Image default
বাংলাদেশ

বিদ্যালয় নয় যেন গরু-ছাগল ও ভেড়ার চারণভূমি!

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ভবন খালি পড়ে আছে। চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদানের পরিবেশ। বরগুনার বেতাগীতে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিণত হয়েছে গো-শালায়। ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা যায়, বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক গত ১৭ মার্চ থেকে বিদ্যালয়, মাদরাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রয়েছে।

সদ্য সরকার ঘোষিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক এক প্রজ্ঞাপনে জানা যায়, আগামী ১৩ জুন যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হারে (আক্রান্তের হার ৫ শতাংশের নিচে) থাকে তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। এমন প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে  বরগুনার বেতাগী উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজ ও মাধ্যমিক সমমান পর্যায়ের বেশ কয়েকটি মাদরাসা ঘুরে দেখা হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় অনেক বিদ্যালয় ভবনের কক্ষ গোয়াল ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ঝিলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
ঝিলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা

উপজেলার ৯৯ নম্বর ঝিলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি কক্ষ গরুর ঘর করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। প্রতিষ্ঠানের চারদিক ঘুরে দেখা যায়, ঝোপঝাড় আর ময়লা আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়ে রয়েছে। প্রতিটি কক্ষই গরু, ছাগল ও ভেড়ার দখলে। শ্রেণিকক্ষসমূহে ৩-৫টি করে গরু বাঁধা রয়েছে। ছাদের ওপরে চলে তাস খেলার আড্ডা। বিড়ি সিগারেটের ময়লা ও দুর্গন্ধে যে কেউ ওই পরিবেশে হঠাৎ গেলে আতঁকে উঠবে। উপজেলার একাধিক বিদ্যালয় পশুর চারণভূমি ও নোংরা পরিবেশ দেখা গেছে।

এমন পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঝিলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সারমিন জাহান বলেন, ‘করোনার পর থেকে বিদ্যালয়ের খোঁজখবর তেমন নেয়া হয়নি। আর কিছুদিন আগে বন্যার কারণে গরু ছাগল রেখেছিল আমি বাঁধা দিয়েছি তবে তারা এলাকার প্রভাবশালী ও প্রতিষ্ঠানের জমিদাতা হওয়ার কারণে কাউকে পরোয়া করে না।’

বিদ্যালয় নয় যেন গরু-ছাগল ও ভেড়ার চারণভূমি!তবে নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ববজায় রেখে চলার শর্তে শ্রেণি কক্ষে পাঠে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বেতাগী উপজেলার ১২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৩ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ইফতেদায়ী, দাখিল, আলিম, ফাজিল পর্যায় সব নিয়ে ৫৮ টি মাদরাসা এবং ৭ টি কলেজ। যার মধ্যে অধিকাংশ বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিবেশ নোংরা আর দুর্গন্ধ।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুর রহমান বলেন,’বেশ কিছুদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ ঢিলেঢালা হয়েছে। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, ‘ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তারা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করবেন এবং তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Related posts

১৭ বছরেও ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেনি সিডরবিধ্বস্ত সাউথখালী

News Desk

ভিডিওর পর ছাড়ার হুমকি, হাতিয়ে নিতো মোটা অঙ্কের টাকা

News Desk

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মা আর নেই

News Desk

Leave a Comment