Image default
বাংলাদেশ

দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল ওবায়দুলের, এলো মৃত্যুর খবর

পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে ধারদেনা করে পাঁচ বছর আগে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন ওবায়দুল হক (৩৪)। ঋণ পরিশোধ না হওয়ায় এবং পরিবারের কথা ভেবে একবারের জন্যও দেশে আসেননি। চলতি বছর দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল। অবশেষে এলো মৃত্যুর খবর। এখন তার লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা। 

ওবায়দুল হক নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে। সাত ভাই, চার বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। ২০১৯ সালে সৌদি গিয়ে একটি কোম্পানিতে কাজ নেন। কিছুদিন পর সেখানের কাজ ছেড়ে সৌদির আল আহসা শহরের হুফুফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি এলাকায় সোফা কারখানায় চাকরি নেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে তার মৃত্যু হয়েছে। তার সঙ্গে আরও আট বাংলাদেশি মারা গেছেন। এখন ওবায়দুলের মৃত্যুতে আহাজারি করছেন স্বজনরা। 

শনিবার (১৫ জুলাই) বিকালে ওবায়দুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, কাঁদছেন মা রাহেলা বেগম ও ছোট ভাই মজনু। স্বজনরা তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মজনু বলেন, ‘এ বছর দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল ভাইয়ের। গত কয়েক বছর বিদেশে কাজ করে দেনা পরিশোধ করছিলেন। এখনও দেনা পরিশোধ হয়নি। শনিবার সকালে সৌদিতে কর্মরত মামাতো ভাই ইয়াদুল ফোন করে জানান, আগুনে পুড়ে ওবায়দুল মারা গেছে। তার মৃত্যুতে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’

কাঁদতে কাঁদতে মা রাহেলা বেগম বলেন, ‘শুক্রবার জুমার নামাজে যাওয়ার আগে ভিডিও কলে ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছিল। দুপুরে কী রান্না করেছি, তা জানতে চেয়েছিল। বলেছিল, ভালো আছে। এভাবে ছেলেটা মারা যাবে কখনও ভাবিনি। এমন জানলে বিদেশে পাঠাতাম না। এখনও মানুষের দেনা পরিশোধ হয়নি। তার আগেই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলো। কীভাবে মানুষের দেনা পরিশোধ করবো, তা নিয়ে এখন চিন্তিত।’ 

ওবায়দুলের ফুফাতো ভাই খাজুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, ‘২০১৯ সালে সৌদি গিয়েছিল ওবায়দুল। সর্বশেষ তিন দিন আগে তার সঙ্গে কথা হয়েছিল। লাশ দেশে আনার চেষ্টা চলছে।’

কাঁদছেন ওবায়দুল হকের স্বজনরা

নলডঙ্গা থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, ‘পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তার লাশ দেশে এনে দাফনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লাশ দেশে আনার বিষয়ে কথাবার্তা চলছে।’

নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজিনা আক্তার বলেন, ‘পরিবারের আবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। লাশ দেশে আনার জন্য যে ধরনের সহযোগিতা লাগবে, উপজেলা প্রশাসন থেকে করা হবে।’

Source link

Related posts

বছরের পর বছর ভাঙা ঘরে বসবাস ৩০ পরিবারের

News Desk

একদিনে সর্বোচ্চ ৮৩৬৪ রোগী শনাক্তের রেকর্ড

News Desk

রাত ৮টার মধ্যে দক্ষিণের দোকানপাট বন্ধ ,তাপস

News Desk

Leave a Comment