Image default
বাংলাদেশ

গাজীপুরের সড়কে বাস কম, গুনতে হচ্ছে বেশি ভাড়া

জ্বালানি তেলের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় গাজীপুরে গণপরিবহন সংকট শুরু হয়েছে। সড়কে যাত্রীর তুলনায় বাস কম চলছে। তাই বাধ্য হয়ে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যে ছুটছেন। এছাড়া ফাঁকা সড়কে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও গাড়ি মিলছে না। হুড়োহুড়ি করে সিএনজিচালিত টেম্পুতে উঠছেন অনেকে। আবার অনেকে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে রিকশায় কর্মস্থলে যাচ্ছেন।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার। রাত ১০টায় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে। 

শনিবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের টঙ্গী, বোর্ডবাজার, চেরাগআলী, চান্দনা চৌরাস্তা, সালনা, রাজেন্দ্রপুর, ভবানীপুর, মাস্টারবাড়ি, মাওনা চৌরাস্তা, নয়নপুর, এমসি বাজার ও জৈনা বাজার বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য যাত্রীদের অপক্ষো করতে দেখা গেছে। সড়ক ফাঁকা থাকলেও অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও অনেকে বাস পাচ্ছেন না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

মহানগরের টঙ্গী এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম চাকরি করেন গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকার একটি পোশাক কারখানায়। তিনি জানান, সকাল ৭টায় বাসা থেকে বেন হন। রাস্তায় এসে কোনও গাড়ি পাচ্ছিলেন না। পরে একটা বাসে কোনোরকমে উঠে দেরিতে অফিসে পৌঁছেছেন।

আল-আমনি হোসেন এসকিউ গ্রুপের পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘রাত বা সকালেও যদি জানতাম পরিবহন বন্ধ তাহলে সময় হাতে নিয়ে বা অন্য ব্যবস্থা করে অফিসে চলে যেতাম। সকালে সড়কে এসে শুনি গাড়ি চলাচল বন্ধ। এটা তো কোনও নিয়মের পর্যায়ে পড়ে না। এই সুযোগে রিকশাওয়ালাও ডাবল ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে।’

এদিকে, মধ্যরাত থেকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার পর অনেক পাম্প তেল বিক্রি বন্ধ করে দেয়। রাতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে তেলের দাম বাড়ার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পাম্পগুলোর কর্তৃপক্ষ তেল দেয়া বন্ধ করে দেয়। যেসব যানবাহান ও মোটরসাইকেল চালকেরা তেল কিনতে পাম্পে গেছেন, তাদেরকে পাম্প ম্যনেজার তেল নেই বলে ফিরিয়ে দিয়েছেন। অনেক পাম্প কর্মকর্মতাদের সঙ্গে তেল নিতে আসা যানবাহন ও মোটরসাইকেল চালকদের বাগবিতণ্ডা করতে দেখা গেছে।

গাজীপুরের বৈরাগীরচালা এলাকার আমান গার্মেন্টসে চাকরি করেন চান্দনা এলাকার রুবায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ঘোষণায় টেম্পো ও অটোরিকশাসহ জ্বালানিচালিত অন্যান্য ছোট ছোট যানবাহনের ভাড়াও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামীরা।’

গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকার মন্ডল ইন্টিমেটস গার্মেন্টসের কর্মকর্তা পলাশ বলেন, ‘প্রতিদিন বোর্ড বাজার থেকে মোটরসাইকেলে অফিসে যাতায়াত করি। পেট্রোল ও অকটেনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বাইকে অফিসে আসা সম্ভব নয়, যা বেতন পাই তা সারা মাসের আসা-যাওয়ার তেল খরচ চলে যাবে। তাই আজকে বাইক ছাড়াই অফিসে আসছি।’

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার আলম এশিয়া পরিবহনের চালক আব্দুল জব্বার জানান, হঠাৎ করে ডিজেলের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে, তাতে আগের ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে না। তাই আপাতত যাত্রী পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে।

শ্রীপুরের একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা কী করবো? জ্বালানির দাম বেড়ে গেলে আমরাও বাড়িয়ে বিক্রি করি।’ 

গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন কমচারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান উদ্দিন বলেন, ‘সড়কে যানবাহনের সংকট নেই। তবে যেসব পরিবহনে জ্বালানি ছিল না, তারা দাম বৃদ্ধির কারণে অনেকে সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হয়নি। আমরা পরিবহন চালক বা মালিকদের কোনও ধরনের নির্দেশনা দিইনি।’

Source link

Related posts

অবশেষে বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক

News Desk

ঘরের চালের পানিতে ক্যানসার!

News Desk

ফল-পাতা খেয়ে লড়াই করেছেন দিনের পর দিন

News Desk

Leave a Comment