করোনাভাইরাসের অভিযোজিত ধরন ডেল্টায় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশ্বের প্রধান চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী ল্যানসেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রচলিত করোনাভাইরাস ও তার অন্যান্য অভিযোজিত ধরনগুলোতে আক্রান্ত রোগীদের তুলনায় ডেল্টায় আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি দ্বিগুণ থাকে।
যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডের স্ট্রেথক্লাইড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণার বরাত দিয়ে করা ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, করোনা টিকার ডোজ গ্রহণ করলে এই ঝুঁকি হ্রাস পায় এবং এক ডোজের করোনা টিকার চেয়ে দুই ডোজের টিকা ডেল্টা প্রতিরোধে অধিক কার্যকর।
সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মৃদু উপসর্গ বহন করা করোনা রোগীদের মধ্যে ৭ হাজার ৭২৩ জন এবং হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে ১৩৪ জন ডেল্টায় আক্রান্ত।
যুক্তরাজ্যের অপর রাজ্য ইংল্যান্ডে ডেল্টায় আক্রান্তের হার আরও বেশি। দেশটির সরকারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এনএইচএস জানিয়েছে, ইংল্যান্ডে সম্প্রতি প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং এই রোগীদের শতকরা ৯০ ভাগই ডেল্টায় আক্রান্ত।
স্ট্রেথক্লাইড বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য ও মহামারিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ক্রিস রবার্টসন ডেল্টার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে টিকার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘যদি আপনি পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন, সেক্ষেত্রে যে কোনো করোনা টিকার দুই ডোজ আপনার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি ৭০ শতাংশ কমিয়ে দেবে। যদি আপনি টিকার এক ডোজ নেন, তাহলে এক মাস আপনি ঝুঁকিমুক্ত থাকবেন।’
রবার্টসন আরও জানান, ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকা ডেল্টার বিপরীতে মানবদেহে ৭৯ শতাংশ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। করোনার অপর অভিযোজিত ধরন আলফার বিপরীতে এই হার ৯২ শতাংশ।
তবে শুধু এই শতাংশের হিসাবের ওপর ভিত্তি করে যদি টিকার ভালোমন্দ বিচার করা হয়, সেক্ষেত্রে ভুল হবে। কারণ শেষ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে আপনার দেহের অভ্যন্তরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। টিকার ডোজের কাজ হলো শুধু তাকে সহায়তা করা।