Image default
বাংলাদেশ

নতুন ড্যাপ নিয়ে যে কারণে আমাদের ভয়

গত ২৩ আগস্ট ড্যাপ বা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ২০২২-২০৩৫ গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথম থেকেই বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষের সঙ্গে স্থপতিরাও ড্যাপের দুর্বল দিকগুলো নিয়ে কথা বলে আসছিলেন। স্থাপত্য পেশাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য হলো বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার অসংগতিগুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করে সেসব বিবেচনার মাধ্যমে পরিকল্পনাটির সামগ্রিক পরিশীলন ও পরিমার্জন।

দেশের স্থপতিরা এবং ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট (বাস্থই) শুধু ভবন ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালার বিষয়ে নয়, বরং কৃষিজমি, জলাভূমি, প্লাবনভূমি, বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল, ভূমির সামগ্রিক শ্রেণিবিন্যাস, উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়েও আলোকপাত করে আসছে।

ড্যাপ প্রতিবেদনে বহুবার ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮-এর বিভিন্ন বিধির অযৌক্তিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বিধিমালাকে দায়ী করা হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবং বিধিগুলোর সংশোধনও প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ কথা জেনে রাখা ভালো যে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা রাজউকেরই বিধিমালা, যা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত ইমারত নির্মাণ আইন ১৯৫২ বা বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট ১৯৫২ (১৯৫৩ সাল থেকে কার্যকর বলে একে বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট ১৯৫৩ ও বলা হয়ে থাকে)-এর অধীন বিধিমালা। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ বিধিমালা, যা বিএনবিসি বা বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড যথাযথভাবে পালন করেই প্রণীত হয়েছে।

ইমারত নির্মাণ বিধিমালা প্রণয়নের পর থেকে ধীরে ধীরে ঢাকায় স্থাপনার গঠনে পরিবর্তন আসতে থাকে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা করার একটা মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল নির্মিত দালান বা ভবনের সর্বোচ্চ আচ্ছাদিত স্থান কমানো, যা ৫ কাঠা বা ১০ কাঠার প্লটের পুরোটা জুড়ে তৈরি করা স্থাপনাগুলোর কারণে বেড়ে যাচ্ছিল। বিধিমালায় স্পষ্টত উল্লেখ আছে, আবশ্যিক উন্মুক্ত স্থানের ৫০ ভাগ মাটি রাখতে হবে। এর কারণ হলো ভূগর্ভে বৃষ্টির পানির প্রবেশ, যা ভূগর্ভস্থ পানির ভারসাম্য বজায় রাখবে। রাজউক কর্তৃক প্রণীত মহাপরিকল্পনায় কী কারণে বারবার সেই একই সংস্থার বিধিমালাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে, তা ঠিক বোধগম্য নয়।

ড্যাপের প্রস্তাবে পুরো মিরপুর ১০ ও ১১–তে ২.৩, বসুন্ধরায় ৪.১, ধানমন্ডিতে ৫.১, বাড্ডার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২.৪, ৩৮ নম্বরে ১.৯ এবং কড়াইল এলাকায় ১.৩ ফ্লোর এরিয়া রেশিও দেওয়া হয়েছে। তাহলে কোথায় অভিন্নতা দেখা যাচ্ছে? তবে অসাম্য সুস্পষ্ট। মিরপুর ১০ ও ১১ বর্ধনশীল এলাকা, বাড্ডা এলাকাও গুলশানের খুব কাছেই। জমির দামও সেখানে অনেক বেশি। তাহলে কোন যুক্তিতে গুলশান-বনানীতে ৫-এর ওপর ফ্লোর এরিয়া রেশিও নির্ধারণ করে বাড্ডার মতো জায়গায় ২.৩ দেওয়া হচ্ছে। এ অসাম্য জমিমালিকেরা মানবেন কেন?

Related posts

রামপালের কয়লা নিয়ে মোংলায় ভিড়েছে জাহাজ 

News Desk

৭০ গাছে এক হাজার ৪০০ কেজি কমলা

News Desk

মরণোত্তর বীমার টাকা পাচ্ছেন চট্টগ্রামের ১২ পোশাক শ্রমিক

News Desk

Leave a Comment