রংপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন মালামাল কেনাকাটায় দুর্নীতি ও টেন্ডার ছাড়া কাজ করানো এবং মেয়রের ক্ষমতা অপব্যবহারের ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ডেকেছেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার বিকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মানষী বিশ্বাস।
রংপুরে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্পে বড় জালিয়াতি
এদিকে, মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি জানাজানি হলে নগরে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। বৃহস্পতিবার নগরজুড়ে বিষয়টি ছিল টক অব দ্য টাউন।
দুদক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন মালামাল কেনাকাটায় দুর্নীতি ও টেন্ডার ছাড়া কাজ করানো এবং মেয়রের ক্ষমতা অপব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এসব অভিযোগ তদন্তের জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মানষী বিশ্বাসকে কয়েক মাস আগে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তদন্তকাজে ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করায় দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি।
অবশেষে দুদকের উপ-পরিচালক মানষী বিশ্বাস চিঠি দিয়ে মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে বুধবার প্রধান কার্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডাকেন। কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করায় বিষয়টি দেরিতে জানাজানি হয়। এমনকি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টিও গোপন রাখা হয়।
দুদকের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, সিটি মেয়র মোস্তফা দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বুধবার দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করেছেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তবে এ বিষয়ে কিছুই বলতে চাননি মানষী বিশ্বাস।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের উপ-পরিচালক মানষী বিশ্বাস বৃহস্পতিবার বিকালে মোবাইল ফোনে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে বুধবার প্রধান কার্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছে। তিনি এখানে এসে বক্তব্য দিয়েছেন। কি কি বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান মানষী বিশ্বাস।
সিটি করপোরেশনের জন্য মেয়রের অ্যাম্বুলেন্স কেনায় অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মানষী বিশ্বাস বলেন, সিটি মেয়র বলেছেন একটি বেসরকারি ব্যাংক অ্যাম্বুলেন্সগুলো সিটি করপোরেশনকে দিয়েছে। এখানে লেনদেনের বিষয় ছিল না বলে উল্লেখ করেন মেয়র।
আর কি কি বিষয়ে মেয়রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে জানতে চাইলে মানষী বিশ্বাস বলেন, এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে না। উল্টো এই প্রতিনিধির কাছে মানষী বিশ্বাস জানতে চান, সিটি করপোরেশনের কাজে অনিয়মের কি কি তথ্য আছে আপনার কাছে?
এরপর মানষী বিশ্বাস বলেন, আমরা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবো। তার আগে সাংবাদিকদের কোনও তথ্য দেওয়া যাবে না। অনুসন্ধানকারী এই কর্মকর্তার কথাবার্তায় লক্ষ্য করা গেছে, বক্তব্যের প্রথম থেকে পুরো বিষয়টিকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন তিনি।
এসব ব্যাপারে জানতে রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে একাধিকবার কল দিলেও ধরেননি। পরে এসএমএস দিয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে মোবাইল বন্ধ করে দেন। এজন্য তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।