দিন-দুপুরে ২৩ জেলের ভিজিএফ’র চাল লুটপাট ও আত্মসাত ঘটনা ধামাচাপা দিতে গত দু’দিন ধরে পটুয়াখালীর দশমিনায় ইউপি চেয়ারম্যানের দৌড়ঝাপ। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ দুলাল হাওলাদার জানায়, উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে রবিবার দুপুর ২টায় ৩নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল ফরাজী জেলে নামের ভিজিএফ চাল দাবী করে ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম আসাদুল হক নাসির সিকদারের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরে। এ সময় উপস্থিত ১০-১৫ নেতাকর্মী প্রতি জেলেকে ১০ কেজি চাল কম দেয়ার প্রতিবাদ করে হট্টোগোল করে ৩০-৩৫ বস্তা চাল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ইউপি সচিব প্রকাশ চন্দ্র রায় বলেন, ভিজিএফ চাল লুটপাট ঘটনায় ওইদিন ইউপি চেয়ারম্যান জরুরী সভা করেছে। ৩নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল ফরাজীসহ ১২-১৪ জনে মিলে ৩৬ বস্তা চাল লুটপাট করেছে বলে সভার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই সভার প্রতিবেদনে ইউপির ৯ সাধারণ সদস্য, ৩ সংরক্ষিত সদস্য ও ইউপি সচিব স্বাক্ষর করলেও এ খবর লেখা পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যান স্বাক্ষর করেননি বা প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ইউনিয়ন মৎস্য সম্প্রসারণকর্মী রিয়াজ মাহমুদ জানায়, ২৩০ জেলের জন্য ৩৬৮ বস্তা চাল দরকার হলেও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিতরণের জন্য ৩০০ বস্তা চাল এনেছে। ওই চালের মধ্য থেকে ৮ বস্তা চাল লুট করে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাশালীরা।
ইউপি সভার প্রতিবেদনে অভিযুক্ত বাবুল ফরাজীর দাবী, আমার সাথে চেয়ারম্যানের বাকবিতন্ডা চলাকালীন স্থানীয় সুমন হাওলাদার, বশির হাওলাদার, জসিম খলিফা, আফজাল হাওলাদার, ইউসুফ মোল্লা, ইউসুফ হাজি, ইউনুচ হাওলাদার ও হোসেন প্যাদা ৮ বস্তা চাল লুট করে নিয়ে যায়। চেয়ারম্যান গোডাউন থেকে চাল ছাড় করার পরই কমপক্ষে ৫০ বস্তা চাল কালোবাজারে বিক্রি করে দিয়েছে। রণগোপালদী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সাধারণ সদস্য মো: বাচ্চু মীর বলেন, ২০৭ জেলের মধ্যে ৭০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। ওই দিন ২৩ জেলেকে কোন চাল দেয়া হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান ৩ দশমিক ৪ টন চাল আত্মসাৎ করেছে ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা ১ দশমিক ৮ টন চাল লুটপাট করেছে। এছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যান ঝামেলা ম্যানেজ করার জন্য ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আব্দুল আজীজকে ৫ বস্তা (২৫০ কেজি) চাল উপহার হিসেবে দিয়েছে। চাল লুটপাট ঘটনা ও নিজে চাল আত্মসাতের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম আসাদুল হক নাসির সিকদার বলেন, বাবুল ফরাজী ৫টি জেলে নামের চাল ৮ বস্তা ছিনিয়ে নেবার চেষ্টাকালে উদ্ধার করে জেলেদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। জরুরী সভায় ঘর্ণিঝড় ইয়াস বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে, জেলে চালের ঘটনা নিয়ে কোন কথা হয়নি।
সূত্র :বরিশাল বাণী