Image default
বিনোদন

নিখোঁজের ৪ দিন পর নালায় মিলল গৃহবধূর লাশ

চট্টগ্রামের রাউজানে নিখোঁজের চার দিন পর নিজ বাড়ির পেছনের নালায় এক গৃহবধূর লাশ পাওয়া গেছে। রোকসানা আকতার (২৮) নামের ওই গৃহবধূ তিন সন্তানের জননী। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১১টায় রাউজান পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে। এর আগে সন্ধ্যায় লাশের সন্ধান পাওয়ার দাবি করেন গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ি লোকজন।

এই ঘটনাকে নিহত গৃহবধূর বাবার বাড়ির লোকজন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বাসিন্দারা হত্যাকাণ্ড বলে মনে করছেন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী মুহাম্মদ আজম ও তার মা নিহতের শ্বাশুড়ি রিজিয়া বেগমকে আটক করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আশরাফ খান মাতাব্বরের বাড়ীতে। রোকসানা একই এলাকার মুহাম্মদ আজমের স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোকসানা রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সৌদিয়া প্রজেক্ট এলাকার মোহাম্মদ মফিজের মেয়ে। ৮ বছর আগে তার বিয়ে হয়। মাহফুজ (৭), কায়েস (৫) এবং আট মাস বয়সী রমজান নামে তার তিনটি ছেলে রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য উদয় দত্ত অর্ক বলেন ‘বিকেল ৫টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশসহ ঘটনাস্থলে আসি। বাড়ির পেছনের বাথরুমের পাশে পানি নিস্কাশনের ড্রেনের মতো নালায় ওই গৃহবধূর লাশ পাওয়া যায়। রাত পৌনে ১১টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। ওই গৃহবধূ নিখোঁজ হলে তার স্বামী ও শ্বাশুড়ি আমাকে জানায় ২৮ নভেম্বর। আমি তাদের থানায় অভিযোগ দিতে বলেছিলাম। তারা জিডি করে। বৃহস্পতিবার আমি শহরে ছিলাম। বিকেলে তারা আমাকে ফোন করে জানায় ড্রেনে তার লাশ দেখেছে। ‘

নিহতের ছোট বোন তাহমিনা আকতার বলেন, ‘আমি শুক্রবার বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসি। এ সময় আমার বোন বলেছিলেন যে তার মামা শ্বশুড় ইছহাক, ননদ ফেরদৌসি আক্তার, ননদের স্বামী সোহেল প্রায়ই নির্যাতন করেন। তারা সম্পত্তি বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করতে চায়। আমি বোনকে সান্তনা দিয়ে পরের দিন শহরে ফিরে যাই। সোমবারে বোনের মোবাইলে বারবার ফোন দিয়ে সংযোগ না পেয়ে ননদের স্বামী সোহেলের নম্বরে ফোন দেই। তিনি বলেন, আমার বোন পালিয়েছে। তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ‘

তাহমিনা আরো বলেন, ‘পরের দিন মঙ্গলবার আমি বোনের বাড়িতে গেলে বোনের মামা শ্বশুড়সহ স্থানীয় চারজন ছেলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধর করেন। আমার বোন কোনো পরপুরুষের সঙ্গে পালিয়েছেন বলে নানান কটুকথা বলেন। আমাদের আটকে রাখেন। পরে স্থানীয় মেম্বার আমাদের উদ্ধার করলে আমি চলে যাই। পরের দিন আমার মামা সাদ্দাম হোসেন থানায় জিডি করেন। আজ পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি যে আমার বোনের লাশ পাওয়া গেছে। আমার বোনের স্বামী সহজ সরল। তেমন কোনো কাজ কর্ম করতে পারেন না। তাদের সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য আমার বোনকে তার মামা শ্বশুড়,  ননদ ও ননদের স্বামী মিলে হত্যা করেছে। ‘

অন্যদিকে নিহতের ননদ ফেরদৌসি আকতার বলেন, ‘গত রবিবার আমার ভাবী নিহত হয়েছেন বলে খবর পেয়ে শ্বশুড় বাড়ি থেকে এখানে আসি। আজ বিকেলে বাথরুমের গেলে পাশের নালা থেকে গন্ধ আসলে গিয়ে দেখি স্ল্যাবের নিচে নালায় আমার ভাবির লাশ। পরে মামাসহ অন্যদের মাধ্যমে মেম্বারকে ফোন দিলে তিনি পুলিশসহ এখানে আসেন। ‘

ঘটনাস্থলে আনোয়ারা পুলিশ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন, চুয়েট ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আরিফুর রহমানসহ রাউজান থানার পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিল।

ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, এটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে। গৃহবধূর স্বামী ও শ্বাশুড়িকে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। লাশ শুক্রবার ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

Related posts

সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ রূপে ধরা দিলেন দেব 

News Desk

পরীমণি বললেন, ‘সাকলায়েনের প্রতি নিঃসন্দেহে অন্যায় হয়েছে’

News Desk

মাতৃত্বকালীন ফটোশুটে মোহময়ী সোনম

News Desk

Leave a Comment