ছবিটির প্রধান উপজীব্য ভালোবাসা ও মমতা। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি জিনিস যা একজন মানুষ আরেকজনকে দিতে পারে।
এমনই একটি ছবি চলতি বছর বিশ্ব গণমাধ্যম ফটো প্রতিযোগিতা ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো’য় বর্ষসেরা পুরস্কার জিতে নিয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালে বৃদ্ধাশ্রমের এক প্রবীণ নারীকে পরম মমতায় বুকে টেনে নিয়েছেন এক নারী চিকিৎসাকর্মী। যা ‘করোনা আলিঙ্গন’র ছবি হিসাবে ইতোমধ্যে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি কেড়েছে। ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো ২০২১ ছিল এই ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতার ৬৪তম আয়োজন।
অংশ নেন চার হাজার ৩১৫ আলোকচিত্রী। প্রতিযোগিতায় জমা পড়ে তাদের তোলা ৭৪ হাজার ৪৭০টি ছবি। এতগুলো ছবির মধ্যে নিউজ, স্পোর্টস ও পরিবেশসহ মোট আটটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ছবি বাছাই করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম সেরা নির্বাচিত হয়েছে চলমান মহামারি সম্পর্কিত ‘করোনা আলিঙ্গন’ ছবিটি। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ড্যানিশ ফটোগ্রাফার ম্যাডস নিসেনের তোলা ছবিটি মূলত ব্রাজিলের সাও পাওলোর একটি বৃদ্ধাশ্রমের। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত মার্চ মাস থেকেই গোটা দেশের সব বৃদ্ধাশ্রমের দরজা বাইরের ভ্রমণকারীদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে বহু বয়োজ্যেষ্ঠ প্রায় পাঁচ মাস তাদের কোনো আত্মীয়-স্বজনের দেখা পাননি।
সেখানে তাদের দেখাশোনা করার জন্য নিয়োগকৃত কর্মীরাও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলেছেন। ফলে মানুষের সংস্পর্শও পাননি বৃদ্ধাশ্রমের এসব অসহায় মানুষ। অবশেষে বিশেষভাবে নির্মিত প্ল্যাস্টিকের একটি পোশাক যার হলুদ রঙের প্রান্ত অনেকটা প্রজাপতির আকার নিয়েছে, তার মধ্য দিয়ে ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা রোসা লুজিয়া লুনারদিকে আলিঙ্গন করেন বৃদ্ধাশ্রমের নার্স আদ্রিয়ানা সিলভা ডা কস্টা।
এই ছবির মধ্যে লুকায়িত গভীর আবেগকে মর্যাদা দিয়েই ‘প্রথম আলিঙ্গন’ শিরোনামের এই ছবিটিকে সেরা হিসাবে নির্বাচন করা হয়েছে। নিজের তোলা বিশ্বসেরা এই ছবি সম্পর্কে ফটোগ্রাফার নিসেন বলেন, ‘ছবিটির আসল বার্তাটা হচ্ছে সহমর্মিতা। ভালোবাসা ও মমতা।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আসলেই একটা কঠিন ও বিষণ্ন পরিস্থিতি চলছে। এমন ভয়াবহতা ও দুর্ভোগের মধ্যে এই ছবিটা মানবতার জয়গান গাইবে বলে আমার মনে হয়েছে।’
প্রতিযোগিতায় ফটোক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করা ছবিটিও করোনা সম্পর্কিত। ছবিটি ইন্দোনেশিয়ার।
তাতে দেখা যায়, গত বছরের ১৮ এপ্রিল দেশটির একটি হাসপাতালে পড়ে আছে প্লাস্টিকে শক্ত করে জড়ানো একটি লাশ। যার করোনা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছিল। যশুয়া ইরওয়ান্দি নামে এক ফটোগ্রাফার ছবিটি তুলেছিলেন।