Image default
আন্তর্জাতিক

পার্থ অনুব্রতদের কুকীর্তি ঢাকতে মিথ্যা প্রচার, বিপদে মমতার দল

ছবি: সংগৃহীত

বিরোধী বাম বিজেপির কাছে নেই নেতা কর্মী ও সংগঠন। সঙ্গে নেই জেতার মত ভোটার সংখ্যা। কুকর্ম করলেও তৃণমূলের বিকল্প তৃণমূল। তারপরও পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতারের পর নির্লজ্জতা দেখিয়ে মিথ্যে প্রচার করতে কর্মীদের হাতে পতাকা ধরিয়ে দিয়ে মিছিল করিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল প্রমাণ করল, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের মেরুদণ্ড বলে কিছু নেই।

সংশ্রিষ্টরা বলেছেন, বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর শুক্রবার শ্রমিক, কলেজ পড়ুয়া ও কর্মীদের দিয়ে মিছিল করিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মিছিল থেকে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার এজেন্সি ব্যবহার করছে।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো নিরপেক্ষ চেহারা কেন হারাচ্ছে? এটা আমাদের প্রশ্ন। কেন্দ্রের শাসক দলে যারা থাকেন, তাদের বিরুদ্ধে কেন কোনো পদক্ষেপ হয় না? যদিও বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, সাধারণ মানুষের করা মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্ত চলছে। তৃণমূলের অভিযোগ ঠিক নয়।

এদিকে, গ্রেফতার হওয়া অনুব্রত মণ্ডল সম্পর্কে বাম বিজেপি এক লাইনে। হাড়হিম করা সন্ত্রাসকে হাস্যরসের মাধ্যমে উপস্থাপিত করতেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এমনই দাবি করলেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, ইলামবাজার ব্লকে বিজেপি করার অপরাধে সংখ্যালঘু কর্মী শেখ রহিম সহ ৬ জনকে খুন করা হয়। শেখ রহিমের দুই মেয়েকে নগ্ন করিয়ে প্যারেড করানো হয়। তারা লজ্জা নিবারণের জন্য পুকুরের জলে ঝাঁপ দেয়। তাদের মাকে বিবস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। এমনই নানান কীর্তি রয়েছে অনুব্রতের নামে। তবে তিনি যতই হাড়হিম করা সন্ত্রাস করুক না কেন যখন তাকে প্রশ্ন করা হতো তখন তিনি খুবই হাঁসির চলে সেই প্রশ্ন এড়িয়ে যেতেন।

কটাক্ষ করে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, মাত্র দুটো উইকেট পড়েছে। আরও অনেক বেশি পড়বে বলে তার ধারণা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যদি মন্ত্রী মণ্ডলের বৈঠক করতে হয় জেলের মধ্যে গিয়ে করতে হবে। পার্টির যদি মিটিং করতে হয় তাহলে জেলের মধ্যে গিয়ে করতে হবে। বেশিরভাগ নেতা মন্ত্রী দুর্নীতিগ্রস্ত। তাই সাধারণ মানুষই কোর্টে গেছে। কোর্ট সিবিআই তদন্ত দিয়েছে, সেই সিবিআই তদন্তে ধরা পড়ছে সব। যারা রাজনীতি করছেন, তারা মাথা ঠিক করুন। পশ্চিমবঙ্গে যা দুর্গতি হয়েছে, তার থেকে রেহাই পাওয়ার এটাই রাস্তা।

অনুব্রত মণ্ডলকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ আদালত। আর এই নির্দেশের পরই বৃহস্পতিবার মধ্য রাতেই কলকাতার নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হয়েছে অনুব্রতকে। তবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের বিশেষ কিছু নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতিকে জেরা করা ও হেফাজতে রাখার সময় অবশ্যই সেগুলি মেনে চলতে হবে সিবিআইকে। আদালতের নির্দেশ, কোনও ভাবে মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন করা যাবে না অনুব্রতকে। প্রয়োজনে আলিপুর কমান্ড হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। সেখানকার এমডি মেডিসিন, এমএস মেডিসিন এবং এমডি কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গড়ে অনুব্রত চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে। প্রতি ৪৮ ঘন্টায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে ধৃত তৃণমূল নেতার। অনুব্রত কান্ডের মধ্যে নতুন বিপদে তৃণমূল। এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে এসএসসির দুই প্রাক্তন কর্তা শান্তিপ্রসাদ সিনহা ও অশোক সাহাকে সাত দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে সিবিআইয়ের জেরার মুখে শান্তিপ্রসাদ সব অপরাধ কবুল করেছেন। বলছেন, পার্থ তাঁকে যা যা নির্দেশ দিতেন, সেটাই পালন করেছেন তিনি। তালিকায় কার নাম আগে থাকবে, কার নাম পিছনে থাকবে সব বিষয়ে তাঁকে নির্দেশ দিতেন পার্থ। তাঁর হাত ঘুরেই টাকা যেত পার্থর কাছে। টাকা শিক্ষা দফতর নাম লেখা খামে ভরতেন এই প্রাক্তন কর্তা। ফলে আগামী দিনে পার্থর সময় যে খারাপ আসতে চলেছে তা বলাই যায়। অপর দিনে সিবিআই সূত্রের খবর আরো এমন তথ্য দিয়েছে শান্তিপ্রসাদ সিনহা যার মাধ্যমে আগামী দিনে তৃণমুলের আরো বড় বড় নেতা পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে সিবিআই ও ইডি। ফলে বিপাকে তৃণমুল সরকার। অর্পিতা সেই ভাবে মুখ না খুললেও শান্তিপ্রসাদ সিনহা আগামী দিনে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে।

Source link

Related posts

করোনার আরেকটি ঢেউ সামনেই, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা

News Desk

কিউবার আবিষ্কৃত টিকা বানাবে ভেনেজুয়েলা

News Desk

ভারতে সারাক্ষাণ হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে

News Desk

Leave a Comment