ইতালির ৩ হাজার বছরের পুরনো এক শহর আজ ধ্বংসের মুখে। প্রকৃতির রুদ্ররূপ আজ ধ্বংস করছে এই শহরকে। এখন এই শহরকে বলা হচ্ছে ‘ডাইং টাউন’। যার বাংলা অর্থ ‘মরছে এমন শহর’।
প্রকৃতির রুদ্ররোষের কোপে পড়ে এখন এ শহরের স্থান দাঁড়িয়েছে আগের তুলনায় মাত্র এক তৃতীয়াংশ। ৩০০০ বছরের এই শহর ক্রমাগত ভূমিধস, মাটি ক্ষয়ের জেরে এই শহর এখন ধ্বংসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। এক পাহাড়ের মাথায় এই শহরটি অবস্থিত।
এখনও এখানে থাকা কিছু বাসিন্দারা ইউনেস্কোর কাছে আবেদন করে জানিয়েছে, তারা এই জায়গা ছেড়ে চলে গেলেও যেন তাদের বাড়িগুলিকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা একবার করা হয়, নইলে ইতালির একটা ইতিহাস চিরতরে মুছে যাবে। ইতালির এই পুরনো শহরের নাম সিভিতা।
মাত্র কয়েক শতক আগেও বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে এই শহর অন্য প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত ছিল, কিন্তু কিন্তু ঘন ঘন ভূমিধস, ভূমিকম্প ও মাটির ক্ষয়ের কারণে এই শহর ছোট হতে শুরু করে। অন্য প্রদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হতে থাকায় ও ক্রমেই শহর ছোট হতে থাকায়, মানুষ এই শহর ছাড়তে শুরু করে।
জিওলজিস্ট লুকা কোস্টান্টিনি বলছেন, ক্রমাগত ভূমিকম্প, ভূমিধস ও মাটির ক্ষয়ের কারণে সিভিতা শহর এখন অত্যন্ত ছোট হয়ে পড়েছে। এখন এই শহরে একটি চৌরাস্তা এবং কয়েকটি লেন অবশিষ্ট রয়েছে। আর রয়েছে কয়েকটা বাড়ি ও গির্জা।
তবে এই শহরকে বাঁচাতে চেষ্টাও এখন করা হচ্ছে। ভূমি ক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচতে নানা পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে। আশা করা যায়, এতে শহরের অবশিষ্ট অংশের আয়ু কিছুটা হলেও বাড়বে।
এই শহরের মেয়র লুকা প্রোফিলি বলেন, আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হল সিভিটা বাঁচানো। শহরটি এটারাসকানস তৈরি করেছিল। রোমান আমলের দাক্ষী এই শহর, এরপর মধ্যযুগ পার হয়েছে, তারপরেও এই আধিনিক যুগে এসে ভাঙাচোরা অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ফেলছে এই শহর। অর্থাৎ এ এক ইতিহাসের জ্বলন্ত নিদর্শন। যা আজ অতীতের গহ্বরে তলিয়ে যেতে চাইছে। এখন সিভিতা শহরের যে অংশটুকু বেঁচে আছে তার আকার বলা চলে দুটি ফুটবল মাঠের চেয়েও কম। মেয়র আশা করছেন খুব তাড়াতাড়ি এই শহরকে রক্ষার আরও কাজ শুরু হবে।