাছে লিখিত চুক্তিপত্র চায় কিভ। অতএব, আজও মারিয়ুপোল থেকে সাধারণ মানুষকে উদ্ধার করা যায়নি।

Related posts

ভোটের সকালে বন্ধ ভুটান গেট, ওপারে নীরব ড্রাগনভূমি

News Desk

ভারতে করোনায় একদিনে আরও ৪ হাজার মানুষের মৃত্যু

News Desk

ইউরোপের ৩১ কূটনীতিককে বহিষ্কার রাশিয়ার

News Desk

Leave a Comment