পৌষের মাঝামাঝি উত্তরের জেলা নীলফামারীতে বয়ে যাচ্ছে হিমেল হাওয়া, সেই সঙ্গে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) জেলার সৈয়দপুরের তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জানুয়ারির শুরু থেকেই জেলায় তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এ অবস্থায় এ অঞ্চলে বেড়েছে শীতবস্ত্রের চাহিদাও। নিম্ন আয়ের মানুষ প্রচণ্ড শীত থেকে বাঁচার জন্য গরম কাপড় কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ফুটপাত ও খোলা জায়গার দোকানগুলোতে।
সৈয়দপুর বিমান বন্দর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়া সহকারী মো. লোকমান হাকিম বলেন, ‘দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে শৈত্যপ্রবাহ। আর ঠক ঠক করে কাঁপছেন এই জেলার খেটে খাওয়া মানুষজন। বিশেষ করে জেলার ডিমলা উপজেলার তিস্তার চরের মানুষ এই শীতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে। বয়স্ক ও শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।’
নীলফামারীর বড় মাঠের পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোতে শীতের পোশাক কিনতে আসা মানুষের ভিড় বেড়েছে। ফুটপাত ও স্থানীয় মার্কেটগুলোতেও গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে।
শহরের অলিতে-গলিতে শীতের পোশাকের দোকান দিয়ে বসেছেন ভাসমান ব্যবসায়ীরা। এসব দোকানে কম দামে বিদেশি পুরনো গরম কাপড় মিলছে সস্তায়। সকাল থেকে শুরু করে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে এসব দোকান। অল্প পয়সায় পছন্দের গরম কাপড় দেখেশুনে কিনছেন ক্রেতারা। জেলা শহরের বড় মাঠের হাট বসে সপ্তাহে দুই দিন। এ ছাড়াও প্রতিদিন সোয়েটার, ট্রাউজার, টুপি, কম্বল ও শিশুদের পোশাক কম দামে বেচাকেনা হয়।
ওই মাঠের ভাসমান দোকানদার কাওসার আলী বলেন, ‘বিভিন্ন পেশার মানুষ আমাদের কাছে শীতের পোশাক কিনতে আসেন। তাদের মধ্যে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাই বেশি। সেই সঙ্গে ভ্যানচালক, রিকশাচালক, দরিদ্র নারী-পুরুষ শীতবস্ত্র কিনছেন।’
এসব পোশাকের দামের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত শীতের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে সোয়েটার, ট্রাউজার, জ্যাকেট, মাফলার, মানকি ক্যাপ, প্যান্ট, শার্ট, পায়ের ও হাতের মোজাসহ নানা রকমের শীতের পোশাক বিক্রি হচ্ছে।’
একজন ক্রেতা জেলা শহরের নিউবাবু পাড়ার ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘সাত সদস্যের পরিবারে আমি একমাত্র উপার্জনক্ষম। তাই কমদামে খোলা বাজারে শীতের পোশাক নিতে এসেছি। শীত যতই বাড়ছে ততই পুরনো কাপড়ের চাহিদা বাড়ছে। এখানে কম দামে গরম কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। তা না হলে আমাদের ঠান্ডায় মরতে হতো।’
নীলফামারী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি প্রকৌশলী এসএম শফিকুল আলম ডাবলু বলেন, ‘পুরনো কাপড় না এলে গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম বিপাকে পড়তো। জানুয়ারি মাসে শীতের প্রকোপ যথেষ্ট বেড়েছে। তবে এখনও সরকারি ও বেসরকারিভাবে শীতার্ত মানুষের জন্য চাহিদার তুলনায় শীতবস্ত্র আসেনি। শুনেছি, ডিসি অফিস থেকে আবারও কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।’