ক্ষমা চেয়ে রূপঙ্কর বললেন, ‘এইরকম বিভীষিকার মুখোমুখি হতে হবে ভাবিনি’
বিনোদন

ক্ষমা চেয়ে রূপঙ্কর বললেন, ‘এইরকম বিভীষিকার মুখোমুখি হতে হবে ভাবিনি’

ভারতীয় সংগীতশিল্পী কেকের কলকাতায় কনসার্ট উপলক্ষে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন কলকাতার গায়ক রূপঙ্কর বাগচী। হিন্দি গান নিয়ে বাঙালি শ্রোতাদের ‘মাতামাতি’র সমালোচনা করেছিলেন তিনি ওই ভিডিওতে। সঙ্গে কেকের নাম নিয়ে বেশকিছু ‘আপত্তিকর’ কথাও বলেন কেকে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার কিছুটা পরে ভিডিওটি পোস্ট করেন রূপঙ্কর।

ওই সন্ধ্যায় কলকাতার নজরুল মঞ্চে গান গাইতে আসেন কেকে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে শো শেষ করে ফিরে যান হোটেল। এরপর হৃদ্‌রোগ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন কেকে।

কেকের মৃত্যুর পর তীব্র কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন রূপঙ্কর বাগচী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে লেখালেখি হচ্ছে। হচ্ছে সমালোচনা। অবশেষে আজ (শুক্রবার) রূপঙ্কর বাগচী বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। সংবাদমাধ্যমে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন রূপঙ্কর।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রূপঙ্কর যা লিখেছেন, তা হুবহু প্রকাশ করা হলো—
প্রথমেই প্রয়াত কেকে-র পরিবারের কাছে নিঃশর্ত দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার যে ভিডিওটি গত কদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ও তার বাইরে এত বিরামহীন উত্তেজনার উপাদান হয়েছে, এখানে পৌঁছুবার আগে সেটি আমি ফেসবুক থেকে ডিলিট করলাম। পরলোকগত গায়কের পরিবারের কারোর সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। কিন্তু আপনাদের মাধ্যমে মুম্বাইবাসী… তাঁদের আবার জানাচ্ছি যে, আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কেকে আজ যেখানেই থাকুন, ঈশ্বর যেন ওঁকে শান্তিতে রাখেন।

আমার সংগীত জীবনে এইরকম বিভীষিকার মুখোমুখি হতে হবে ভাবিনি। যেখানে ওড়িশায় বসে করা একটা ভিডিও পোস্ট এমন পরিস্থিতি তৈরি করবে যা আমার গোটা পরিবারকে ঠেলে দেবে চরম আতঙ্ক, দুৰ্ভাবনা এবং মানসিক নিপীড়নের মধ্যে। যেখানে আমার বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা রক্ষায় পাহারা দেবে টালা থানার পুলিশ। নিয়ত হুমকি এসেই যাবে আমার স্ত্রীর ফোনে। গায়ক হিসেবে দেশে-বিদেশে এত লক্ষ লক্ষ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তাঁদের আবেগ অনুভব করেছি এত বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে। স্বীকৃতি পেয়েছি নানান স্তরে। মুহূর্তের অসতর্কতা যে এমন গনগনে এবং মারমুখী আবেগ বয়ে আনবে কে জানতো? এত ঘৃণা! এত আক্রোশ! এত বিরুদ্ধতা কিন্তু অনেকটাই তৈরি হল আমার বক্তব্য আমি ঠিকমতো গুছিয়ে বলতে না পারায়।

প্রয়াত কেকে সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত কোনো বিদ্বেষ নেই। থাকার প্রশ্নও ওঠে না। আমি শুধু ওঁর কনসার্ট নিয়ে তৈরি হওয়া উন্মাদনা লক্ষ্য করে বলতে চেয়েছিলাম, বাঙালি গায়কদের জন্যও আপনারা একইরকম দরদ দেখান। ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বরের আশীর্বাদে এবং আপনাদের শুভেচ্ছায় গায়ক হিসেবে আমার ব্যক্তিগত কোনো হতাশা নেই। কিন্তু বাঙালি গায়ক হিসেবে সমষ্টিগত বিপন্নতা রয়েছে। ইদানীং আরো বেশি করে বারবার মনে হয়, দক্ষিণ বা পশ্চিম ভারতে যেভাবে তারা শিল্পীদের স্বার্থরক্ষার্থে ঝাঁপিয়ে পড়ে, আমরা যেন সেটা করতে দ্বিধাগ্রস্ত। শিল্প-সাহিত্য-সংগীত সবেতেই প্রাদেশিক পারফরমার যেন কঠিন খাদের ধারে এক অস্তিত্বের সংকটে দাঁড়িয়ে। তাই আমি একার কথা বলতে চাইনি। একটা সমষ্টির কথা বলতে চেয়েছিলাম।

একই সঙ্গে তাই আরও কিছু সহযোদ্ধার নাম করেছিলাম, যাদের ট্যালেন্ট আমার মতে জাতীয় পর্যায়ের। পরে মনে হয়েছে নামগুলো বলার আগে জিজ্ঞেস করে নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আবার বলি, এককভাবে ইস্যুটা দেখিনি। কেকে-র মতো ভারতবিখ্যাত পারফরমারের নামটা নিছক প্রতীক ছিল। নিছক উপলক্ষ্য। লক্ষ্য কখনো তিনি ছিলেন না। থাকার প্রশ্নও নেই।

কে জানত, চরম দুর্ভাগ্য কেকে-র জন্য এইভাবে ওঁৎ পেতে রয়েছে। একজন প্রথিতযশা শিল্পী কলকাতার মঞ্চে গাইতে এসে এভাবে প্রাণ হারালেন সেটা খুব হৃদয় বিদারক। আপনাদের কাছে মার্জনা চাইছি।

Source link

Related posts

ইফতেখার চৌধুরীর রক্ষায় রাজ রিপা

News Desk

আবীর-শুভশ্রীর সিনেমায় গাইলেন মিনার রহমান

News Desk

ওয়েব সিরিজ বন্ধে আইনি পথে সালমান শাহের পরিবার

News Desk

Leave a Comment