বিশ্বে শীর্ষ ধনীদের অর্থের পরিমাণ নিয়ম করে খেয়াল রাখেন অনেকে। টাকার হিসাবে কে কাকে ছাড়িয়ে গেল, সে বিষয়েও বিস্তর আগ্রহ রয়েছে সাধারণ মানুষের। কিন্তু এ বিশ্ব ধনীশ্রেণিও ঠিকমত পরিশোধ করছেন না আয়কর। শুধু ঠিকভাবে পরিশোধ করছেন না বললে ভুল হবে। নিয়নিত করফাঁকি দিচ্ছেন তারা। কর ফাঁকির এ তালিকায় আছেন অ্যামাজনের সিইও জেফ বেজোস, টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক ও মার্কিন ব্যবসায়ী মাইকেল ব্লুমবার্গের মত বিলিয়নিয়াররা।
প্রোপাবলিকা নামের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তির একটি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম জানায়, ২০০৭ ও ২০১১ এই দুই বছর জেফ বেজোস কোন ধরনের ফেডারেল আয়কর দেননি। ২০১৮ সালে ইলন মাস্কও একই কাজ করেছেন। এছাড়া সম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্লুমবার্গ এলপি’র প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল ব্লুমবার্গ ও প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগকারী কার্ল ইকাহন এবং জর্জ সরোস নামেমাত্র আয়কর দাখিল করেছেন। ব্লুমবার্গ এলপির আওতাধীন ব্লুমবার্গ নিউজের মালিকও এই মাইকেল ব্লুমবার্গ।
প্রোপাবলিকার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওয়ারেন বাফেটের মোট সম্পদ ২৪ দশমিক ৩ বিলিয়নের বেশিতে গিয়ে পৌঁছায়। কিন্তু বাফেট ওই সময়ের মধ্যে ২৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন আয়কর দাখিল করেছেন। সে হিসেবে তিনি কর দিয়েছেন তার সম্পদের মাত্র ০.১ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব রেকর্ড থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে প্রোপাবলিকা। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব কমিশনার চার্লস রেটিগ জানান,তার প্রতিষ্ঠানে এমন আরও কিছু চকমপ্রদ তথ্য আছে। তথ্যগুলো প্রকাশ করার আগে করফাঁকি দেয়া এসব বিলিয়নিয়ারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে প্রোপাবলিকা। কিন্তু কারো সাথেই যোগাযোগ করতে পারেনি তারা।
এদিকে আগামী ২০ জুলাই নিজের রকেট কোম্পানি ব্লু অরিজিনের প্রথম মানববাহী অভিযানে মহাশূন্যে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ৫৭ বছর বয়সী জেফ বেজোস। ব্লু অরিজিন জানায়, ওই ফ্লাইটে বেজোসের যাত্রাসঙ্গী হবেন তার ছোট ভাই মার্ক বেজোসও। জেফ বেজোসের সম্পদের পরিমাণ ১৮৫.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সব ঠিকঠাক থাকলে বেজোস হবেন নিজ খরচে তৈরি মহাকাশযানে চড়ে মহাশূন্যে যাওয়া প্রথম ব্যক্তি।
যে বছর ঠিকমত আয়কর প্রদান করেননি ইলন মাস্ক ঠিক সে বছরই ফেলো অব দি রয়্যাল সোসাইটি নির্বাচিত হন তিনি। একই বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে ফোর্বস সাময়িকীতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তির তালিকায় ২৫ তম স্থানে আসে তার নাম। ইলন মাস্কের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৫২.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অথচ নিয়মিত আয়কর দিতে অনীহা তার।