চীনকে রুখতে ’সজারু কাঁটা’ নীতিতে তাইপে
আন্তর্জাতিক

চীনকে রুখতে ’সজারু কাঁটা’ নীতিতে তাইপে

চীন ও তাইওয়ান।

সিংহ বনের রাজা। পশুরাজ। ক্ষমতার বিচারে তার সঙ্গে যুদ্ধ দূরে থাক সামনে দাঁড়ানোই বোকামি। কিন্তু বনের রাজাও কখনো এড়িয়ে চলে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র সজারুকে। কারণ সজারুর কাঁটা গায়ে ফুটলে যে ঘা হয়, তা শুকাবার নয়। কাঁটার বিষে বনের রাজার মৃত্যুও হয় কখনো কখনো।

অসম যুদ্ধে ক্ষুদ্র শক্তি কীভাবে টিকে থাকবে কিংবা বিশাল শক্তিকে কীভাবে কুপোকাত করা যায়, সেই সূত্র ২০০৮ প্রথমবার সামনে আনেন মার্কিন নেভাল ওয়ার কলেজের অধ্যাপক উইলিয়াম এস মুরে। পরবর্তীকালে বিভিন্ন কায়দায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ধারণা করা হচ্ছে, এস মুরের এই সজারু পদ্ধতিই অনুসরণ করছে তাইওয়ান। অধ্যাপক মুরের তত্ত্ব অনুযায়ী, এই ধরনের যুদ্ধনীতিতে হামলা হলে ক্ষতির আশঙ্কা বড় শক্তিরই হয়। বিশেষজ্ঞদের দাবি, সেই কারণেই অপারেশন তাইওয়ানের নির্দেশ দিতে ভাবতে হচ্ছে ড্রাগনল্যান্ড চীনকে। আবার বিশাল বাহিনী থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধের অভিজ্ঞতা চীনের নেই বললেই চলে।

চীনকে ঠেকাতে গেরিলা প্রস্তুতি তাইওয়ানের : গত বৃহস্পতিবার থেকে তাইওয়ানকে ছয় দিক থেকে ঘিরে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে চীন। যার জেরে তাইওয়ানে বাড়তে শুরু করেছে চীনা হামলার আশঙ্কা। শেষ পর্যন্ত সত্যিই আক্রমণের নির্দেশ দিলে কীভাবে লাল বাহিনীকে ঠেকাবে দক্ষিণ-চীন সাগরের ছোট এই দ্বীপরাষ্ট্রটি?

এরই প্রস্তুতি নকশা হিসেবে সামনে এসেছে সজারুর কাঁটা যুদ্ধ নীতি। যেখানে বলা হয়েছে, সামরিক শক্তির বিচারে ধারে ও ভারে তাদের চেয়ে শত যোজন এগিয়ে থাকা চীনের সঙ্গে সামনা সামনি লড়াইয়ে যাবে না তাইওয়ান। বরং তাইপের লক্ষ্য হবে গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ চালিয়ে পিপলস লিবারেশন আর্মির ক্ষতিসাধন। যাতে তাইওয়ান দখলের ক্ষত গোটা চীনের অর্থ ব্যবস্থাকে নাড়িয়ে দেয়। যুদ্ধের খরচের বিরাট ও দীর্ঘমেয়াদি বোঝা বেইজিংয়ের ঘাড়ে চাপাতে চায় তাইপে। সজারু শিকারের পর ঠিক যেমন দশা হয় পায়ে বা শরীরে কাঁটা ফোটা যন্ত্রণাকাতর সিংহের!

বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই পদ্ধতিতে যুদ্ধ চালানোর জন্যই বড় অস্ত্র তৈরির দিকে মন দেয়নি তাইপে। দূরপাল্লার মিসাইল, বিরাট আকারের যুদ্ধবিমান বা নৌজাহাজের বদলে গত কয়েক বছরে তাইওয়ান গবেষণা চালিয়েছে শুধু মাইন নিয়ে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ও বিভিন্ন সূত্রের খবর, পুরো দ্বীপের সৈকত সংলগ্ন সমুদ্রে বারুদের সুড়ঙ্গ বানিয়েছেন তাইওয়ানের সেনারা। সেখানে বিছানো হয়েছে ওয়াটার মাইন। একইভাবে স্থলভাগে ল্যান্ড মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে মরণফাঁদ হিসেবে। তাইওয়ান দখল করতে হলে জলপথেই আসতে হবে চীনকে। সেক্ষেত্রে লাল জাহাজের বড় ক্ষতি হওয়া কিছুতেই আটকাতে পারবে না বেইজিং। সৈকতে লালবাহিনীর পা পড়লেও প্রাণ যাবে অনেকের। ইউক্রেন যুদ্ধে ঠিক যে পরিণতি হয়েছে রুশ পদাতিক সেনাবাহিনীর।

এছাড়াও সিংগার ও জ্যাভলিনের মতো মিসাইল এবং ড্রোন ব্যবহারে জোর দিচ্ছে তাইওয়ান। যার ব্যবহারে চীন হারাতে পারে অ্যাটাক হেলিকপ্টার, ট্যাংক বা জওয়ানে পূর্ণ সাঁজোয়া গাড়ি।

Source link

Related posts

বিশ্বজুড়ে করোনায় প্রাণহানি ৪৩ লাখ ছাড়াল 

News Desk

শপথ নিলেন শাহবাজের মন্ত্রিসভার সদস্যরা

News Desk

যুদ্ধক্ষেত্র থেকেই শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন ইউক্রেনীয় অধ্যাপক

News Desk

Leave a Comment