Image default
বাংলাদেশ

শিল্পকারখানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে আজ

করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে লকডাউন শিথিল করে ঈদে মানুষকে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। তবে ঈদের পরের দিন থেকেই টানা ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ওই কঠোর লকডাউনে রপ্তানিমুখী গার্মেন্টসসহ সব শিল্পকারখানাও বন্ধ থাকবে। চলতি বছরে আগের লকডাউনগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্পকারখানা খোলা রাখা হয়েছিল। তবে মানুষ বাঁচাতে ঈদের পর লকডাউনে সব কিছুই বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু গার্মেন্টস মালিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগের মতোই কারখানা খোলা রাখতে মরিয়া চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে আজ সোমবার সিদ্ধান্ত জানাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

প্রধানমন্ত্রীকে গত বৃহস্পতিবার চিঠি দিয়ে মালিকরা কারখানা খোলা রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি সরকার। ফলে গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিকরা উদ্বেগ ও দোলাচলে দিনাতিপাত করছেন। কারণ সরকারের সিদ্ধান্ত পেলেই তারা শ্রমিকদের ছুটি দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারণ করবেন। লকডাউনে কারখানা বন্ধ থাকলে শ্রমিকরা সে প্রস্তুতি নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। আজ সোমবার কারখানা খোলা রাখা কিংবা বন্ধ রাখার বিষয়ে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ সূত্রে জানা গেছে।

গার্মেন্টস মালিকরা বলছেন, কারখানা বন্ধ রাখার খবরে ইতোমধ্যে রপ্তানি আদেশ বাতিল এবং স্থগিত হয়ে হচ্ছে। ক্রেতারাও বারবার ফোনে এবং ইমেইলে এ বিষয়ে জানতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। কারখানা বন্ধ রাখা হলে রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়ে মালিকরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। সুতরাং সরকারের উচিত দেশের অর্থনীতির কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গার্মেন্টস মালিকদের আবেদনের বিষয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে গত শনিবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা থাকলেও সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আজ সোমবারের মধ্যে শিল্পকারখানার মালিকদের আবেদনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

এদিকে সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে চেয়ে থাকা গার্মেন্টস মালিকরা যেমন দুশ্চিন্তায় আছেন, তেমনি শ্রমিকরা ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন। বেশ কয়েকজন মালিক-শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে এমনটি জানা গেছে।

ঈদের পর ২৩ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউনে শিল্পকারখানা বন্ধ থাকার পর ১ আগস্ট থেকে খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর একজন সাবেক নেতা। তিনি বলেন, ১ আগস্ট থেকে কারখানা খুলে দেওয়ার বিষয়ে তারা আভাস পেয়েছেন। যদিও কঠোর লকডাউন চলবে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত। আর কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতের পাঁচ সংগঠনের নেতারা ঈদের পর লকডাউনে কারখানা খোলা রাখার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তারা বলেছেন, টানা ১৪ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে রপ্তানি আদেশ হারাতে হবে। ইউরোপ ও আমেরিকায় পরিস্থিতি প্রায় করোনার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। সব মার্কেট, দোকানপাট ও ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর খুলে দেওয়া হয়েছে। পোশাকের এখন ব্যাপক চাহিদা। এ অবস্থায় কারখানা বন্ধ থাকলে ক্রেতারা প্রতিযোগী অন্য দেশে চলে যাবে। দেশ অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এদিকে গত শনিবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ১৪ দিনের লকডাউন হবে আরও কঠোর। বন্ধ থাকবে গার্মেন্টসসহ সব শিল্প প্রতিষ্ঠান। সরকার এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মো. রেজাউল ইসলাম (মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা) বলেন, শিল্পকারখানা খোলা রাখার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদের কোনো সিদ্ধান্ত আমার কাছে আসেনি। কবে সিদ্ধান্ত হবে তাও জানি না। অপেক্ষা করতে হবে।

বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, রপ্তানি আদেশ বাতিল এবং স্থগিত না করার জন্য ক্রেতাদের কাছে শনিবার পর্যন্ত সময় চেয়েছিলেন সংগঠনের নেতারা। গতকাল রবিবার পর্যন্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় তাদের কাছে আবার সময় চাইতে হবে। প্রধানমন্ত্রী লকডাউনেও কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দেবেন বলে তারা আশা করছেন।

Related posts

দৌলতদিয়া যৌনপল্লি ছাড়তে চান ৩৫০ নারী

News Desk

জলবায়ু মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাবনা

News Desk

প্রাণিসম্পদ প্রদর্শণী অনুষ্ঠিত,সুন্দরগঞ্জ

News Desk

Leave a Comment