তাড়াহুড়ো করে আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা সরিয়ে নিলে দেশটিতে বিশৃঙ্খলা বাড়বে। দেশটির পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে আরও ধীরগতিতে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ। বৃহস্পতিবার ত্রিপক্ষীয় একটি ভিডিও বৈঠকে এ আহ্বান জানান তারা। পরে এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, আফগাস্তিানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে দেশটির সব পক্ষকে আরও সংযত হতে হবে। তালেবান ও সরকার উভয় পক্ষকে সবধরনের হামলা বন্ধ করতে হবে। বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, কাবুলে কোন বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ তারা চান না। আফগানিস্তান হবে একটি সার্বভৌম, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ।
চলতি বছরের ১ মে থেকে আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত নিজেদের ৪৪ শতাংশ সেনা প্রত্যাহার করেছে দেশটি। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকি সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ১১ সেপ্টেম্বর হবে টুইন টাওয়ার হামলার ২০ বছর।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ারে হামলা চালায় জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা। সেই হামলায় প্রায় তিন হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। এরপরই আল কায়দার পৃষ্ঠপোষক তালেবানকে দমন করতে আফগানিস্তানে হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও সামরিক জোট ন্যাটো। ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর এটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ। অবশেষে এ যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছর আফগানিস্তান থেকে চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। তবে সেনা প্রত্যাহারের এ সময়সীমা আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এদিকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পর থেকেই নতুন শঙ্কা দেখা দিয়েছে আফগানিস্তানে। যুক্তরাষ্ট্রের পর দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে জার্মানি। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় আফগানিস্তানে নিজেদের দূতাবাস বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া তিন হাজারের বেশি আফগানকে যুক্তরাজ্যে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে লন্ডন।