পরিচালকের দশ বছরের স্বপ্ন, ৪০০ কোটি রুপির লগ্নি, রণবীর কাপুরের ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ—সব কিছুই জুড়ে রয়েছে এই সিনেমাকে ঘিরে। অয়ন মুখার্জি পরিচালিত ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ মুক্তি পাবে আসছে শুক্রবার। অগ্রিম বুকিং গত সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে। বুকিং শুরু হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের তিনটি বড় মাল্টিপ্লেক্স চেইনে (পিভিআর, আইনক্স, এবং সিনেপলিস) ২৭ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। আপাতত শুধু থ্রি ডি শোয়ের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে ভরসা পাচ্ছেন হলমালিক এবং ডিস্ট্রিবিউটররা। এ বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি সিনেমাগুলোর মধ্যে ‘ভুলভুলাইয়া টু’ প্রথম দিনে ১৪ কোটির ব্যবসা করেছিল। ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ সেই অঙ্ক টপকে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে রামুজি ফিল্ম সিটিতে জুনিয়র এনটিআরের উপস্থিতিতে একটি বড়সড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। হাজার হাজার ভক্তও ভিড় করেছিলেন। শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়। গণেশ বিসর্জনের কারণে পুলিশের অনুমতি পাওয়া যাচ্ছিল না। এর পরিবর্তে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন করণ জোহর, রণবীর কাপুর, আলিয়া ভাট, নাগার্জুন, মৌনী রায় এবং এস এস রাজামৌলী।
প্রচারের অংশ বাদ দিয়েও এ সিনেমা বানাতেই খরচ হয়েছে ৪১০ কোটি রুপি। এত টাকা দিয়ে এর আগে ভারতীয় সিনেমা তৈরি হয়নি। তবে সাম্প্রতিক বয়কট ট্রেন্ডে নাকি রীতিমতো চিন্তায় রয়েছে ছবির প্রযোজকেরা। পরিচালক অয়নও বেজায় চিন্তিত। এত পরিশ্রম, এত রাত জাগা কি বৃথা যাবে? এ প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তাঁদের। এরই মধ্যে স্টেকহোল্ডাররা কিছুটা হলেও ছবি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। তাঁদের মতে, ‘শুধু মানুষের মনেই না বক্স অফিসেও এই ছবি জায়গা করে নিতে বাধ্য’। হিন্দুপুরাণ ও দেবদেবতার সঙ্গে আধুনিকতার যোগসূত্র নিয়েই এই ছবির প্রথম পর্ব তৈরি করেছেন অয়ন। হলিউডে মার্ভেল ও ডিসি সিরিজ সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। তবে বলিউডে সুপারহিরো নিয়ে ছবি তৈরি হলেও এমনটা দেখা যায়নি। প্রাচীনযুগ থেকে নানা অস্ত্র ও তা দিয়ে সংহারের গল্প অনেকেরই জানা। এবার সেই অস্ত্র নিয়েই এক ‘অস্ত্রাভার্স’ (অস্ত্র ও ইউনিভার্স) গড়ে তোলা হয়েছে।
মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন রণবীর-আলিয়া। রয়েছেন অমিতাভ বচ্চন ও দক্ষিণী সুপারস্টার নাগার্জুনাও। এখানেই কি শেষ? বিশেষ চরিত্রে দেখা যাবে শাহরুখ খানকে। এই সব প্রথম সারির অভিনেতাদের মধ্যেই আবার জায়গা করে নিয়েছে মৌনী রায়ও। আলিয়া ভাট অন্তঃসত্ত্বা। তবু এই অবস্থাতেই ছবির প্রচারে প্রায় প্রতিদিনই বের হতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। কখনও বেবিবাম্প নিয়েই আইআইটি, মুম্বাইয়ে গিয়ে গান গেয়ে আসেছেন আবার কখনও বা প্রচারের কারণে পৌঁছে যাচ্ছেন সংবাদমাধ্যমের ফ্লোরে। অনেক টাকা অনেক পরিশ্রম যাতে বিফলে না যায় সেই চেষ্টার কোনো কমতি রাখছেন না। আপাতত অপেক্ষা ৯ সেপ্টেম্বরের। তারপরেই মুক্তি পাবে এই সিনেমা।