সাবিহা নামের অর্থ দ্রুতগামীী অশ্ব। সাবিহার জন্ম ১৯১৩ সালের ২২ মার্চ। তুরস্কের উত্তরে বুশরা শহরে। তাঁর বাবা মুস্তাফা ইজ্জাত বে ছিলেন একজন সৈনিক। সাত বছর বয়সে বাবা ও বারোতে মা হারিয়ে হানিমকে হারান সাবিহা। তখন বিদেশিদের দখলে ছিলো তুরস্ক। কয়েকটি রক্তক্ষয়ী বড় যুদ্ধ দেখতে দেখতে তিনি বেড়ে উঠেন। অনাথ সাবিহা শিশুকালেই স্বপ্ন দেখেন লেখাপড়া করে অনেক বড় হবেন। কিন্তু বাবা-মা মারা যাওয়ায় সেই স্বপ্ন উবে যায়। তুরস্কের জাতিরপিতা ও প্রথম প্রেসিডেন্ট মুস্তাফা কামাল পাশা আতাতুর্ক একবার বুশরা সফরে যান।
বারো বছরের সাবিহা সাহস করে রাষ্ট্রপতির সামনে গিয়ে দাঁড়ান এবং বলিষ্ঠকণ্ঠে বলেন, ‘আমি লেখাপড়া করতে চাই।’ সাবিহার সাহস ও বড় হওয়ার স্বপ্নে মুগ্ধ হন প্রেসিডেন্ট। এবং তিনি সাবিহাকে দত্তক কন্যা হিসেবে গ্রহণ করেন। এরপর তিনি বড় হতে থাকেন প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে।
১৯৩৫ সালে তিনি বিমান চালনা প্রশিক্ষণ গ্রহণ শুরু করেন। তখন তার বয়স চব্বিশ। পরে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে তাঁকে পাঠানো হয় রাশিয়ায়। ১৯৩৭ সালের মার্চে কুর্দি বিদ্রোহ দমনে ডাক পড়ে সাবিহার। তিনি শত্রু শিবিরে সফলভাবে বোমা হামলা করে ফিরে আসেন। গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে সাবিহার খ্যাতি। ১৯৪০ সালে সাবিহা কামাল ইজিনারকে বিয়ে করেন। কিন্তু তাঁর দাম্পত্য স্থায়ী হয়েছিলো মাত্র তিন বছর।
তিনি তাঁর ক্যারিয়ারে ২২ ধরনের বিমান ৮ হাজার ঘণ্টা চালিয়েছেন। বোমা হামলার জন্য যুদ্ধবিমান চালিয়েছেন ৩২ ঘণ্টা। ফ্যালকন-২০০০ ছিলো তাঁর লাস্ট ফ্লাইট। তখন তাঁর বয়স ছিলো ৮৩ বছর। ২০০১ সালের ২২ মার্চ ৮৮ বছর বয়সে তিনি মারা যান। তাঁর স্মরণে তুরস্কে নির্মিত হয়েছে সাবিহা গোকেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি ইস্তাম্বুলের দ্বিতীয় বিমানবন্দর। সাবিহার পাইলট হওয়ার ৫০ বছর পর ১৯৯৩ সালে জেনি সেভিট।
সূত্র: উইকিপিডিয়া