গত কয়েক মাস ধরে লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকা দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাখতুমের মেয়ে রাজকুমারী শেখ লতিফা বিনতে মোহাম্মদ আল-মাখতুমকে হঠাৎ করে দেখা গেছে। চলতি সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামের অন্তত দু’টি অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা একটি ছবিতে দুই তরুণীর সঙ্গে তাকে দেখা যায় বলে শনিবার এক প্রতিবেদনে খবর দিয়েছে বিবিসি।
এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝের দিকে বিবিসির প্যানোরামা অনুষ্ঠানে একটি রাজকুমারী লতিফার একটি গোপন ভিডিও প্রচার করা হয়। এতে তাকে বলতে দেখা যায়, তাকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে এবং তিনি জীবন শঙ্কায় রয়েছেন।
নতুন করে ইনস্টাগ্রামে যে ছবিতে দেখা যাচ্ছে; সেই ছবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বিবিসি। এছাড়া এই ছবি পোস্ট করা হলেও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট দু’টি থেকে বিস্তারিত কোনও তথ্যও দেওয়া হয়নি। তবে রাজকুমারী লতিফার একজন বন্ধু নিশ্চিত করেছেন যে, ছবিতে তাকে দেখা যাচ্ছে তিনিই দুবাই শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুমের মেয়ে লতিফা।
এক বিবৃতিতে দুবাইয়ের এই রাজকুমারীকে মুক্ত করার লক্ষ্যে গঠিত ফ্রি লতিফা গ্রুপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড হেইগ বলেন, আমরা নিশ্চিত করছি যে, রাজকুমারী লতিফার মুক্তির আন্দোলনে বেশ কিছু সম্ভাব্য তাৎপর্যপূর্ণ এবং ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। এই পর্যায়ে আমাদের মন্তব্য করার ইচ্ছে নেই। তবে এ বিষয়ে যথাসময়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হবে।
২০১৮ সালের মার্চে শেখ লতিফা সমুদ্রপথে সংযুক্ত আরব আমিরাত ইউরোপে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর থেকেই তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে গোপনে ধারণ করা ভিডিওতে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
ভিডিওটি প্রকাশের পর বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় এবং জাতিসংঘের তদন্তের দাবি উঠতে শুরু করে। এরপরই রাজকুমারী লতিফা যে এখনও জীবিত আছেন; সংযুক্ত আরব আমিরাতকে তার প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানায় জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজকুমারী শেখ লতিফা বাড়িতে আছেন বলে রাজপরিবারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
সেই সময় বিবিসি প্যানারোমায় প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে রাজকুমারী লতিফাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাকে গাড়ি চালাতে দেওয়া হয় না, আমাকে বাইরে যেতে দেওয়া হয় না। আমি কোনোভাবে দুবাই ছাড়তে পারছি না।’
শেখ লতিফার বাবা বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রনেতাদের একজন। তিনি একইসঙ্গে আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দুবাইয়ের শাসক। দুবাইকে আধুনিক করলেও নারী অধিকারের বিষয়ে বৈষম্যের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।