পৃথিবীজুড়ে চলছে কালান্তক করোনার কালবেলা। মারণ ব্যাধির দাপটে বিপর্যস্ত জনজীবন। দিন যত যাচ্ছে ততই হু-হু করে বাড়ছে সংক্রমণের রেশ। পৃথিবীর এই কঠিন অসুখে ফের করোনা নিয়ে সামনে এল আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিসেস কন্ট্রোলের ( CDC) বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন যে, করোনা ভাইরাস বায়ুবাহিত। বাতাসের মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় পৃথিবীজুড়ে আরও জটিল হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। বাতাসের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণের দাপট।
যদিও গত এপ্রিল মাসে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জার্নাল ল্যানসেটে (Lancet) প্রকাশিত রিপোর্টে করোনা ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে দাবি করা হলেও সেই দাবিকে নস্যাৎ করে দেওয়া হয়।
পরে অবশ্য গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, করোনা ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে না ছড়ালে বিশ্বজুড়ে সংক্রমণের এত বাড়বাড়ন্ত থাকত না। গত বছর থেকেই ব্যাপক হারে বাড়ছে করোনা। এই অবস্থায় আমাদের লালারস বা অন্য কোনও ভাবে অন্যদের দেহে ছড়িয়ে পড়ছে করোনর জীবাণু।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, করোনা ভাইরাস অবশ্যই বায়ুবাহিত৷ নাহলে সংক্রামিত রোগীর সংখ্যা এত বৃদ্ধি পেত না। এছাড়াও হু-য়ের(WHO) দাবি ভাইরাসগুলি সাধারণত দুজন মানুষের একে অপরের নিবিড় সংস্পর্শের ফলে বাতাসের মাধ্যমে দ্রুত অন্যদের সংক্রমিত করছে। এক্ষেত্রে দুজন ব্যক্তি যদি সামাজিক দূরত্ব না মেনে একমিটারের মধ্যে অবস্থান করেন তাহলে বায়ুবাহিত অ্যারোসোল বা জীবাণুর কণাগুলি দ্রুত অন্যদের নাক বা মুখের সংস্পর্শে এসে তাঁদেরও সংক্রামিত করে দিতে পারে।
সিডিসির (CDC) বিজ্ঞানীদের দাবিকে মান্যতা দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার(Sri Lanka) গবেষকরাও। তাঁরাও করোনার একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট(New Variant of Coronavirus) আবিষ্কার করেছেন।
এই বিষয়ে শ্রীলঙ্কার বিশিষ্ট ইমিউনোলজিস্টদের(immunologists)মধ্যে অন্যতম নীলিকা মালাভিগে( Neelika Malavige) নামের একজন গবেষক চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করে জানিয়েছিলেন যে, করোনার নয়া স্ট্রেনটি বায়ুবাহিত। এটি মাত্র একঘণ্টার মধ্যেই বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে প্রচুর মানুষকে আক্রমণ করতে পারে।
অন্যদিকে এই বিষয়ে সিডিসি’র (CDC) এর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, করোনার নয়া স্ট্রেন কীভাবে সাধারণ মানুষকে সংক্রামিত করছে তা জানার পরও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলি এখনও সেভাবে মেনে চলা হচ্ছে না।
এছাড়াও তাঁরা আরও জানিয়েছেন যে, করোনা রুখতে এখন টিকাকরণের উপর যেমন জোর দেওয়া উচিত তেমনই এখনও ফেসসিল্ড, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি।