বিশ্বে নিজেদের বন্ধু বলয় বাড়ানো এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে- এমন দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের স্বার্থে দেশের ভাবমূর্তিকে আরও ভালবাসাপূর্ণ করতে চান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব বার্তাসংস্থা সিনহুয়া বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার বেইজিংয়ে কমিউনিস্ট পার্টির জ্যেষ্ঠ সদস্যদের এক বৈঠকে বক্তব্য দিয়েছেন জিনপিং। সেখানে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি আমাদের বন্ধু বলয় আরও বাড়ানো প্রয়োজন; আর এ জন্য আমাদের যেটি করতে হবে, তা হলো— বিশ্বের সামনে চীনের একটি অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য, ভালবাসাপূর্ণ এবং সম্মানজনক ভাবমূর্তি উপস্থাপন করা।
এমন এক সময়ে চীনের প্রেসিডেন্ট এই মন্তব্য করলেন, যখন বিভিন্ন ইস্যুতে বিশ্ব রাজনীতিতে সমালোচনার মধ্যে আছে দেশটি।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশ সবসময়েই বলে আসছেন, চীনের পররাষ্ট্রনীতি তার প্রতিবেশীসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি বৈরী ভাবাপন্ন এবং এই বৈরীতা দিনকে দিন বাড়ছে। জিনজিয়াং প্রদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন ও হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের দমন-পীড়ন এই সমালোচনাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলছে।
এছাড়া সার্স-কোভ-২ বা করোনাভাইরাস চীনের গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে এবং অসাবধানবশত তা ছড়িয়ে পড়েছে— যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগ বিশ্বে চীনের ভাবমূর্তির বেশ ক্ষতি করেছে; চীন অবশ্য বরাবরই পাল্টা অভিযোগ করে আসছে, যুক্তরাষ্ট্র করোনা মহামারিকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে।
বেইজিংয়ে সোমবারের বৈঠকে শি জিনপিং বলেন, ‘বিশ্বের সামনে চীনের গল্পকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরার সময় এসেছে। আন্তর্জাতিক জনমতকে জয় করতে চাইলে আমাদের নতুন বন্ধু তৈরি, ঐক্য ও বন্ধু বলয় বাড়ানো এখন জরুরি। এ ছাড়া আপাতত আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প পথ নেই।’
২০১২ সাল থেকে চীনের প্রেসিডেন্টের পদে থাকা চীন কমিউনিস্ট পার্টির এই শীর্ষ নেতা বৈঠকে আরও বলেন, ‘বেইজিং চীনের জনগণের জন্য সুখ ও সৌভাগ্য ছাড়া আর কিছু চায়নি। কিন্তু এখন বিশ্বাবাসীকে আমাদের জানানো প্রয়োজন যে চীন কারও প্রতি বৈরী মনোভাব পোষণ করে না।’
‘আমরা চাই, গোটা বিশ্ব চীনকে দেখুক এমন একটি দেশ হিসেবে যেটি মুক্ত ও আত্মবিশ্বাসী এবং একই সঙ্গে বিনয়ী ও সংযত।