বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির লক্ষণগুলো ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ভোগ্যপণ্য প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, সরবরাহ ঘাটতিসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে তারা পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত মূল্যস্ফীতি ঠেকানো বাজার ও নীতিনির্ধারকদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যাংক অব আমেরিকা করপোরেশনের এক জরিপে দেখা গেছে, মূল্যবৃদ্ধি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিক্রিয়া বর্তমানে অর্থ ব্যবস্থাপকদের সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়।
অনেক অর্থনীতিবিদ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের মতে, এই মূল্যবৃদ্ধি অস্থায়ী। ভাইরাস সংক্রান্ত আশঙ্কা এবং বেকারত্বের কারণে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটবে।
অবশ্য এ নিয়ে এখনো সংশয় রয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। নেসলে এবং কোলগেট-পালমোলিভের মতো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, তাদের পণ্যের মূল্য বাড়ানো আবশ্যক হয়ে উঠতে পারে।
মার্কিন রাজস্ব মন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন গত সপ্তাহে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পণ্যের দামও বেড়ে যেতে পারে। এ অর্থনীতিবিদ অবশ্য পরে দাবি করেছেন, তিনি পণ্যের দাম বাড়ানোর সুপারিশ বা সম্ভাবনা কোনোটার কথাই বলেননি।
২৩টি কাঁচামাল সম্পর্কিত ব্লুমবার্গ কমোডিটি স্পট ইনডেক্সে দেখা যায়, এটি গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী উৎপাদনমূল্য ২০০৯ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে গেছে। জেপি মারগান চেজ অ্যান্ড কো. এবং আইএইচএস মার্কিতের তথ্য অনুসারে, মার্কিন উৎপাদকরা এমন মূল্যবৃদ্ধি ২০০৮ সালের পর আর দেখেননি।
জেপি মরগানের বিশ্লেষকরা আরও অনুমান করছেন, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বৃহত্তম অর্থনীতির দেশগুলোতে অ-খাদ্য পণ্য ও জ্বালানির আমদানি মূল্য প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আইএইচএস মার্কিতের গবেষণা পরিচালক জন মাদার্সোল বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ঝুঁকি স্পষ্টতই উল্টো দিকে ঝুঁকছে। গত এক বছরে পণ্যমূল্যের উত্থান এবারের গ্রীষ্মে উচ্চ মূল্যস্ফীতির গ্যারান্টি দিচ্ছে।