Image default
বাংলাদেশ

দিনাজপুরে এবার বোরো ধান চাষে কৃষকের মুখে হাসি

বাংলাদেশ কৃষি ভিত্তিক দেশ। ৮০% লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল। দেশের সব বিভাগ থেকে রংপুর বিভাগ ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে অগ্রনী ভ’মিকা পালন করছে। সেক্ষেত্রে রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলায় বোরো ধান চাষে বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। এ জেলাকে খাদ্য শস্যের ভান্ডার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। জেলায় দুই জাতের ধান উৎপন্ন হচ্ছে হাইব্রিড ও উফশী। উফশী জাতের মধ্যে ব্রি-২৮, ব্রি-২৯, ব্রি-৫৮, মিনিকেট, সম্পা কাঠারী, বগুড়া সম্পা, জামাই কাঠারী, সোনামুখী, নানিয়া, কোটরা পারী ও বিয়ার-১৬ । হাইব্রীড ধানের মধ্যে তেজ গোল্ড, হীরা-২, ব্রাক ।

এবার আবহাওয়া অনুকুল পরিবেশ থাকায় মাঠে ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় কৃষকরা উৎসব মুখর পরিবেশে ধান কাটা-মাড়া নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ৮৮% ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ অসময়ে ঝড় ও বৃষ্টি-পাতের জন্য ক্ষেতে ধান শুয়ে পড়েছিল। এ দিকে ভিজা ধান কিনতে ক্রেতারা আগ্রহ প্রকাশ করছিল না। দাম কিছুটা কম হলেও কৃষকরা ধান বিক্রয় করেছে। কিন্তু বর্তমানে প্রচন্ড তাপ প্রবাহে ধানের বাজার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকরা এখন নায্য দাম পাচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে মোট ধান বস্তা প্রতি ১৭০০ থেকে ১৯০০ টাকার মধ্যে বিক্রয় হচ্ছে। অথচ কিছু দিন আগে মোটা ধান বস্তা প্রতি ১৩০০ থেকে ১৪৫০ পর্যন্ত দাম কৃষকরা পেয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের তথ্য মতে এবার দিনাজপুর জেলায় ১লক্ষ ৭১ হাজার ৪০০হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ২৫ হাজার ১০৬ হেক্টর জমিতে আর উফশী ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে উফশী ধানের ক্ষেত্রে ৯লক্ষ ৩০হাজার ৪শত ৬৮ মেট্রিক টন আর হাইব্রীডের ক্ষেত্রে ১লক্ষ ৮১হাজার ১০০ শত মেট্রিক টন।

অফিস সুত্রে বর্তমানে জেলায় ৮৮% ধান কর্তন হয়েছে। সেই অনুযায়ী উফশী ও হাইব্রিড ধানের ক্ষেত্রে মোট ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৮শত ৮৯ হেক্টর জমিতে ধান কাটা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ধান উৎপন্ন হয়েছে ৬.৫৮ টন, যার পরিমান ৯ লক্ষ ৯৩ হাজার ৬শত মেট্রিক টন ধান।

৪ নং শেখপুরা ইউনিয়নে কিষান বাজারে ধান বিক্রয় করতে আসা কৃষক মো. রফিকুল বলেন, অসময়ে বৃষ্টিপাত হওয়ায়, কিছুটা ফলন কম হলেও বাজারে ধানের দাম আশানুরুপ পাওয়া যাচ্ছে। গত হাটে মন প্রতি ৯০০ শত টাকা দরে ধান বিক্রয় করেছি। আরেক কৃষক সনাতন বলেন, ফলন ভাল হয়েছিল। আগে ভিজা ধান বিক্রয় করেছি ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায়। বর্তমানে তাপ প্রবাহে শুকনা ধান বিক্রয় করছি বস্তা প্রতি ১৮০০ থেকে ১৯০০ টাকা দরে। গড়ে ভাল দাম পেয়েছি।

এই বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ প্রদীপ কুমার গুহ বলেন, এবার উৎপাদন ভাল হয়েছে। আর প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে, আবহাওয়া ভাল থাকলে বাকী ১২% ধান তাড়াতাড়ি কৃষকরা কর্তন করবে। অসময়ে ঝড় ও প্রচুর বৃষ্টিতে কিছুটা ফলন কমহলেও ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকরা সমস্যা কাটিয়ে উঠেছে। কৃষকের যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে, উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা চেয়ে ০.০০১% কম। যা অর্থনীতিতে কোন প্রভাব ফেলবে না। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা এবার ছাড়িয়ে যাবে।

Related posts

হত্যা মামলায় পূরুষশূন্য গ্রাম, জমিতে কাজ করছেন নারীরা

News Desk

রামপালের ১৭৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

News Desk

উপকূলের ঘরে ঘরে বিষাক্ত অ্যাসবেসটস

News Desk

Leave a Comment