বর্ষবরণকে ঘিরে এখন বর্ণিল সাজে সেজেছে পাহাড়ি জনপদ বান্দরবান। পাহাড়ের তিন সম্প্রদায়ের বড় আয়োজনগুলোর একটি ‘সাংগ্রাই’। সেই উৎসবের আনন্দ এখন বান্দরবান জেলাজুড়ে। ১২টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের মাঝে চলছে নানান আয়োজন। এর মধ্যে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব শুরু হয়েছে আজ শনিবার (১৩ এপ্রিল)।
এ উপলক্ষে সকালে বান্দরবান শহরের ঐতিহ্যবাহী রাজারমাঠ এলাকা থেকে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গলশোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশ নেন মারমা, চাকমা, ম্রো, ত্রিপুরাসহ ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাশাপাশি স্থানীয় বাঙালিরাও।
শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন বান্দরবানের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং। এ সময় তিনি সবাইকে বাংলা নববর্ষ ও সাংগ্রাই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘বান্দরবানে সম্প্রীতি, বন্ধুত্ব সবকিছুই আছে। তাই “পরিবেশ”-এর প্রশ্ন তোলার কোনও প্রয়োজন নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সু-নেতৃত্বের কারণেই আজ পার্বত্য অঞ্চলে সুখ, সমৃদ্ধি, শান্তি বজায় রয়েছে। আগামীতে সব দল-মতের মানুষ শান্তির কারণে আরও এগিয়ে যাবে।’
শোভাযাত্রার পরে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে বয়োজ্যেষ্ঠ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। বয়স্ক পূজার মধ্য দিয়ে সমাজের প্রবীণ ব্যক্তিদের সম্মান জানানো হয়।
রবিবার (১৪ এপ্রিল) বিকালে সাঙ্গু নদীর তীরে বৌদ্ধ মূর্তি স্নান এবং সোমবার ও মঙ্গলবার স্থানীয় রাজার মাঠে সাংগ্রাইয়ের অন্যতম আকর্ষণ ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা পানি খেলা উৎসবে হাজারও মানুষের সমাগম ঘটবে। পারস্পরিক মৈত্রীর বন্ধন অটুট রাখা এবং পুরনো বছরের গ্লানি মুছে ফেলাই হচ্ছে এ জলকেলির মূল উদ্দেশ্য।
নানা আয়োজনে চলবে মারমা সম্প্রদায়ের এই সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন। মঙ্গলবার (১৬ এপিল) সন্ধ্যায় বিহারে বিহারে সমবেত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী চার দিনের এই সাংগ্রাই উৎসবের।