Image default
আন্তর্জাতিক

তৃণমূল বিধায়ক মানিকের আমলে ৫৮ হাজার চাকরি ‘বিক্রি হয়েছে’

পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) চেয়ারম্যান থাকাকালে তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য ৫৮ হাজার চাকরি ‘বিক্রি’ করেছেন। এ তথ্য কলকাতার নগর আদালতে জানিয়েছেন ভারতের তদন্তকারী গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) এক কর্মকর্তা। গতকাল মঙ্গলবার মানিক ভট্টাচার্যকে শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজনীতি এখন আবর্তিত হচ্ছে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি–কাণ্ড নিয়ে। দিনে দিনে বেরিয়ে পড়ছে এই দুর্নীতি–কাণ্ডের নানা গোপন তথ্য। আর তা ফাঁস হচ্ছে ভারতের দুই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই এবং ইডির তৎপরতায়।

 

ইতিমধ্যে ফাঁস হয়েছে ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের এসএসসির নিয়োগ পরীক্ষায় যাঁরা মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, তাঁদের বাদ দিয়ে সেখানে ওই তালিকায় ঘষামাজা করে নম্বর বাড়িয়ে অধিকাংশ ফেল করা প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এভাবে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী, নেতা, বিধায়ক ও প্রভাবশালীদের পরিজন চাকরি পেয়েছেন। এর জেরে মেধাতালিকায় থাকা সেই সব প্রার্থীরা আজ ৫৭৭ দিন ধরে কলকাতার ধর্মতলায় চাকরির দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন।

তবে এই অবস্থান ধর্মঘটে এতটুকু টনক নড়েনি রাজ্য সরকারের। এই নিয়োগের হোতা ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। হাজারো প্রার্থীকে চাকরি দিয়েছেন। চাকরি বিক্রি করেছেন লাখ লাখ রুপির বিনিময়ে।

আর কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া এই দুর্নীতি মামলায় জড়িয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধায়সহ ছয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন ইডি এবং সিবিআইর হাতে। তাঁরা এখন কারাগারে।

মানিক ভট্টাচার্যকে বারবার ইডির দপ্তরে ডাকা হলেও তিনি হাজির হননি। বরং উল্টো তিনি মামলা ঠুকেছেন সুপ্রিম কোর্টে। আদালত সেই দাবি মেনে মানিক ভট্টাচার্যকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত রক্ষাকবচ দেন। কিন্তু ১০ অক্টোবর সেই রক্ষাকবচের মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই দিনই ইডি তাঁকে নোটিশ পাঠায় তাদের দপ্তরে উপস্থিত হওয়ার জন্য। সেই নোটিশ পেয়ে মানিক ভট্টাচার্য ইডির দপ্তরে হাজিরা দিলে ইডি তাঁকে সোমবার দুপুর থেকে রাত অবধি ১০ ঘণ্টা জেরা করেন। গভীর রাতে ইডি তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাঁকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হলে মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলে বিচারক সেই আবেদন খারিজ করে তাঁকে ১৪ দিনের ইডির হেফাজতে রাখার আদেশ দেন।

গতকাল বিকেলে আদালতে শুনানিকালে ইডির আইনজীবী বলেন, এ রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির হোতা ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। তিনি ২০১১ সাল থেকে মমতার জমানায় এই পদে রয়েছেন। তবে হাইকোর্টের নির্দেশে সম্প্রতি তাঁকে অপসারণ করা হয়। তাঁর আমলেই এই রাজ্যে ৫৮ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু সেই নিয়োগও ছিল দুর্নীতিতে ভরা। শিক্ষকের পদ বিক্রি হয়েছে।

ইডি আরও বলেছে, মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের একটি ব্যাংক হিসাবেই তারা ২ কোটি ৬৪ লাখ রুপির সন্ধান পেয়েছে।

 

Related posts

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ

News Desk

যাত্রীবাহী বিমানের রাস্তার ওপর জরুরি অবতরণ

News Desk

মার্কিন সেনা আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার বেদনাদায়ক: টনি ব্লেয়ার

News Desk

Leave a Comment