এমপি হয়ে গণমানুষের জন্য কাজ করতে চান আবু নাসের রহমতুল্লাহ
বাংলাদেশ

এমপি হয়ে গণমানুষের জন্য কাজ করতে চান আবু নাসের রহমতুল্লাহ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় বরিশালে গণমানুষের জন্য সেবামূলক নানা কাজ করে যাচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ। একইসঙ্গে নির্বাচনি কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৫ আসনে প্রার্থী হতে চান তিনি। তবে এমপি নয়, সেবক হিসেবে গণমানুষের জন্য কাজ করতে চান আবু নাসের রহমতুল্লাহ।

দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দেড় দশকে বরিশাল বিএনপি নানা রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। প্রতিকূল পরিবেশে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের দমনপীড়নে দলের নেতাকর্মীরা রাজপথে দাঁড়াতে পারেননি। মামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে তারা পরিবার ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর নতুন বাস্তবতায় বিএনপির নেতাকর্মীরা আবার সক্রিয় হয়েছেন। সামনে থেকে তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ।

দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন এবং এখনও দলের নির্দেশনা অনুযায়ী বরিশাল-৫ নির্বাচনি এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণের মাঝে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি নির্বাচনি গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন আবু নাসের। বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে থাকায় ২০১৬ সালে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ লাভ করেন। এ ছাড়া বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির ১নং সদস্য, স্বাধীনতা ফোরামের কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন।

আবু নাসের রহমতুল্লাহর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ এই রাজনীতির পথে নানা সময়ে দমনপীড়ন, হামলা-মামলা ও কারাবরণ করেছেন আবু নাসের। এরশাদবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন পর্যন্ত দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে থেকেছেন। এজন্য নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন। এলাকায় দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শুনছেন এবং সমাধান করছেন। ইতিমধ্যে সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নবাসীর কাছে প্রিয় নেতা হিসেবে নিজেকে পরিচিত করে তুলেছেন। এজন্য মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাজনীতি এবং মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চান। 

আবু নাসের রহমতুল্লাহ জানিয়েছেন, নদীভাঙনকবলিত মানুষ যখন তার কাছে গিয়ে জানান তাদের মাথা গোঁজার ঠাইটুকু হারিয়ে গেছে। এখন অন্যের জমি কিংবা বাঁধের ওপর ঘর তৈরি করে থাকতে হচ্ছে। তখন ভাঙনের সমস্যার সমাধান দিতে না পারলেও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণে ভাঙনকবলিত এলাকায় কর্মসূচি দেন। এলাকার মানুষ কোনও সমস্যায় পড়লে ছুটে গিয়ে সমাধান করেন। দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে মানুষও তার কাছে ছুটে যান। সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়াচ্ছেন। এজন্য এলাকার মানুষ তাকে এমপি প্রার্থী হতে তাগিদ দিচ্ছেন। তাদের তাগিদ থেকে এবং এলাকার উন্নয়নে জনপ্রতিনিধি হওয়ার কথা ভাবছেন তিনি।

আবু নাসের রহমতুল্লাহ বলেন, ‌রাজনীতির মাধ্যমে জনসাধারণের সঙ্গে একটা সম্পৃক্ততা গড়ে ওঠে। একইসঙ্গে বিশেষ করে এলাকাবাসীর সমস্যা এবং এলাকার সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়। এজন্য দরকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। সেই স্থান থেকে বরিশাল-৫ সদর আসনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে আছে আমার। এজন্য এলাকাবাসী আমাকে নানাভাবে উৎসাহিত করছেন। তবে নির্বাচনের আগেই আমি বরিশাল সদর আসনের বিশেষ করে যারা সমস্যাগ্রস্ত তাদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করছি। তাদের মাঝে সেলাই মেশিন থেকে শুরু করে রোজগারের জন্য যা যা প্রয়োজন, তা তাদের হাতে তুলে দিয়েছি এবং দিচ্ছি। যেকোনো বিপদে কিংবা সমস্যায় পড়লে এলাকার মানুষজন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাদের আর্থিকভাবে সহায়তা দিচ্ছি। তবে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বরিশাল সদর আসনে তেমন কোনও উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ করে এখানের মানুষ অবহেলিত। এ কারণে নগরী থেকে ইউনিয়নবাসীর প্রতি আমার নজর বেশি। 

তিনি বলেন, ‘বিগত দিনে যেটুকু উন্নয়নকাজ হয়েছে, তা অত্যন্ত নিম্নমানের হওয়ায় তা বেশি দিন টেকেনি। এখনও কাদা সড়ক ও নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হয় ইউনিয়নবাসীকে। গ্রামের ভরসা বাঁশের সাঁকো। অথচ বিগত দিনে আওয়ামী লীগের পতিত সরকার উন্নয়ন উন্নয়ন বলে গলা ফাটিয়ে ফেলেছে। সেই উন্নয়ন বরিশাল সদরের লোকজন দেখেননি। বিএনপি গলা ফাটানো উন্নয়ন করবে না। বিএনপি সরকার গঠন করলে উন্নয়ন হবে গ্রামবাসীর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে। আর গ্রামবাসী তদারকি করে সেই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করবেন। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এখানের মানুষ উন্নয়ন বঞ্চিত হবে না।’

আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহর নেতৃত্বে মশাল মিছিল

রাজনৈতিক ভূমিকা

১৯৯২ সালে তৎকালীন নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য আওয়ামী অপশক্তির বিরুদ্ধে নিজ প্রচেষ্টায় জাতীয় যুব কমান্ড গঠন করে প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন আবু নাসের রহমতুল্লাহ। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পরই গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ এবং দীর্ঘদিন রিমান্ডে ছিলেন। কারাগার থেকে বের হয়ে তৎকালীন আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করার লক্ষ্যে স্বাধীনতা ফোরাম ও দৈনিক ইনকিলাব পাঠক সংসদসহ বিভিন্ন ব্যানারে ধারাবাহিকভাবে জাতীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। ১/১১-এর সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ও স্বাধীনতা ফোরামসহ বিভিন্ন ব্যানারে জনমত গঠনে ভূমিকা পালন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ডা. এম এ মতিনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হন। 

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওই সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দলীয় চেয়ারম্যান এম এ মতিন কোনও ভূমিকা না পালন করতে চাওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বিএনপিতে যোগদানের ইচ্ছে ব্যক্ত করেন আবু নাসের। তার দীর্ঘদিনের ভূমিকায় সন্তুষ্ট হয়ে ২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক বর্ণাঢ্য যোগদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তার অনুসারী নেতাকর্মীদের দলে গ্রহণ করেন খালেদা জিয়া। বিএনপিতে যোগদানের পর থেকে লাগাতার আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সব কর্মসূচিতে অংশ নেন। এই দীর্ঘ সময়ে আন্দোলন করতে গিয়ে একাধিকবার কারাবরণ করেছেন। তবে দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন এবং এখনও দলের নির্দেশনা অনুযায়ী বরিশাল-৫ নির্বাচনি এলাকার সর্বস্তরের মানুষের মাঝে বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

Source link

Related posts

ক্যানসার দমাতে পারেনি মাহাথিরকে, হতে চায় মানবিক চিকিৎসক

News Desk

ইলিশের দাম এবার বেশি কেন

News Desk

বিয়ের কথা বলে তরুণীকে ধর্ষণ, রেস্টুরেন্টের মালিক গ্রেফতার

News Desk

Leave a Comment